[১]
কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে খুবই পাওয়ারফুল একটি বিষয় হচ্ছে সম্বোধন। কমিউনিকেশন স্মার্ট হওয়ার জন্য সম্বোধনের কোনো বিকল্প নেই। মূলত, কাউকে যা বলে ডাকা হয় সেটাই হচ্ছে সম্বোধন (Address)। বলা যায়, এর ভিতর এক ধরণের জাদু রয়েছে। এই জাদু দিয়েই সহজে মানুষের কাছাকাছি যাওয়া যায়, মানুষকে কাবু পর্যন্ত করা যায়। কারো অন্তর স্পর্শ করতে হলে আপনাকে সুন্দর পন্থায় সম্বোধন করা জানতে হবে। কারো এটেনশন পাওয়া, কারো পাত্তা পাওয়ার অন্যতম একটি কৌশল কী, জানেন?
তাকে সুন্দর করে বিনয়ী কন্ঠে সম্বোধন করা। শুকনো কাঠের মতো খটখটা কথাবার্তায় আর যা-ই হোক মানুষের হৃদয় স্পর্শ করা যায় না, জায়গা করে নেওয়া যায় না মানুষের অন্তরে। সেজন্য অবশ্যই চাই সুন্দর ভাষায় সম্বোধন।
এই ধরুন, আপনি আপনার বাবার কাছে গিয়ে কোনো সম্বোধন ছাড়াই একদম রডের মতো দাঁড়িয়ে বললেন, আগামীকাল আমার কলেজের বেতন লাগবে। এই যে বাবার কাছে গিয়ে চাইলেন, এই চাওয়ার মধ্যে কি কোনো মহব্বত আছে?
আছে কি কোনো বিনয়?
নাই তো, এমন চাওয়া কেমন জানি রসবিহীন, এমন চাওয়ায় বিনম্রতা অনুপস্থিত। এভাবে বললে আপনার বাবার মেজাজ খারাপ না থাকলেও হয়তো বলে বসতে পারেন, কীরে, সেদিন না বেতনের টাকা নিলি, এতো তাড়াতাড়ি মাস হয়ে গেলো ইত্যাদি আরও নানান অপ্রিয় কথা শুনাতে পারেন।
অপরদিকে, আপনি যদি আপনার বাবার কাছে গিয়ে বলেন যে, ‘ও আব্বু’ বা ‘ও আমার আব্বু’ আগামীকাল আমার কলেজের বেতন লাগবে। দেখবেন আপনার বাবার কোনো কারণে মেজাজ খারাপ থাকলেও এমনকি আপনার ওপর রাগান্বিত থাকলেও তিনি আপনার সাথে নমনীয় কন্ঠে কথা না বলে পারবেন না। কেন জানেন?
কারণ আপনার সম্বোধন। আপনি শুরুতেই ‘ও আব্বু’ বলে সম্বোধন করে তার অন্তরটা স্পর্শ করে ফেলেছেন, শীতল করে দিয়েছেন। আপনার এই সম্বোধনই আপনার বলতে চাওয়া কথাগুলোর প্রতি তাকে পূর্ণ মনোযোগী হতে বাধ্য করবে। আপনার সুন্দর সম্বোধন আপনার প্রতি তার মায়া আরও বাড়িয়ে দিবে। এই এক সম্বোধনই আপনার বাবাকে আপনার কোনো চাওয়ার ব্যাপারে ‘না’ বলাকে ‘হ্যাঁ’ পর্যন্ত বলিয়ে দিতে পারে। এতোটাই ইমপ্যাক্টফুল একটি বিষয়।
শুধু বাবা-মা-ই নন, যেকোনো মানুষের কাছে কিছু চাইতে গেলে সুন্দর করে সম্বোধন করে চাওয়া উচিত। কারণ এর কার্যকারিতা অনেক বেশি। এতে আপনার প্রতি ঐ ব্যক্তির একটি সফট কর্ণার তৈরি হবে যা আপনার কাঙ্ক্ষিত জিনিস পেতে অনেক সহায়ক হবে। পাথরের মতো কোনো শক্ত হৃদয়ের মানুষকে কিছু বোঝাতে গেলে কিংবা চাইতে গেলে প্রথমেই তার সেই শক্ত মনে পানি ঢেলে নরম করতে হবে। আর সেই পানির কাজটিই মূলত করে দেয় চমৎকার সম্বোধনের বিষয়টি। একবার মন নরম হয়ে গেলে তখন আপনার বলা কথাগুলো সহজে তার মনে গেঁথে থাকবে। সহজে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করবে। আর মনে রাখবেন, সম্বোধনের সাথে গ্রহণযোগ্যতার একটি সম্পর্ক রয়েছে, নিবিড় এক সম্পর্ক। তাই যেকোনো কথাবার্তার সময় আমাদের নিকট সম্বোধনের বিষয়টি যেন সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায়।
কারো কাছে কোনো কিছু চাওয়ার একটি আদব হচ্ছে শুরুতেই তাকে সুন্দর ভাষায় সম্বোধন করা। যেমন আপনার ভাই, আপু বা চাচার কাছে কিছু চাইতে গেলে যদি আপনি ‘ও ভাইয়া’, ‘ও আপু’, ‘ও চাচ্চু’ বলে সম্বোধন করেন তাহলে দেখবেন তারা আপনার চাওয়াটাকে সহজে ফেলে দিতে পারবে না, পারবে না আপনাকে এড়িয়ে যেতে। আপনার হৃদয় জোড়ানো সম্বোধনই আপনার প্রতি তাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করবে।
কোনো কিছু চাওয়া, নসীহত কিংবা দাওয়াতের ক্ষেত্রে কাউকে কীভাবে সম্বোধন করতে হয় তা আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে নূহ (আঃ), ইয়াকুব (আঃ), লোকমান (আঃ), ইব্রাহিম (আঃ) এর মাধ্যমে শিখিয়ে দিয়েছেন। তারা যখন তাদের সন্তানকে কিছু বলতেন তখন মহব্বতের সাথে সম্বোধন করে বলতেন। সন্তানের প্রতি তাদের সম্বোধনের ভাষা যেরকম ছিল তা তুলে ধরে আল্লাহ তা’য়ালা কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় বলেছেন, ‘ইয়া বুনাই’ অর্থাৎ ‘ও আমার সন্তান’ বা ‘ও আমার কলিজার টুকরা’। [সূরা হুদ, ৪২; সূরা ইউসুফ, ০৫; সূরা লোকমান, ১৩,১৬,১৭; সূরা আছ ছফফাত, ১০২] এই বিষয় থেকে আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে মূলত নসীহতের টেকনিক বা অ্যাপ্রোচ শিখিয়ে দিয়েছেন।
শুধু তা-ই নয়। স্বয়ং আল্লাহ তা’য়ালাও কুরআনের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় ‘হে ঈমানদাররা‘ বলে সম্বোধন করে করে মূল কথাটি বলেছেন। সুবহান’আল্লাহ!
এছাড়া, কুরআনে বর্ণিত নবী রাসূলগণের প্রায় প্রতিটি দোয়ায় ‘রআব্বি’ অর্থাৎ হে আমার রব! ‘রাব্বানা’ বা হে আমাদের রব! বলে সম্বোধনের বিষয়টি লক্ষ করা যায়। এ থেকেও স্পষ্ট বোঝা যায় যে, কথা বলা তথা কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে সম্বোধন আসলেই অনেক ইফেক্টিভ একটি বিষয়। যেখানে কুরআন সম্বোধনের বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে সেখানে আমরা কেন আমাদের কথাবার্তায় এই বিষয়কে গুরুত্ব দেব না?
[২]
চিন্তা করুন, আপনাকে যদি সুন্দর করে এসে কেউ ‘ভাইয়া’ বা ‘চাচ্চু’ সম্বোধন করে কিছু চায় তবে আপনি কিন্তু সেটা সহজে ফেলে দিতে পারবেন না, ‘না’ বলার আগে নিশ্চয়ই চিন্তা করবেন যে, লোকটা এত সুন্দর করে আমাকে বললো আর আমি কীভাবে ‘না’ বলি। কারণ সে সুন্দর সম্বোধন করে শুরুতেই আপনার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। আর মুহূর্তে হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া কারো কথা ফেলে দেওয়া কিংবা ‘না’ বলে দেওয়া সহজ কাজ নয়। দ্যাটস দ্যা পাওয়ার অব সম্বোধন। সম্বোধনের মাধ্যমে ব্যক্তির অমায়িকতা প্রকাশ পায়। এছাড়া, সম্বোধনের মধ্যে অনেক মায়া ও আন্তরিকতা কাজ করে।
আমরা প্রায়ই ছোটো ছোটো বাচ্চাদেরকে এভাবে সম্বোধন করে থাকি যে, এ অমুক। যেমন, মা তার সন্তানকে ডাকছে, এ সায়েম, তুই খেতে আসবে কখন?
এভাবে সম্বোধন করা খুবই অসুন্দর। কী এমন দোষ হয়, ও সায়েম বলে ডাকতে?
ও সায়েম, তুমি খেতে আসবে কখন?
এভাবে বললে কি আরও বেটার সাউন্ড শুনায় না? জানেন, এগুলো কিন্তু মস্তিষ্কে খুব ইফেক্ট করে। মস্তিষ্কের সুস্থ কার্যকারিতায় এর প্রভাব আছে। তাই ব্যাপারটিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত হবে না। মনে রাখবেন, কথার মধ্যে সুন্দরতা রক্ষা করলে তার চিন্তা, তার কাজকর্মও সুন্দর হবে। শুধু সুন্দর চিন্তার মানুষ আশা করলে হবে না। সেটার জন্য আগে থেকে কাজ করে যেতে হবে। তবেই এর ফল আসবে।
প্রসঙ্গত, ‘তুই’ শব্দটা ব্যবহার করাই উচিত নয়। এটা খুব বেশি ইনফরমাল। হোক না সে একটা শিশু, হোক না সে আপনার খুব ঘনিষ্ট বন্ধু তবুও ‘তুই’ শব্দ ব্যবহার না করাটাই উত্তম। এই সাউন্ডটা খুবই অড। আমাদের ‘তুমি’ শব্দতেই থাকা উচিত। এই ইনফরমাল শব্দটাই সুন্দর। আমরা সবসময় সুন্দর জিনিসটাই আকঁড়ে ধরার চেষ্টা করবো। যে শব্দ শুনতে অসুন্দর শুনায় সেটা পরিহার করতে তো দোষ নেই,কোনো ক্ষতিও নেই-তাই না!
কারো সাথে কথোপকথনের সময় সম্বোধনের বিষয়কে কুরআন খুব বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। কুরআন আমাদের সামনে সুসন্তান ও কুসন্তান দুই চরিত্রই উপস্থাপন করেছে। এই দুই চরিত্রের দিকে খেয়াল করলে আপনি দেখতে পাবেন যে, কুরআন যাদেরকে সুসন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়েছে যেমন ইউসুফ (আঃ), ইসমাঈল (আঃ) ও মূসা (আঃ) এর স্ত্রী যখন তাদের বাবার সাথে কথা বলেছেন তখন কথা বলার শুরুতেই তারা তাদের প্রত্যেকের বাবাকে ‘ইয়া আবাতি’ অর্থাৎ ‘ও আমার আব্বু’ বলে অত্যন্ত চমৎকার ভাষায় সম্বোধন করেছেন। [সূরা ইউসুফ, ০৪; সূরা আছ ছফফাত, ১০২; সূরা আল কাসাস, ২৬] কথা বলার ক্ষেত্রে সম্বোধনের বিষয়টি তাদের নিকটও খুব গুরুত্ব পেয়েছে।
পক্ষান্তরে, কুরআনে কুসন্তান হিসেবে উপস্থাপিত একমাত্র চরিত্র যেমন নূহ (আঃ) এর ছেলে তার বাবাকে ঐ তাদের মতো ‘ইয়া আবাতি’ অর্থাৎ ‘আব্বু’ বলে সম্বোধন করে নি। কথা বলার সময় একমাত্র তার কাছে সম্বোধনের বিষয়টি অনুপস্থিত ছিল। এখান থেকে বোঝা গেলো, সম্বোধন করে কথা বলা ভালো মানুষ তথা স্মার্ট ব্যক্তিদের গুণ, আনস্মার্টদের গুণ নয়। আপনি কথাবার্তায় স্মার্ট হতে চাইবেন, মানুষের নজর কাড়তে চাইবেন অথচ সম্বোধন করে কথা বলবেন না তা তো হতে পারে না।
আজ থেকে আপনার স্বামীকে ‘ও আমার প্রিয়তম’ বা ‘ও আমার স্বামী’ আর আপনার স্ত্রীকে ‘ও আমার প্রিয়তমা’ কিংবা ‘ও আমার স্ত্রী’ বলে মায়াবী কন্ঠে সম্বোধন করে আপনার বলতে চাওয়া কথাগুলো সুন্দর করে বলে দেখুন না কী হয়। হালাল জাদু চিনেন, জাদু? একদম জাদুর মতো কাজ করবে। দেখবেন সে আপনার কথাগুলো না শুনে পারবেই না। এভাবে সম্বোধন করে কথা বললে আপনার প্রতি সে অনেক দূর্বল থাকবে, আপনাকে মন থেকে না ভালোবেসে পারবে না। এছাড়া, আপনার সাথে কখনো কটু কথা বলতে সে কয়েকবার ভাববে। কারণ আপনি তার সাথে কত সুন্দরভাবে সম্বোধন করে কথা বলেন। সে কীভাবে আপনার মতো মানুষকে কষ্ট দিতে পারে! অ্যাগেইন, দ্যাটস দ্যা পাওয়ার অব ‘সম্বোধন’।
মোটাদাগে, কুরআন আমাদেরকে জানাচ্ছে, এই সম্বোধনের মধ্যে আল্লাহ মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়ার অসম্ভব রকমের একটি শক্তি দিয়ে রেখেছেন। সুবহানআল্লাহ! এখন আমাদেরকে তো এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, তাই না!
স্বামীর কোনো ভুল হলে ‘তুমি কেন এটা করলে’ এভাবে কর্তৃত্বপরায়ণ পন্থায় না বলে আপনি সম্বোধন করে বলুন, ও আমার প্রিয়তম, এই কাজটা কি আপনি ঠিক করলেন?
কিংবা বলবেন,ও আমার স্বামী,কাজটা কি আরো সুন্দরভাবে করা যেত না? অর্থাৎ সংশোধনের সময় ‘সম্বোধন’ কে কাজে লাগাবেন। দেখবেন ম্যাজিক কাকে বলে। ট্রাস্ট মি, এটি অনেক দ্রুত কাজ করবে, ইং শা আল্লাহ! একই ব্যাপার স্ত্রীদের সাথেও প্রযোজ্য।
দেখাসাক্ষাতে কাউকে ‘তুমি কেমন আছো?’ এভাবে না বলে তাকে সম্বোধন করে বলুন, সায়েম, তুমি কেমন আছো, ভাইয়া? তুমি কেমন আছো, আপু?
আপনার ভাতিজাকে এভাবে বলুন, সালমান, তুমি কেমন আছো, চাচ্চু? ‘আমাকে একটু সাহায্য করবেন?’ এভাবে না বলে বলবেন, ‘ভাইয়া’ কিংবা ‘আপু’ আমাকে একটু সাহায্য করবেন? ‘ভাইয়া’, ‘আপু’, ‘চাচ্চু’ সম্বোধনের এই ছোটো ছোটো শব্দকে যত ছোটো দেখা যাচ্ছে আসলে তত ছোটো নয়। এগুলো অনেক ভারী শব্দ। এভাবে কাউকে বললে দেখবেন আপনি তার কাছে ‘প্রিয়’ হয়ে যাবেন।
রেস্তোরাঁয় গেলে ওয়েটারের টি শার্টে লাগানো নেইম বেজে তার নাম দেখে সম্বোধন করে যেমন, এই যে নাজিম ভাইয়া, এভাবে বলে অর্ডার করে দেখিয়েন সে হাসিমুখে আপনাকে কত সুন্দর সার্ভিস দিচ্ছে। তার মনে হবে যেন আপনি তাকে আগে থেকে চিনতেন। এই ফিলিংসটার দরুণ আপনার প্রতি সে আন্তরিক থাকবে। একইভাবে, উবার অ্যাপসে রাইডারের নাম আগে দেখে তাকে সম্বোধন করে দেখিয়েন সে কত দ্রুত রেসপন্স করে।
মূলত, সম্বোধনের মধ্যে একটা ‘আপন’ ‘আপন’ ভাব আছে। জানেন, আপন করে নিয়ে কোনো কথা বললে সে কথার দ্রুত সাড়া পাওয়া যায়, সে কথার গ্রহণযোগ্যতাও বেশি থাকে। ফলে সম্বোধনের মাধ্যমে মানুষকে আপন করে নেওয়া শিখতে হবে। আপনিই নিজেই চিন্তা করে দেখুন, আপনার জুনিয়র কেউ ‘ভাইয়া’ বলে আর সিনিয়র কেউ ‘নাম’ ধরে সম্বোধন করলে বেশি ভালো লাগে নাকি সম্বোধন ছাড়া ডাকলে বেশি ভালো লাগে? সম্বোধন করে ডাকলেই দেখবেন বেশি ভালো লাগছে। কারণ এতে মনে হবে লোকটা যেন আপনার কাছের মানুষ।
[৩]
প্রসঙ্গত, ছোট্ট একটি ঘটনা বলে পর্বটির ইতি টানছি। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একবার আমি উমরাহ করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে অনুমতি চাইলাম। তিনি (সাঃ) অনুমতি দিলেন আর বললেন, ‘‘হে প্রিয় ভাই আমার! তোমার দু‘আর মধ্যে আমাদেরকে ভুলো না! কিংবা তোমার দু’আর মধ্যে আমাদেরকেও শামিল করো।’’
উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) রাসূলের (সাঃ) এই ভালাবাসাপূর্ণ আহ্বান প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘নবীজি এমন একটি কথা বললেন—যদি সমগ্র দুনিয়াটাও আমার হয়ে যেতো, তবুও আমি এই কথাটির চেয়ে বেশি আনন্দ পেতাম না।” [আবু দাউদ, তিরমিযি, রিয়াদুস সালেহিন : ৭১৪, হাদীসটি হাসান সহীহ]
একবার ভাবুন তো, যদি কেউ কখনো আপনাকে ‘হে আমার প্রিয় ভাই!’ বা এরকম কোনো মধুর বাক্যে দিয়ে সম্বোধন করে আপনার কাছে কোনো কিছু আবদার করে, আপনি কি তা ফেলে দিতে পারবেন? পারবেন কি তাকে ইগনোর করতে?
আপনার যে ভাই কিংবা বোন আপনার কোনো কথা শুনেই না, নসীহত মানেই না, ঘাড়ত্যাড়ামি আচরণ করে তাকে কি কখনো আপনি এভাবে ভালোবাসা মাখা কন্ঠে সম্বোধন করে আপনার বলতে চাওয়া কথাগুলো বলেছেন যে, ‘ও প্রিয় ভাই’, ‘ও প্রিয় বোন আমার’?
যদি এটা করে না থাকেন তাহলে আজ থেকেই এটার অ্যাপ্লাই করা শুরু করে দিন। ট্রাস্ট মি, এটার ইমপ্যাক্ট হিউজ। এর প্রয়োগ আপনাকে রীতিমতো চমকে দিতে পারে।