তারাবিহর সালাত জামাতে আদায় করা উত্তম নাকি একাকী আদায় করা উত্তম
তারাবিহ-এর সালাত জামাতে আদায় করা অধিক উত্তম নাকি একাকী আদায় করা অধিক উত্তম।
তারাবিহ-এর সালাত একাকী আদায় করার চেয়ে জামাতের সাথে আদায় করা অধিক উত্তম,
তারাবিহ-এর সালাত একাকী আদায় করা যেমন শরিয়ত সম্মত তেমনি জামাতে আদায় করাও শরিয়ত সম্মত। তবে একাকী আদায় করার চেয়ে জামাতের সাথে আদায় করা অধিক উত্তম। কারণ:
১- একাকী বা বিচ্ছিন্নভাবে তারাবিহ এর সালাত পড়ার চেয়ে মসজিদে জামাতে পড়া উত্তম না হলে উমর ইবনুল খাত্তাব রা. মানুষকে মসজিদে এক ইমামের পেছনে জামাত পূণপ্রতিষ্ঠিত করতেন না এবং এরপর এটিকে “চমৎকার আবিষ্কার نعمة البدعة هذا” বলে অবিহিত করতেন না।
২- সালাত আদায় শেষ হওয়া পর্যন্ত ইমামের সাথে থাকা সারারাত নফল সালাত আদায়ের সমপরিমাণ মর্যাদার কথা বিশুদ্ধ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন: হাদিসে এসেছে,
مَنْ قَامَ مَعَ الإِمَامِ حَتَّى يَنْصَرِفَ كُتِبَ لَهُ قِيَامُ لَيْلَةٍ
“যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে সালাতে দাঁড়ায় এবং ইমামের শেষ করা পর্যন্ত তাঁর সাথে অবস্থান করে তাহলে তার জন্য সারারাত (নফল) সালাত আদায়ের সওয়াব লেখা হয়।”
[সুনান আত তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), অধ্যায়: ৮/ সওম (রোজা) পরিচ্ছেদ: রমজান মাসের কিয়াম]
কিন্তু একাকী আদায় কারী জন্য এই মর্যাদা নেই।
৩- জামাতে তারাবিহর সালাত আদায় করা মূলত: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একটি সুন্নতকে পূর্ণজীবিত করার নামান্তর। কারণ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিন দিন তা পড়েছিলেন। কিন্তু ফরজ হওয়ার আশঙ্কায় তা পরিত্যাগ করেছিলেন।
সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবিদেরকে নিয়ে কয়েক রাতে নামাজ পড়েছেন। তৃতীয় রাতে কিংবা চতুর্থ রাতে তিনি আর বের হননি। ভোরবেলায় তিনি বলেন,
لم يمنَعْني من الخروجِ إليكم إلَّا أنِّي خَشِيتُ أن تُفرَضَ عليكم، وذلك في رَمَضانَ
“অন্য কোন কারণ আমাকে বের হতে বাধা দেয়নি; তবে আমি তোমাদের উপর ফরজ করে দেওয়ার আশংকা করছি।”[সহিহ বুখারী, হা/১১২৯]
সহিহ মুসলিমের (৭৬১) ভাষ্যে এসেছে “কিন্তু আমি আশংকা করেছি তোমাদের উপর কিয়ামুল লাইল ফরজ করে দেওয়ার। এমনটি হলে পরে তোমরা তা আদায় করতে পারবে না।”
৪- উমর ইবনুল খাত্তাব রা. এর পর থেকে বাকি তিন খলিফা সবাই নিয়মিত জামাতের সাথেই তারাবহির সালাত আদায় করেছেন। [ফিকহ বিশ্বকোষ ২৭/১৩৮]
وجاء في الموسوعة الفقهية (27/138) “:
” وَقَدْ وَاظَبَ الْخُلَفَاءُ الرَّاشِدُونَ وَالْمُسْلِمُونَ مِنْ زَمَنِ عُمَرَ رضي الله تعالى عنه عَلَى صَلاةِ التَّرَاوِيحِ جَمَاعَةً , وَكَانَ عُمَرُ رضي الله تعالى عنه هُوَ الَّذِي جَمَعَ النَّاسَ فِيهَا عَلَى إمَامٍ وَاحِدٍ
-শাইখ আলবানি বলেন,
” وتشرع الجماعة في قيام رمضان ، بل هي أفضل من الانفراد ، لإقامة النبي صلى الله عليه وسلم لها بنفسه ، وبيانه لفضلها بقوله
“রমজান মাসে জামাতের সাথে কেয়াম করা শরিয়ত সম্মত। বরং তা একাকী পড়ার থেকে উত্তম। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে তা করেছেন এবং তার মর্যাদা বর্ণনা করেছেন…।
এ ছাড়াও বহু আলেম এই মত ব্যক্ত করেছেন।