সন্তান নয়, ‘নেক্কার’ সন্তান কামনা

সন্তান লাভ করা সবার জন্য পরম আকাঙ্ক্ষিত একটি বিষয়। সন্তান হচ্ছে না দেখে অনেক দম্পতি চরম ডিপ্রেশনে ভুগছেন, পারিবারিক যন্ত্রণায় দিন কাটাচ্ছেন, অতি আপনজনের বাঁকা চোখের স্বীকার হচ্ছেন।এটা সত্যিই বড়ো কষ্টের বিষয়। একমাত্র ভুক্তভোগী ছাড়া অন্য কেউ এ যন্ত্রণা উপলব্ধি করতে পারবে না। তবে দুনিয়া যেহেতু পরীক্ষার ক্ষেত্র তাই সন্তান না হওয়াটা কারো কারো জন্য পরীক্ষা হতে পারে। আর পরীক্ষার প্রশ্ন কখনো কখনো জটিল হয়ে থাকে। এটি তেমনই একটি বিষয় হতে পারে। এমন পরীক্ষায় উত্তীর্ণের জন্য ধৈর্যের বিকল্প নেই। 

সন্তান না হওয়াটাও কিন্তু আপনার জন্য কল্যাণকর হতে পারে যা আপনি আপাতদৃষ্টিতে বুঝতে অক্ষম। আল্লাহ তা’য়ালাই বলেছেন, এমনও তো হতে পারে যা তোমাদের ভালো লাগে না, তাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, আবার একইভাবে এমন কোনো জিনিস, যা তোমাদের খুবই ভালো লাগবে কিন্তু পরিণামে তা হবে তোমাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর; আল্লাহ তা’য়ালা সবচাইতে ভালো জানেন, তোমরা কিছুই জানো না।[সূরা আল বাকারা: ২১৬]

এই ধরুন, আপনার সন্তান জন্ম নিলো ঠিকই কিন্তু সে একজন প্রতিবন্ধী, রোগাক্রান্ত ইত্যাদি হলো। এছাড়া, এমনও তো হতে পারে সে বড়ো হয়ে নাস্তিক হলো, শীর্ষ সন্ত্রাসী হলো। তখন কিন্তু সন্তান না হওয়ার যে কষ্ট আপনি এখন ভুগছেন সে কষ্ট আরও বহু গুণ বেড়ে যেতো। আল্লাহ আপনাকে সে কষ্ট দিতে চাচ্ছেন না বলেই হয়তো আপনাকে নিঃসন্তান রেখেছেন। ফলে আল্লাহ যদি আপনাকে সন্তান দান না করেন তাহলে হতাশ না হয়ে, মন খারাপ না করে উত্তম বিনিময় পাওয়ার আশায় ধৈর্য ধারণ করবেন। এমন তো আর না, শত বছর আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। বরং হঠাৎ চলে আসা মৃত্যু এসে গেলেই তো আপনার এমন কঠিন ধৈর্যের অবসান ঘটে যাবে। আর এটাই আপনার জন্য নিঃসন্তান থাকার অনেক বড়ো মোটিভেশন।

সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড়ো এক নিয়ামত। এই নিয়ামত সবার ভাগ্য জুটে না। আল্লাহ কাউকে সন্তান দিয়ে পরীক্ষা করেন আবার কাউকে সন্তান না দিয়ে পরীক্ষা করেন। আপনার সন্তান না হওয়াটা কিন্তু আপনার ইখতিয়ারে নেই। এটা পুরোপুরিই আল্লাহর ফায়সালা।আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন, আকাশমণ্ডলী ও যমীনের সমুদয় সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহ তা’য়ালার জন্যে, তিনি যা ইচ্ছা তাই সৃষ্টি করেন; যাকে ইচ্ছা কন্যা তাকে সন্তান দান করেন, আবার যাকে ইচ্ছা তাকে পুত্র সন্তান দান করেন, যাকে ইচ্ছা তাকে পুত্র কন্যা উভয়ই দান করেন, আবার যাকে ইচ্ছা তাকে বন্ধ্যা (নিঃসন্তান) করে দেন; নিসন্দেহে তিনি বেশি জানেন, ক্ষমতাও তিনি বেশি রাখেন। [সূরা আশ শূরা: ৪৯-৫০]

একজন ঈমানদার, একজন জান্নাত প্রত্যাশী মানুষ সর্বাবস্থায় আল্লাহর ফায়সালাকেই হাসিমুখে মেনে নিবে। কোনো কিছু না পাওয়াতে তার বিন্দুমাত্র অভিযোগ থাকবে না। নিঃসন্দেহে আল্লাহর ফায়সালার মধ্যেই রয়েছে কল্যাণ। কে জানে, আল্লাহ আপনাকে নিঃসন্তানের বিনিময়ে পরকালে জান্নাত দান করতে পারেন, সবার সামনে এনে সম্মানের মুকুট পড়াতে পারেন। বিশ্বাস করুন, তখন আপনার আজকের নিঃসন্তান থাকার কষ্ট আর কষ্ট থাকবে না, পরম এক সুখে পরিণত হয়ে যাবে।

[২]

সন্তান হচ্ছে না দেখে আপনি কি ধৈর্যের নামে বসে থাকবেন?
নিশ্চয়ই না। ধৈর্যের পাশাপাশি আপনি দুটো কাজ করবেন।
প্রথমত, আপনি সুচিকিৎসা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। এ বিষয়ে আপনার জানাশোনা কম থাকলে ভালো মানুষের পরামর্শ নিবেন। আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধপত্র সেবন করবেন।

দ্বিতীয়ত, আল্লাহর কাছে আপনি চাইতে থাকবেন। কীভাবে চাইবেন? নবী রাসূলগণ যেভাবে চেয়ে নেক্কার সন্তান লাভ করেছেন ঠিক সেভাবেই চাইবেন। আচ্ছা, আপনি কি কখনো খুঁজে দেখছেন যে, দেখি তো! কুরআনে আল্লাহ তা’য়ালা সন্তান লাভ নিয়ে কিছু বলেছেন কি-না? কী দেখেছেন কখনো? 

মূলত, কুরআনে এগুলো তালাঁশ না করাই আপনাকে অস্তিরতার মধ্যে রাখছে, ক্রমেই ডিপ্রেশনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। কুরআন পাঠ করলে আপনি জানতে পারতেন, আল্লাহ তা’য়ালা সেখানে কয়েকজন নিসন্তান দম্পতির কাহিনী বর্ণনা করেছেন যারা আল্লাহর কাছে তাদের নিঃসন্তান থাকার বিষয় মনখোলে বলেছেন। আর এক পর্যায়ে আল্লাহ তাদের কথা কবুল করে নিলে তারা অবিশ্বাস্যভাবে আমাদের ভাষায় অসময়ে সন্তান লাভ করেছেন যা আপনাকে অবাক করে দিবে।

মুশকিল হচ্ছে, আমরা এতোটাই দূর্ভাগা যে, কুরআনে বাতলে দেওয়া পন্থা বাদ দিয়ে আমরা তথাকথিত কবিরাজের শরণাপন্ন হই। সন্তান লাভের আশায় তাদের দেওয়া বিভিন্ন তাবিজ ব্যবহার করা শুরু করি যা সুন্নাহ পরিপন্থী কাজ। এছাড়া, চিকিৎসার নামে ঐসব কবিরাজরা এমন এমন আজগুবি কথা বলে কিংবা এমন এমন কিছু করায় যা রীতিমতো আপনার ঈমানের মতো আসল দৌলত নষ্ট করে দিতে পারে, মুহূর্তে আপনি হয়তো কাফিরের ভূমিকায় চলে যেতে পারেন।  

এসব কবিরাজরা আন্দাজে বলে চালানের কারণে নাকি সন্তান হচ্ছে না। আপন মানুষেরা নাকি জাদু করেছে, চালান ছেড়েছে ইত্যাদি বলে মানুষকে কনফিউজড করার চেষ্টা করে। এরা বেশীরভাগ মনগড়া কথার আশ্রয় নেয়। মূলত,এসব বলে তারা আপনার আপনজনদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে দেয়, দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়, দুশমন বানিয়ে রাখে। তাদের আরেকটি কৌশল হচ্ছে, তারা যখন মানুষকে টাকার অঙ্ক বলে তখন বিজোড় একটি সংখ্যায় বলে। আসলে তারা কেন এমনটা বলে, জানেন? তারা মূলত এমনটা বলে রোগীকে বোঝাতে চায়, এর মধ্যে বিশেষ কিছু ফায়দা আছে। রোগী যেন বিশেষ ফায়দার কথা ভেবে নিঃসংকোচে দাবিকৃত টাকাগুলো ভালোয় ভালোয় দিয়ে দেয়। বুঝলেন, এসব ভন্ডদের কারসাজি বোঝা বড়ো মুশকিল।

মূলত, এরা রোগীর সরলতার সুযোগ নিয়ে রোগীর অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে রোগীর সাথে ধান্দাবাজিতে মেতে উঠে। রোগী ভাবে হয়তো কবিরাজের বলা কথাগুলো শুনলে, এই এই পরিমাণ টাকা দিয়ে দিলেই বুঝি তার কল্যাণ হবে, তার কাঙ্ক্ষিত আশা পূরণ হয়ে যাবে। অথচ বুঝতেই পারে না সে যে কতো বড়ে ধোঁকা খাচ্ছে। এভাবে প্রতিনিয়তই এসব ভন্ডরা মানুষদেরকে ধোঁকা দিয়েই যাচ্ছে। আর অজ্ঞতার বেড়াজালে থাকা অনেক সরলমনা মানুষেরা প্রতিনিয়তই তাদের বলির স্বীকার হয়ে যাচ্ছে। ব্যাপারটি আসলেই অনেক দুঃখজনক। এইসব ভন্ডদের কাছে গেলে চিকিৎসা তো দূরের কথা উল্টো পেরেশানির ওপর পেরেশানি আমদানি করে নিয়ে আসতে হয়। অতএব এদের কাছে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

রাস্তাঘাটে কবিরাজদের লিফলেটের ছড়াছড়ি দেখলেই বোঝা যায়, আমরা আল্লাহর উপর নির্ভরশীল না হয়ে কবিরাজদের উপর কতোটা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। অথচ আল্লাহ তা’য়ালা কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে অসংখ্য বার বলেছেন, প্রতিটি ঈমানদার বান্দার উচিত সর্ববিষয়ে আল্লাহর উপরই নির্ভর করা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আজ আমরা আল্লাহর ওপর নির্ভরতা থেকে সরে এসে বড়ো নির্বোধের মতো আল্লাহর সামান্য সৃষ্টির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। হায়, আফসোস! 

অনেকের ক্ষেত্রে অবশ্য জ্বিনঘটিত ব্যাপার থাকতে পারে। অথবা কেউ জাদুর শিকার হয়ে থাকতে পারেন। এটা মোটেও অসম্ভব কিছু নয়। এমতাবস্থায় ভালো কোনো রাক্বির পরামর্শে রুকইয়াহ্ (শরীয়তসম্মত ঝাড়-ফুঁক) করা যেতে পারে। এছাড়া, অনেকে হিজামা (কাপিং থেরাপি) করতে বলেন। এরও উপকারিতা আছে। এই ব্যাপারটিও মাথায় রাখতে পারেন।

অনেকে দম্পতি সন্তান হচ্ছে না দেখে মাজারে মাজারে হন্য হয়ে ঘুরে বেড়ান। সন্তান হওয়ার জন্য মাজারে শায়িত অক্ষম লোকটির কাছে সন্তান চেয়ে বসেন। আরে, তিনি যদি নিজে কিছু করার ক্ষমতা রাখতেন তাহলে কি আর কবরের অন্ধকারে শুয়ে থাকতেন? যে নিজেই নিজের উপকার করতে অক্ষম সে আবার আপনার উপকার কীভাবে করবে! এমন সাধারণ বিষয় বুঝতে না পারা অজ্ঞতা ছাড়া কিছুই নয়। মনে রাখবেন, তাদের কাছে সাহায্য চাওয়া সম্পূর্ণত শিরক। আর আল্লাহর যমীনে শিরকের চেয়ে বড়ো গোনাহ, বড়ো যুলুম দ্বিতীয়টি আর নেই। আল্লাহকে অসন্তুষ্ট রেখে সন্তান লাভ কীভাবে আশা করা যায়। 

বিয়ে, সন্তান লাভ কিংবা যেকোনো কিছুর জন্য আমরা আল্লাহর কাছে ঠিকঠাক মতো চাইতে জানি না। আমাদের দোয়া ইনসাইটফুল হয় না। দোয়াতে ফাঁক থেকে যায়, বিশাল ফাঁক। এই ধরুন, আমরা বেশীরভাগই সন্তান চাওয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহর নিকট এভাবে বলি, হে আল্লাহ! আমাকে ছেলে-মেয়ে তথা সন্তান দান করুন। 

আল্লাহ আপনার চাওয়া মতো সন্তান দান করলেন। কিন্তু সে সন্তান বড়ো হয়ে বেয়াদব সন্তানে পরিণত হলো, মানুষের কাছে আপনার সে সন্তান এক ত্রাসের নাম, আপনার সে সন্তান শীর্ষ এক সন্ত্রাসী।এবার ভাবুন তো,আপনি তো সন্তান চেয়েছিলেন। আল্লাহ তা দিলেনও। এরপরও কি আপনি সুখী? মোটেও না। তখন আপনার কী উপলব্ধি হবে জানেন? আপনার উপলব্ধি হবে আপনার দোয়ার মধ্যে একটি বিরাট ফাঁক ছিল। আপনি সন্তান চেয়েছেন ঠিকই কিন্তু নেক্কার সন্তান চাননি। আর এই নেক্কার সন্তান না চাওয়াটাই আপনার বিশাল একটা ভুল ছিল।

কুরআনে বর্ণিত নবী-রাসূলগণের দোয়ার দিকে লক্ষ করলে আপনি দেখতে পাবেন, তারা কখনোই আল্লাহর কাছে কেবল সন্তান চাননি, তারা চেয়েছেন নেক্কার সন্তান। তারা তাদের দোয়ায় সন্তানের আগে ‘নেক্কার’ শব্দ জুড়ে দিতেন যা আমরা করি না। আর এই নেক্কার সন্তান চাওয়ার মাধ্যমেই একসাথে অনেক বিষয় চাওয়া হয়ে যায়,যা আলাদা করে না বললেও হয়। 

নেক্কার সন্তান মানে কী, জানেন? নেক্কার শব্দের গভীরতা অনেক। আল্লাহর কাছে যখন নেক্কার সন্তান চাওয়া হচ্ছে তখন সেটার অর্থ দাঁড়াচ্ছে আপনার সন্তানের ঈমান আমল যেন বিশুদ্ধ থাকে, সে যেন সচ্চরিত্রবান হয়, সে যেন মা-বাবার অনুগত সন্তান হয়, সে যেন ভালো মানুষ হয়, সে যেন একজন দাঈ হয়, সে যেন নিজেকে ইসলামের খেদমতে আত্মনিয়োগ করে। তার কাছ থেকে যেন গোটা সমাজ তথা রাষ্ট্র উপকৃত হয়। সর্বোপরি, সে যেন এমন এক সন্তান হয় যে সবসময় তার রবের সন্তুষ্টির ওপর চলার চেষ্টা করে, যে মানুষ নয় স্বয়ং আল্লাহর কাছে স্মার্ট সাজার চেষ্টা করে, যে সবসময় আল্লাহর অনুগত হয়ে চলে। আর এগুলোই হচ্ছে নেক্কার সন্তানের কোয়ালিটি।

[৪]

নেক্কার সঙ্গী তথা বিবাহ, নিঃসন্তান দম্পতি কিংবা সন্তান থাকলে তাদের কল্যাণের জন্য নিম্নে বর্ণিত দোয়াগুলো আমরা সবসময় পাঠ করতে পারি। এগুলোর তাৎপর্য অনেক বেশি।

নেক্কার সন্তান কামনায় উত্তম দোয়া

প্রথম দোয়াঃ

বৃদ্ধ বয়সে যাকারিয়া (আঃ) নিজের স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব অর্থাৎ সন্তান জন্ম দানের অক্ষমতার বিষয় মাথায় রেখে আল্লাহর নিকট সন্তান লাভের আশায় এমন একটি দোয়া করেছিলেন যে দোয়া আল্লাহ কবুল করে নিয়ে সাথে সাথে ফেরেশতাদের মাধ্যমে ইয়াহিয়া (আঃ) নামক একজন নেক্কার সন্তান দান করার সুসংবাদ দিয়েছিলেন৷ সুবহান’আল্লাহ! কতোই-না দামি এক দোয়া। আর সেই কবুলকৃত দোয়াটি হচ্ছে, 

رَبِّ هَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً ۖ إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ
হে আমার মালিক! আপনি আপনার কাছ থেকে আমাকে একজন নেক্কার সন্তান দান করুন; নিশ্চয়ই আপনি মানুষের ডাক শুনেন।
[সূরা আলে ইমরান: ৩৮]

লক্ষণীয়, এখানে নেক সন্তান চাওয়ার পাশাপাশি আল্লাহর অন্যতম একটি গুণ উচ্চারণ করা হয়েছে। আর সেই গুণটি হচ্ছে, সামিউ। অর্থাৎ আল্লাহ তুমি তো মানুষের ডাক শুননেওয়ালা। কেউ মুখে কিছু বললেও তুমি শুনতে পাও আবার না বললেও তার মনের কথা শুনতে পাও। অতএব আমার কথা তুমি শুনে নাও গো পরওয়ারদিগার। 

দ্বিতীয় দোয়াঃ

رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلَاةِ وَمِنْ ذُرِّيَّتِي رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاءِ
হে আমার রব! আমাকে নামাজ কায়েমকারী বানিয়ে দিন এবং আমার আওলাদের মধ্য হতেও এমন লোক সৃষ্টি করুন,যারা নামায কায়েম করবে; হে আমার রব! আমার দোয়া কবুল করে নিন। 
[সূরা ইবরাহীম: ৪০]

খেয়াল করে দেখুন, এই দোয়ায় দুই-দুই ‘রব’ সম্বোধন করে বলা হচ্ছে, আল্লাহ যেন আমাকে এমন মানুষ হিসেবে কবুল করেন যে নিজে নামাজ পড়ে এবং পরিবার সমাজের মানুষকে নামাজ পড়াতে উদ্বুদ্ধ করে যায়, তাদেরকে নামাজমুখী করার সর্বাত্নক চেষ্টা চালিয়ে যায়। একইসাথে, আমার সন্তান তথা পরবর্তী বংশধররাও যেন এমনই হয়। আর সবশেষে এই দোয়া কবুল করে নেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানানো হচ্ছে।কত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কত উত্তমভাবে চাওয়া হচ্ছে। সুবহান’আল্লাহ! 

তৃতীয় দোয়াঃ

هَبۡ لِی مِن لَّدُنكَ وَلِیࣰّا 
ইয়া রব! আপনি আমাকে এক উত্তরাধিকারী দান করুন।
[সূরা মারইয়াম: ০৫]

চতুর্থ দোয়াঃ

সন্তান লাভের জন্য যাকারিয়া (আঃ) আরেকটি দোয়া পাঠ করতেন। আর সেটি হচ্ছে,

رَبِّ لَا تَذَرْنِيْ فَرْدًا وَّأَنْتَ خَيْرُ الْوَارِثِيْن
হে আমার রব! আমাকে একা নিঃসন্তান করে রেখো না, তুমিই তো উত্তম মালিকানার অধিকারী’।
[সূরা আল আম্বিয়া: ৮৯]

লক্ষ্যণীয়, যাকারিয়া (আঃ) এর দোয়ার শব্দ চয়নে উনার সন্তান লাভের তীব্র আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পাচ্ছে। আমরা কি কখনো এভাবে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছি?
যাকারিয়া (আঃ) এর মতো অগাধ ভরসা নিয়ে আমরা কি আল্লাহর কাছে সন্তান চেয়েছি?
তিনি চাচ্ছেন আল্লাহ যেন তাকে যেভাবেই হোক একজন সন্তান দান করে তার সন্তানহীনার দুঃখ লাঘব করেন। আমরা কি একইভাবে আল্লাহকে মনখোলে নিজের সন্তানহীনার কষ্টের কথা বলছি? না বলে থাকলে কীভাবে আশা করি?

যাকারিয়া (আঃ) এর ঐ দোয়ার পর পরই আল্লাহ সাড়া দিয়ে বলেছেন, অতঃপর আমি তার জন্যেও সাড়া দিয়েছিলাম, তাকে দান করেছিলাম (নেক সন্তান) ইয়াহইয়া এবং তার (মনের আশা পূরণের) জন্য আমি তার স্ত্রীকে (বন্ধ্যাত্বমুক্ত করে সম্পূর্ণ) সুস্থ (সন্তান ধারণপযোগী) করে দিয়েছিলাম; (আসলে) এ লোকগুলো (সবসময়ই) নেক কাজে একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করতো, তারা আমাকে আশা ও ভীতির সাথে ডাকতো, তারা সবাই ছিল আমার অনুগত (বান্দা)।
[সূরা আল আম্বিয়া, আয়াত নং : ৯০]

লক্ষণীয়,যাকারিয়া (আঃ) কে সন্তান দানের বিষয় উল্লেখ করার পর পরই আল্লাহ তা’য়ালা তাদের স্বামী স্ত্রীর তিনটি বিশেষ আমল উল্লেখ করেছেন। এখান থেকে শিক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, আমাদের যাদের সন্তান হচ্ছে না কিংবা যারা ভবিষ্যতে নেক্কার সন্তান আশা করছেন তারা যেন বিশেষভাবে এই তিনটি আমল অব্যহত রাখেন। নেক্কার সন্তান লাভের জন্য এই আমলগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই আমলগুলো কী কী?
প্রথমত, তারা নেক কাজে প্রতিযোগিতা করতেন।
দ্বিতীয়ত, আল্লাহকে আশা ও ভয় নিয়ে ডাকতেন এবং
তৃতীয়ত, আল্লাহর আনুগত্য করতেন।

নেক কাজে প্রতিযোগিতা মানে কী?
কেউ যদি দশ টাকা দান করে আপনি তারটা দেখে তার চেয়ে আরও বাড়িয়ে পনের টাকা দান করলেন, কেউ যদি দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আপনি চার রাকাত নফল নামাজ পড়লেন, কেউ যদি একটি ভালো কাজের আদেশ দেয় আপনি কয়েকটি ভালো কাজের আদেশ দিলেন, কেউ যদি একটি নফল রোজা রাখে আপনি একাধিক নফজ রোজা রাখলেন। একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এই যে ভালো কাজে একজন আরেকজনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা এটাকেই বলে নেক কাজে প্রতিযোগিতা।

আশা ও ভয় মানে কী, জানেন?
আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চললে,আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকলে আল্লাহ আমাকে জান্নাত দান করবেন। এটাই হচ্ছে আশা। অপরদিকে, যখন আপনার মনের মধ্যে এই চিন্তা থাকবে যে, আমি তো আমার সাধ্য মতো নেক আমল করে যাচ্ছি। কিন্তু এই নেক আমলে কোনো ত্রুটি থাকার কারণে আমি জান্নাত থেকে বঞ্চিত হয়ে যাই কিনা, অজানা কোনো পাপের কারণে জাহান্নাম আমার জন্য নির্ধারিত হয়ে যায় কিনা- এসব নিয়ে চিন্তা করাই হচ্ছে ভয়। অর্থাৎ অনেক নেক আমল করার পরও আপনার মধ্যে ওভার কনফিডেন্স কাজ করবে না। কখনোই মনে হবে না যে, আমি যেহেতু অনেক আমল করছি তাই আমি তো জান্নাতে যাবই। অহংকার হয়ে যাচ্ছি কিনা-এ বিষয়ে সচেতনতা থাকবে।

আল্লাহর অনুগত থাকার মানে কী, জানেন? এর মানে হচ্ছে, আল্লাহ যেভাবে চলতে বলেছেন সেভাবে চলা আর যেভাবে চলতে নিষেধ করেছেন সেভাবে না চলাই হচ্ছে আল্লাহর অনুগত থাকা। সহজ কথায়, অন্তরে আল্লাহর ভয় লালন করে জীবনের প্রতিটি কাজ করা মানেই আল্লাহর আনুগত্য করা।

পঞ্চম দোয়াঃ

নেক্কার সন্তানের লাভের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া যা আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছেন। নেককার জীবনসঙ্গী এবং সুসন্তান কামনায়ও এই দু‘আটি খুবই উপকারী। 

رَبَّنَا هَبْ لَـنَا مِنْ اَزْوَاجِنَا وَذُرِّيّٰتِنَا قُرَّةَ اَعْيُنٍ وَّاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِيْنَ اِمَامًا
হে আমাদের রব! তুমি আমাদের (স্বামী) স্ত্রী ও সন্তানদের আমাদের জন্য এমনভাবে বানিয়ে দাও যেন তারা আমাদের নয়ন জুড়িয়ে দেয়, চক্ষু শীতল করে দেয় এবং আমাদেরকে আল্লাহওয়ালাদের নেতা বানিয়ে দাও।
[সূরা আল-ফুরক়ান: ৭৪] 

আল্লাহ তা’য়ালা কুরআনে যাদেরকে আলাদা ভাবে ‘নিজের বান্দা’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন তাদের বারোটি গুণ তুলে করেছেন। তন্মধ্যে একটি গুণ হচ্ছে, তারা কেবল নিজেদের জন্য নয় বরং নিজেদের পরিবারের জন্যও দোয়া পাঠ করে। উপরোল্লিখিত দোয়াই হচ্ছে সেই স্পেশাল দোয়া। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এই দোয়াটি কতোটা গুরুত্ব পাওয়ার দাবি রাখে তা আল্লাহর স্বীকৃত বান্দার গুণ হিসেবে মর্যাদা দেওয়ার বিষয় থেকে স্পষ্ট। তাই এই দোয়া আমাদের কাছে কোনোভাবেই উপেক্ষিত থাকতে পারে না।মুমিন মাত্রই এই দোয়া পড়ার কথা।

উল্লেখ্য, কুর’রাতা আ’য়ূন অর্থাৎ চক্ষু শীতলকারী এই শব্দদ্বয় গভীর অর্থ বহন করে। এটার গভীরতা যদি আমরা কিছুটা হলেও বুঝতে পারি তবে এই দোয়াই সার্বক্ষণিক আমাদের জিহ্বায় লেগে থাকার কথা।আমাদের বেশীরভাগের নিকট উত্তম জীবনসঙ্গীর মানদন্ড হচ্ছে সৌন্দর্য ও কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা পয়সা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা আল্লাহর কাছে এরকম জীবনসঙ্গীই কামনা করি। অথচ এগুলো পেলেই সুখী হওয়া যায় না।

আপনি একটিবার ভাবুন তো, আপনি আল্লাহর কাছে আপনার জীবনসঙ্গী হিসেবে এমন কাউকে চাইলেন যে অনেক সুন্দর হবে এবং যার অনেক টাকা-পয়সা থাকবে। এখন আপনার দোয়া অনুযায়ী আল্লাহ তা কবুলও করে নিলেন। আপনার চাওয়া অনুযায়ী আপনার সঙ্গী সুন্দর এবং অনেক টাকা পয়সার মালিক হওয়া সত্ত্বেও তিনি আপনার সাথে ভালো আচরণটুকু করেন না, আপনার প্রয়োজনীয় বিষয় খেয়াল করেন না, আপনাকে সময় না দিয়ে পরকীয়া করে বেড়ান তাহলে কি আর তাকে আপনার ভালো লাগবে? তখন কি সেই সঙ্গী আপনার নয়ন জুড়াবে, অন্তর শীতল করবে?

পক্ষান্তরে, আপনি এটাও ভাবুন তো, আপনার সঙ্গী হয়তো দেখতে ততোটা সুন্দর নন, হয়তো তার অনেক টাকা পয়সা নেই কিন্তু সে আপনাকে অনেক ভালোবাসে তখন কি সেই সঙ্গী আপনার চক্ষুশীতল করবে না, হৃদয় তৃপ্ত করে দেবে না? নিশ্চয়ই করবে। সেজন্যই আমাদেরকে এমনভাবে দোয়া করতে হবে যে দোয়ার মধ্যে সকল বিষয় একসাথে চাওয়া হয়ে যায়। আর একসাথে সকল বিষয় চাওয়া হয়ে যায় এমন দোয়াই তো আমাদের রব আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছেন। সুবহান’আল্লাহ!

ষষ্ঠ দোয়াঃ

ইব্রাহিম (আঃ) আল্লাহর নিকট যে দোয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইসমাঈল (আঃ) এর মতো নেক্কার সন্তান লাভ করেছিলেন সেই ছোট্ট দোয়াটি হলো,

 رَبِّ هَبْ لِيْ مِنَ الصّٰلِحِيْنَ
অর্থঃ হে আমার রব! আমাকে একজন নেক্কার সন্তান দান করুন। 
[সূরা আস ছফফাত: ১০০]

একটি মজার বিষয় কি খেয়াল করেছেন? সেটি হচ্ছে, কোনো অবিবাহিত যখন উল্লেখিত সবকয়টি দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে একজন নেক্কার সন্তান কামনা করছে তখন কিন্তু একইসাথে তার বিয়ে করারও দোয়া করা হয়ে যাচ্ছে। কেননা সন্তান পেতে হলে তো আগে আপনার বিয়ের ব্যবস্থা হতে হবে-তাই না! তাছাড়া, নেক্কার সন্তানের জন্য নেক্কার সঙ্গীর বিষয় তো থাকছেই। তাই অবিবাহিত অবস্থায় আল্লাহর কাছে নেক্কার সন্তান চাওয়ার মানে হচ্ছে, আপনি চাচ্ছেন আপনার বিয়ের ব্যবস্থা হোক, তা-ও আবার যেই সেই কারো সাথে নয় নেক্কার সঙ্গীর সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা কামনা করা হচ্ছে। তারপর একজন নেক্কার সন্তান। সুবহান’আল্লাহ! এবার চিন্তা করুন, ঐসব দোয়ার মধ্যে কত কত চমৎকার বিষয় লুক্কায়িত আছে।

উল্লেখ্য, যাদের অনেক সন্তান থাকায় আর সন্তান কামনা করছেন না তারাও ঐসব দোয়া পাঠ করবেন। কারণ কেবল সন্তান থাকলেই তো হবে না। আপনার সে সন্তানগুলো যেন নেক্কার হয় এবং মৃত্যু পর্যন্ত নেক্কার হিসেবে জীবনযাপন করে সেজন্য সবসময় আল্লাহর নিকট দোয়া করতে থাকবেন।

যাইহোক, উল্লেখিত দোয়া নিয়মিত পাঠ এবং সকল ফরজ আমল ঠিক রাখার পাশাপাশি সবসময় বেশি বেশি দূরদ এবং ইস্তিগফার পাঠ করবেন। বিশেষ করে ইস্তেগফারের আমল বড়ো শক্তিশালী একটি আমল। ইস্তিগফার মানে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। নির্দিষ্ট বড়ো বড়ো গুনাহের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে সকল গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা। ইস্তিগফার সকল সমস্যার সমাধান হিসেবে কাজ করে। নূহ (আঃ) তার কওমকে যে কয়েকটি কারণে ইস্তেগফার করার কথা বলেছিলেন তার অন্যতম কারণ হচ্ছে সন্তান-সন্তনি লাভ। তাই সন্তান লাভের জন্য বেশি বেশি ইস্তেগফার করা খুবই জরুরি। 
[সূরা নূহ, আয়াত নং : ১০-১২]

ইস্তেগফারের আমল করলে আল্লাহর নিকট একসাথে অনেকগুলো বিষয় চাওয়া হয়ে যায়। সুতরাং এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল- তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এজন্য ইস্তেগফারের আমল কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। বিভিন্নভাবে ইস্তেগফার করা যায়। তন্মধ্যে সহজ একটি হচ্ছে, 

أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
“আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতূবু ইলাইহি”
অর্থঃ আমি আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর নিকটই তাওবা (প্রত্যাবর্তন) করছি।

বেশি বেশি দানের আমল করবেন। গোপন দান সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী। প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচটি টাকা হলেও দান করার চেষ্টা করবেন। দানের ব্যাপারে এতটাই সিরিয়াস হওয়ার চেষ্টা করবেন যে, এমন একটি দিনও যাতে না যায় যেদিন আপনি কোনো দানই করেন নি। আমি বলি কী! টাকা না থাকলে ঋণ করে হলেও প্রতিদিন অন্তত সামান্য কিছু দান করবেন তবুও কোনভাবে মিস করবেন না।কারণ কুরআন হাদীসে দানের কথা এত বেশি বলা হয়েছে যা জানলে আপনার শুধু দান করতেই মন চাইবে।মৃত্যুর কঠিন সময়ে মানুষের যে আপসোস হবে সেটা কী, জানেন? সেই আপসোসটা হবে দান সংক্রান্ত আপসোস। এবার চিন্তা করুন, এই আমলটা কত ওজনদার একটি আমল।

মনে রাখবেন, যে আল্লাহ যাকারিয়া (আঃ), ইব্রাহিম (আঃ) এর বার্ধক্যের মতো চরম প্রতিকূল সময়ে সন্তান দান করতে পেরেছেন সেই আল্লাহ চাইলে কিন্তু আপনাকেও যেকোনো সময় সন্তান দান করতে পারেন। অতএব আপনি আশাহত হবেন না, মোটেও দুশ্চিন্তায় ভুগবেন না। নবী রাসূলদের মতো বুক ভরা আশা নিয়ে আল্লাহকে প্রতিনিয়ত ডাকতে থাকুন। তারাও যেমন আল্লাহর বান্দা ছিলেন আপনিও তো তেমনি আল্লাহর বান্দা। তাদেরটা শুনলে আপনারটা শুনবেন না কেন!
আল্লাহ নিশ্চয়ই আপনার ডাক ফেলে দেবেন না, অবশ্যই শুনবেন।

লিখেছেন

রাকিব আলী

পরকালীন তথা স্থায়ী জীবনের লক্ষ্যে নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করছি। নিজে হেদায়েতের ওপর অটল থাকার পাশাপাশি অন্যেদেরকেও হেদায়েতের দিকে আহবান করা তথা পথ হারাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনাই আমার লেখালেখির মূল উদ্দেশ্য।

All Posts

পরকালীন তথা স্থায়ী জীবনের লক্ষ্যে নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করছি। নিজে হেদায়েতের ওপর অটল থাকার পাশাপাশি অন্যেদেরকেও হেদায়েতের দিকে আহবান করা তথা পথ হারাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনাই আমার লেখালেখির মূল উদ্দেশ্য।

Exit mobile version