Q/AAbdullahil Hadi

বুধবারে কি দু’আ কবুল হওয়ার সময়

বুধবারে যোহর ও আসরের মধ্যবর্তী সময়ে দু’আ কবুল হওয়ার সময়, বুধবারে যোহর ও আসরের মধ্যবর্তী সময়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দু’আ কবুল হয়েছে
জাবের বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,

أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَعَا فِي مَسْجِدِ الْفَتْحِ ثَلَاثًا : يَوْمَ الِاثْنَيْنِ ، وَيَوْمَ الثُّلَاثَاءِ ، وَيَوْمَ الْأَرْبِعَاءِ ، فَاسْتُجِيبَ لَهُ يَوْمَ الْأَرْبِعَاءِ بَيْنَ الصَّلَاتَيْنِ ، فَعُرِفَ الْبِشْرُ فِي وَجْهِهِ .
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘আল ফাতহ’ মসজিদে তিন দিন দু’আ করেছেন। সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার। কিন্তু বুধবার দিবসের দু’আ দুই সলাতের (যোহর ও আসরের) মধ্যবর্তী সময়ে কবুল হয়েছে। ফলে তাঁর চেহারা মোবারকে আনন্দের উজ্জলতা দেখা গেছে।

জাবের (রাঃ) বলেন,

قَالَ جَابِرٌ : فَلَمْ يَنْزِلْ بِي أَمْرٌ مُهِمٌّ غَلِيظٌ إِلَّا تَوَخَّيْتُ تِلْكَ السَّاعَةَ ، فَأَدْعُو فِيهَا ، فَأَعْرِفُ الْإِجَابَةَ
“এরপর থেকে আমি যখনই কোনো কঠিন বিষয়ের সম্মুখীন হতাম, আমি উক্ত দিবসের (বুধবার) ঐ সময়কে (যোহর ও আসরের মধ্যবর্তী সময়) দু’আর জন্য নির্বাচন করতাম এবং দু’আ করতাম। অতঃপর আমি বুঝতে পারতাম যে, আমার দু’আ কবুল হয়েছে।”1

(যদিও বহু মুহাদ্দিস উক্ত হাদিসটিকে যঈফ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন)

উল্লেখিত হাদীস সম্পর্কে শাইখ আলবানি (রহঃ) বলেনঃ

“সম্মানিত সাহাবী আমাদেরকে এই বিষয়টি জানিয়েছেন যে, দু’আর জন্য বুধবার দিবসের ঐ সময়টি ছিল রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পক্ষ থেকে উদ্দেশিত সময়। উপস্থিত ব্যক্তি যা দেখতে ও জানতে পারে, অনুপস্থিত ব্যক্তি তা দেখতে ও জানতে পারে না। আর স্বচক্ষে দেখা সংবাদের মত সঠিক ও সত্য অন্য কোনো সংবাদ হতে পারে না। এই সাহাবী (রাঃ) যদি আমাদেরকে সংবাদটি না জানাতেন, তবে হয়তো আমরা বলতাম যে আকস্মিকভাবে ঐ দিবসে ঐ সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’আ করেছেন এবং তাঁর দু’আ কুবল হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাই, উক্ত সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে যা করতে দেখেছেন তা দিবস ও সময় অনুযায়ী নিজে আমল করেছেন এবং তিনি তার ফলও পেয়েছেন। অতএব এ সাহাবীর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারলাম যে, এটা একটা সুন্নাতী আমল।”

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তায়মিয়া (রহঃ) বলেনঃ

“আমাদের একদল বিদ্বান এই হাদীসের প্রতি আমল করে এই দিবসের এই সময়ে দু’আ করতে প্রয়াস চালাতেন। যেমনটি বর্ণিত হয়েছে জাবের (রাঃ) থেকে। কিন্তু জাবের (রাঃ) থেকে একথা বর্ণিত হয়নি যে, তিনি দু’আর জন্য স্থানটিকে উদ্দেশ্য করতেন বরং তিনি শুধু সময়টিকেই অনুসন্ধান করতেন।”2

ইমাম বায়হাকী (রহঃ) বলেনঃ

“দু’আর জন্য উপযুক্ত সময়, অবস্থা ও স্থান অনুসন্ধান করা উচিত। যাতে করে দু’আ কবুল হওয়ার আশা পূর্ণরূপে করা যায়। আর দু’আ কবুল হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে, বুধবার দিবস যোহর ও আসরের মধ্যবর্তী সময়।”3

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দু’আ কবুলের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে তাঁর কাছে দু’আ করার করার তৌফিক দান করুন।

  1. ইমাম বুখারী আদাবুল মুফরাদ গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আরো বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমাদ ও বাযযার। ইমাম আলবানি হাদীটিকে হাসান বলেছেন। দ্রষ্টব্যঃ সহীহ আদাবুল মুফরাদ ১/২৪৬, হা/৭০৪; সহীহ আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব ১১৮৫ ↩︎
  2. ইক্বতেযা সিরাতুল মুসতাকীম ১/ ৪৩৩ ↩︎
  3. শু’আবুল ঈমান ২/৪৬ ↩︎
Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture