যে কারণে রোজা মাকরূহ হয়ে যায়:
মিথ্যা বলা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া, মিথ্যা শপথ করা, গীবত করা, পরচর্চা করা, প্রতারণা করা, ঝগড়া করা, অশ্লীল কথা বলা, অশ্লীল আচরণ করা, অত্যাচার করা, কারো প্রতি শত্রুতা করা, পর্দার বিধান লঙ্ঘন করা, নাটক-সিনেমা দেখা সহ অন্যায় করলে রোযা মাকরূহ হয়ে যায়। বড় ধরনের গুনাহে লিপ্ত হলে এবং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে এই কাজ সব পরিস্থিতিতে হারাম বা নিষিদ্ধ করা হয়।
(রোজে কা মাসায়িল কা ইনসাইক্লোপিডিয়া ১০৮)
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
যে লোক মিথ্যা কথা এবং সে অনুসারে কাজ করা আর মূর্খতা পরিহার করলো না, আল্লাহর নিকট তার পানাহার বর্জনের কোন প্রয়োজন নেই।
(সহীহ বুখারী ৬০৫৭)
হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
তোমাদের কেউ যখন রোজা রাখে তখন সে যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং শোরগোল, হট্টগোলে লিপ্ত না হয়।
(সহীহ বুখারী ১৯০৪)
রোজা অবস্থায় গড়্গড়া কুলি করা এবং নাকের নরম অংশে পানি পৌঁছানো মাকরূহ। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯৯)
লাকিত ইবনে সবিরা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
بالغ في الاستنشاق، إلا أن تكون صائما.
অযু বা গোসলের সময় ভালোভাবে নাকে পানি দাও, তবে রোজাদার হলে নয়।
(জামে তিরমিযী ৭৬৬)
রোজাদারকে সম্পূর্ণরূপে দুর্বল করে এমন কিছু করা মাকরূহ। যেমন শিঙ্গা লাগানো।
(আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৫৬ ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০০)
রোজা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত বের হলে বা ইনজেকশন ইত্যাদির মাধ্যমে রক্ত বের হলে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এত পরিমাণ রক্ত নেওয়া মাকরূহ, যখন রোজাদার খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে।
সাবিত আল-বুনানী রহ. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
সাবিত আল-বুনানী (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে প্রশ্ন করা হল, আপনারা কি সায়িমের শিঙ্গা লাগানো (রক্তমোক্ষম) অপছন্দ করতেন?
তিনি বললেন, না। তবে দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে অপছন্দ করতাম। শাবাবা (রহ.) শু‘বাহ, (রহ.) হতে عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যুগে’ কথাটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন।
(সহীহ বুখারী ১৯৪০)
বীর্যপাত বা সহবাসের আশঙ্কা না থাকলে রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করা জায়েয। তবে কামবশত চুম্বন ও আলিঙ্গন করা মাকরূহ।
(কিতাবুল ফিকহ ১/৯২৭)
আবূ হুরাইরা (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট সওম অবস্থায় স্ত্রীর সাথে একত্রে অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাকে অনুমতি প্রদান করেন। অতঃপর অন্য এক ব্যক্তি এসে অনুরূপ জিজ্ঞেস করলে তিনি তাকে নিষেধ করে দিলেন। বর্ণনাকালী বলেন, তিনি যাকে অনুমতি দিয়েছেন সে ছিলো বৃদ্ধ এবং যাকে নিষেধ করেছেন সে ছিলো যুবক।
(আবু দাউদ ২৩৮৭)
আল্লাহই ভালো জানেন