সফর মাসে কি কি আমল করতে হয়
সফর মাসে কি কি আমল করতে হয়?
আর অন্য মাসগুলোতে কি কি আমল করতে হয় জানাবেন।
সফর মাসে কুরআন-সুন্নাহ কিংবা সালাফদের আমল থেকে বিশেষ কোনো ইবাদত-বন্দেগি সাব্যস্ত হয়নি। সুতরাং এ মাসে অন্যান্য মাসের মতোই ইবাদত-বন্দেগি করার চেষ্টা করবেন।
নিম্নে কিছু ইবাদত-বন্দেগির তালিকা উপস্থাপন করা হলো:
পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাত সময় হওয়ার সাথে সাথে ভয়-ভীতি, বিনয় নম্রতা ও আন্তরিকতার সহকারে আদায় করা, মহিলারা বাড়িতে এবং পুরুষেরা মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করবে। দিনে-রাতে ১২ রাকাত সুন্নত আদায় করা, সূর্য উদিত হওয়ার কমপক্ষে ১৫ মিনিট পরে দু’রাকাত ইশরাকের সালাত আদায় করা, ১০-১১টার দিকে চাশত (যুহা/আওয়াবিন) এর ২ থেকে ৮ রাকাত নফল সালাত আদায় করা, প্রত্যেকবার অজু করার পরে ওজুর দুই রাকাত সালাত আদায় করা, মসজিদে প্রবেশ করলে বসার পূর্বে দুই রাকাত সালাত আদায় করা, মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ে যথাসাধ্য নফল সালাত আদায় করা, তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করা, রমজান মাসে বিশেষভাবে তারাবির সালাত আদায় করা, দিনরাত যখন ইচ্ছা যতটুকু সম্ভব নফল সালাত আদায় করা (নিষিদ্ধ সময়গুলো ছাড়া) ইত্যাদি।
– রমজান মাসে ফরজ রোজা রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় যথাসাধ্য নফল রোজা রাখা। যেমন: প্রত্যেক সোমবার ও বৃহস্পতিবার দুটি নফল রোজা রাখা, প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩-১৪ ও ১৫ তারিখে আইয়ামে বীযের তিনটি রোজা রাখা কিংবা সারা মাসে সুবিধা জনক সময়ে তিনটি রোজা রাখা, সম্ভব হলে একদিন পর একদিন রোজা রাখা (নিষিদ্ধ দিনগুলো ছাড়া), মৌসুম ভিত্তিক নফল রোজাগুলো রাখা। যেমন: আরাফার রোজা, মুহাররমের নয় ও দশ কিংবা ১০ ও ১১ তারিখে দুটি রোজা রাখা, জিলহজ মাসের প্রথম দশকে রোজা রাখা ইত্যাদি।
উল্লেখ্য যে, মহিলাদের ক্ষেত্রে স্বামী কাছে থাকলে তার অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। তার অনুমতি ছাড়া এ সকল নফল ইবাদত করা যাবে না।
– অধিক পরিমাণে কুরআনে কারিম তিলাওয়াত করা, কুরআনের তরজমা ও তাফসির জানার চেষ্টা করা, সকাল সন্ধ্যা, পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পরে এবং ঘুমের পূর্বের জিকির ও দোয়াগুলো নিয়মিত পাঠ করা, দিনরাত কাজের ফাঁকে ফাঁকে, রাস্তায় চলার সময়, বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের সময়, যানবাহনে থাকা অবস্থায়, কারো জন্য অপেক্ষার সময় ইত্যাদি সময়গুলো অধিক পরিমাণে তাসবিহ, জিকির, দরুদ, ইস্তেগফার ইত্যাদি পাঠ করা।
পাশাপাশি ঘুমোতে যাওয়া, ঘুম থেকে ওঠা, টয়লেটে প্রবেশ করা, টয়লেট থেকে বের হওয়া, খাওয়ার আগে ও পরে, কাপড় পরার আগে, কাপড় খুলে রাখার সময়, স্ত্রী সহবাসের পূর্বে, বাড়ি থেকে বের হওয়া অতঃপর বাড়িতে প্রবেশ করা, মসজিদে প্রবেশ করা ও বের হওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশেষ দোয়াগুলো পাঠ করা।
– ফরজ যাকাত আদায়ের পাশাপাশি গরিব-অসহায় মানুষ বিশেষ করে নিকট আত্মীয়দের কে সাহায্য সহযোগিতা করা, জনকল্যাণমূলক কাজে অথবা মাদ্রাসা, মসজিদে ইসলামিক লাইব্রেরি, অফলাইন বা অনলাইনের মাধ্যমে দাওয়াতি কাজ ইত্যাদির জন্য অর্থ খরচ করা।
– হজ ফরজ হলে তা অনতিবিলম্বে আদায় করা এবং যথাসাধ্য অধিক পরিমাণে ওমরা আদায় করা।
উল্লেখ্য যে, এই সকল এবাদত বন্দেগি নির্দিষ্ট কোন মাসের সাথে সম্পৃক্ত নয় বরং বছরব্যাপী যে কোন সময় এই সহজ ইবাদতগুলো করা যেতে পারে যথাসাধ্য অনুযায়ী।
আল্লাহ তৌফিক দান করুন
আমিন।