আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রী একে অপরের জন্য পরিপূর্ণভাবে হালাল করেছেন। তারা হালাল পন্থায় যেভাবে ইচ্ছে একে অপরের মাধ্যমে আনন্দ-বিনোদন ও সুখ উপভোগ করবে।
সুতরাং ইসলামে যা নিষিদ্ধ সেটা ছাড়া তারা যে কোনোভাবেই আনন্দ উপভোগ করতে পারে। এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীকে বা স্ত্রী স্বামীকে সুরেলা কণ্ঠে গান, কবিতা, ছড়া, সংগীত, নাশিদ, গজল ইত্যাদি যা ইচ্ছা শোনাতে পারে। এতে একে অপরের রূপের বর্ণনা, আনন্দদায়ক বাক্য ব্যবহার, এমনকি যৌন আবেদন বা প্রেম নিবেদন মূলক কথাবার্তা বা গান বললেও তাতে কোন সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ।
তবে এজন্য কতিপয় শর্ত রয়েছে। যথা:
১. বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার থেকে দূরে থাকা।
২. যে ধরনের শব্দগুলো উচ্চারণ করা ইসলামে নিষিদ্ধ সেগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে। যেমন: গানের মাধ্যমে অন্যের সমালোচনা ও কুৎসা রটনা, ইসলামি আকিদার সাথে সাংঘর্ষিক কথাবার্তা ইত্যাদি।
৩. তাদের এই সব আনন্দ-বিনোদনমূলক গান, কবিতা ইত্যাদি যেন অন্য মানুষের কানে না যায়। এমনকি একটু বুঝমান ছোট বাচ্চাদেরকেও শোনানো যাবে না।
৪. গানের মাধ্যমে অন্য নারী বা পুরুষের সৌন্দর্যের বর্ণনা মুক্ত হওয়া।
শাইখ নাসিরুদ্দিন আলবানি রহ.-কে এ প্রশ্নটি করা হলে তিনি উত্তরে বলেছেন:
“যদি গান দিয়ে একে অপরের কণ্ঠ শুনে বিনোদনের উদ্দেশ্য হয়, তবে তা কয়েকটি শর্তে জায়েজ। শর্তগুলো হলো, গানের কথাগুলো জায়েজ হতে হবে। কথাগুলো যদি শরিয়তে নিষিদ্ধ হয় তবে তা কোনও অবস্থাতে কারো কাছে গাওয়া যাবে না। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
الشِّعر كلام ، حسنُه حسنٌ ، وقبيحه قبيح
“কবিতার ভালো কথাগুলো ভালো, আর খারাপ কথাগুলো খারাপ।”
যদি কোনও মানুষ গান বা কবিতায় খারাপ কথা বলে, তবে তাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে।
গান করার দ্বারা উদ্দেশ্য যদি হয়, একে অপরের কণ্ঠ শুনে পুলকিত হবে, আনন্দ পাবে তবে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সামনে গান করলে কোনও দোষ নেই, তবে গানের উদ্দেশ্য যদি পাপাচারী শিল্পীদের মতো গানের অনুশীলন বা অনুকরণ হয় তবে তা জায়েজ নয়।
[ফতোয়া নাম্বার ১০, ক্যাসেট নাম্বার ৪২, আল-হুদা ওয়ান নূর সিরিজ। সূত্র: প্রশ্নোত্তরে ইসলাম এন্ড ওয়েবসাইট]
আল্লাহু আলাম।