ওরা না-হয় হারাম উপায়ে হারাম সঙ্গীর সঙ্গে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে‘ উদযাপন করছে। আমরা কি হালালভাবে এ দিবস উদযাপন করতে পারব না?
যেমন ধরুন, স্বীয় বৈধ স্ত্রীর সাথে এ দিবস উপলক্ষ্যে কিছু রোমান্টিক আচরণ করা, ফুল বা উপহার-উপঢৌকন বিনিময় করা ইত্যাদী?
এগুলো করা কি উচিত হবে?
না, হালাল স্ত্রীর সাথেও এ জাতীয় দিবস উদযাপন করা জায়িয হবে না। এ দিবস পালনের নিয়তে কিছু পালন করা উচিত হবে না।
আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে জীবনসঙ্গী হিসাবে প্রতিদিন প্রতিক্ষণ রোমান্টিক আচরণ করতে পারেন। এমন কি আজকের ১৪ ফেব্রুয়ারীতেও। এতে কোনো অসুবিধা নেই। এটি অনেক প্রশংসনীয় ও পুণ্যের কাজ। প্রতিটি আচরণে আপনাকে নেকি দেওয়া হবে। তবে সেটা বেহায়াপনা দিবসের উদযাপনের অংশ হিসাবে নয়। বরং যা করবেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ হিসাবে। কারণ, ‘ভ্যালেন্টাইন ডে‘ উদযাপন অভিশপ্ত ইয়াহুদি-নাসারার সাদৃশ্য অবলম্বনে ও নষ্ট যুগলের অনুসরণে হয়; যা শরীয়তে অত্যন্ত নিন্দনীয়।
নবীজি সা. বলেছেন : “তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধাচরণ করো।“
খোদ সুরা ফাতিহায় তো ইয়াহুদি নাসারাদের পথ মাড়ানো থেকে আত্মরক্ষার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা শেখানো হয়েছে।
এটা ঠিক নামায রোযা দিয়ে ‘পহেলা বৈশাখ‘ বা ‘থার্টিফাস্ট নাইট‘ উদযাপনের মতো; যা দৃশ্যত সুন্দর মনে হলেও এর কোনো ভিত্তি নাই। কারণ, এগুলো পালনের কোনো দলীল শরীয়তে নেই, হোক না সেটা নামায রোযা দোয়া মুনাজাত দিয়ে।
বস্তুত আমল হবে শরঈ দৃষ্টিকোণ থেকে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী হতে হবে সঠিক। ভুল দৃষ্টিভঙ্গী রেখে কোনো কাজই সঠিক হতে পারে না; যদিও দৃশ্যতা তা নির্দোষ মনে হয়। নবী কারীম সা. ইরশাদ করেছেন :
“তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না তার খাহেশ ও ইচ্ছা আমার আনিত দীনের অনুগত হবে।”
এ জন্য এ বিষয়ে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। বিশেষ করে দীনের পথে যারা অগ্রসর, তারা অনেক বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। যেন হুজুগে কিছু না করি!
এ প্রসঙ্গে হাকীমুল উম্মাহ আশরাফ আলী থানবী রহ. বর্ণিত ঘটনাটি স্মরণ করা যেতে পারে।
একবার জনৈক বুযুর্গ হিন্দুদের হোলী খেলার দিন কোথায় যাচ্ছিলেন। রাস্তায় হিন্দুদেরকে রং ছিটাছিটি ও আনন্দ উল্লাস করতে দেখলেন। সবাই তো রঙ্গে রঙ্গে রঙীন। রাস্তায় ছিল একটি গাধা। তিনি এই বলে মজাচ্ছলে গাধার গায়ে মুখ থেকে পান-চিবানো পিক ছিটে দিলেন; “গাধা, তোরে বুঝি রঙ মাখানোর কেউ নেই। যাহ, আমি দিয়া দিলাম।”
পরে ওই বুযুর্গকে স্বপ্নযোগে কঠোরভাবে ভর্ৎসনা করা হয়েছে; কিংবা তা বুযুর্গি কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
কাজেই সতর্ক সাবধান। অজান্তে ভুল হয়ে থাকলে ইস্তিগফার করা উচিত।
আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাযত করুন!
উল্লেখ্য, স্ত্রীর সাথে বৈধ উপায়ে এ দিবস উদযাপন করলে কেবল বিজাতীর অনুসরণের গোনাহ হবে; আচরণের নয়। কিন্তু স্ত্রী ছাড়া অন্য কারও সাথে তা উদযাপন করলে সবটাই পাপ হবে; আচরণে ও উদযাপনে।