সূরা ফাতিহার ৪ নাম্বার আয়াত, প্রথম দেখায় মনে হবে একটা সিম্পল আয়াতই, তবে একটু ডিপলি চিন্তা করলে দেখতে পাবেন যে, এটা আসলে একটা পলিসি, একটা ডিভাইন লো, “লো অফ মোশন” যেমন পড়েছি তেমনি এটা হলো “লো অফ ফেইথ“, লো টা অনেকটা এমন:
“তিনিই তো সেই সত্তা, যিনি মুমিনদের অন্তরে শান্তি নাযিল করেন, যেন তাদের ঈমান বাড়তেই থাকে, বাড়তেই থাকে”1
مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
যিনি বিচার দিনের মালিক।
অর্থাৎ আমাদের ঈমানই হলো সেই ম্যাজিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট যা আমাদের হার্টকে প্রশান্ত রাখে, আমাদের হার্ট যদি বিক্ষিপ্ত অবস্থায় থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে আমাদের ঈমান বা ফেইথটাও কিছুটা বিক্ষিপ্ত অবস্থায় আছে, কারণ হার্ট আর ফেইথ হলো একটা আরেকটার সাথে ডিরেক্টলি প্রপোর্শনাল!
তাহলে প্রশ্ন আসে, কিভাবে আমরা আমাদের এই ফেইথকে বাড়াতে পারি?
কিংবা কোন কোন বিষয় আমাদের এই ফেইথকে কমিয়ে দিতে পারে?
অনেক অনেক পয়েন্ট আছে, আজ শুধু একটা পয়েন্ট হাইলাইট করতে চাই, এটা ইম্পর্টেন্ট একটা পয়েন্ট, কিন্তু সামহাও আমরা এই ইম্পর্টেন্ট পয়েন্টটা ভুলতে বসেছি।
রাসূলুল্লাহ জানান,
“একজন মানুষের ঈমান ততক্ষণ পর্যন্ত ঠিক হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার হার্ট ঠিক হচ্ছে, আর ততক্ষণ পর্যন্ত তার হার্ট ঠিক হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার জিহ্বা ঠিক হচ্ছে”2
প্রব্লেমে হচ্ছে, আমরা কখনো এই জিহ্বাকে হার্ট আর ঈমানের সাথে কানেক্টই করতে শিখিনি!
অথচ খেয়াল করে দেখেন, রাসূলকে যেদিন বলা হলো সেই মহিলার কথা, যিনি রোজা রাখতেন, সাদাকা দিতেন, এমনকি রাতে নামাজও পড়তেন, সেই মহিলা সম্পর্কে তিনি কী বলেছিলেন জানেন?
বলেছিলেন যে এই মহিলার ভিতরে ভালোত্বের লেশমাত্র নেই!
সে জাহান্নামী!
কেন?
কারণ সেই মহিলার একটাই খারাপ স্বভাব ছিল, “তিনি তার প্রতিবেশীদের কথা দ্বারা এবং জিহ্বা দ্বারা কষ্ট দিয়ে থাকতেন”!3
ভাত যেমন দুটো টিপ দিলেই বুঝা যায় হাঁড়ির কী অবস্থা, তেমনি মানুষের দুটো কথা শুনলেই বুঝা যায় তার হার্ট বা ঈমানের কী অবস্থা।
কারণ জিহ্বাই প্রমাণ বহন করে যে তার হার্ট কেমন, আর তার হার্ট প্রমাণ বহন করে যে তার ঈমান কেমন, যেহেতু সেই মহিলার ঈমান ক্লিন ছিল না, সেহেতু তার হার্ট ক্লিন ছিল না, আর যেহেতু তার হার্ট ক্লিন ছিল না, সেহেতু তার জিহ্বাও ক্লিন ছিল না!
আপনি যদি নিজেকে আলোকিত মানুষ হিসেবে প্রেসেন্ট করে থাকেন, দেখতে ইসলামিক হন কিংবা পোশাক-আশাকও ইসলামিক হন, কিন্তু কথা-বার্তায় আপনি সেই অন্ধকার যুগের অশিক্ষিত মূর্খের মতোই বর্বর, তাহলে ইসলামিক পরিভাষায় আপনাকে কি বলা হবে জানেন?
মুনাফেক কিংবা হিপোক্রেট!
কারণ আল্লাহর রাসূল জানিয়েছেন, হিপোক্রেট বা মুনাফেকদের চেনার উপায় হলো ৪টি4
- “তার কাছে যখন বিস্বাস করে কিছু রাখা হবে, তা সে মেরে দিবে”
- “সে যখন কাউকে কথা দিবে, তা সে সহজেই ভেঙে ফেলবে”
- “সে যখন কথা বলবে, শুধু মিথ্যাই বলবে”
- “আর সে যখন কারো সাথে ঝগড়া করবে, মুখ খারাপ করে করবে!”
তাই আপনাদের বলছি, আপনারা যারা মানুষদের জিহ্বা বা কথা দিয়ে কষ্ট দিয়ে বেড়াচ্ছেন, আর ডিফেন্ড করছেন যে, “আরে ভাই আমার তো খালি মুখটাই খারাপ, অন্তরটা কিন্তু মেলা সাফ!”
তাদের বলছি, একটু সাবধান!
পাছে মুনাফেকের ট্যাগ টা না লেগে যায় আবার!
- هُوَ الَّذِي أَنزَلَ السَّكِينَةَ فِي قُلُوبِ الْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَعَ إِيمَانِهِمْ وَلِلَّهِ جُنُودُ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا
He is the One Who sent down serenity upon the hearts of the believers so that they may increase even more in their faith. To Allah alone belong the forces of the heavens and the earth. And Allah is All-Knowing, All-Wise.
-Dr. Mustafa Khattab The Clear Quran
He (Allah) is such that He sent down tranquility into the hearts of the believers, so that they grow more in faith in addition to their (existing) faith-And to Allah belong the forces of the heavens and the earth, and Allah is All-Knowing, All-Wise-
-T. Usmani
It was He who made His tranquillity descend into the hearts of the believers, to add faith to their faith-the forces of the heavens and earth belong to God; He is all knowing and all wise-
-M.A.S Abdel Haleem
He it is Who bestowed inner peace on the hearts of the believers so that they may grow yet more firm in their faith. To Allah belong the legions of the heavens and the earth; Allah is All-Knowing, Most Wise.
-A. Maududi ↩︎ ↩︎- আল-আদাবুল মুফরাদ, ১১৯ ↩︎
- সহীহ বুখারীঃ৩৪ ↩︎