Writing

স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা

[১]

পৃথিবীতে আল্লাহর যতোগুলো নিয়ামত রয়েছে তার মধ্যে দামি এক নিয়ামত হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা। স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে মায়া মহব্বত থাকলে দুনিয়ার জীবনটাই জান্নাত-জান্নাত মনে হবে। সে এক অন্যরকম সুখ যা কোনো ভাষা দিয়ে প্রকাশ করা যায় না। পক্ষান্তরে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা না থাকলে পুরো জীবনটাই যেন এক টুকরো জাহান্নামে পরিণত হয়ে যায়। তখন বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাই ফিকে হয়ে যায়, অশান্তিকে নতুন রূপে চেনা হয়, দুঃখের সংজ্ঞাটাও নতুনভাবে জানা হয়।

সত্যি কথা বলতে কী! আজকের সমাজের অনেকেই স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার মতো পরম নিয়ামতের কদর করতে জানেন না। স্ত্রী ভালোবাসলেও স্বামী যেনো স্ত্রীকে ভালোবাসতেই চান না। একইভাবে, এর বিপরীতও হয়ে থাকে। আসলে, সে সত্যিই অনেক বড়ো এক কপালপোড়া যে এমন নিয়ামতের কদর করে না, যে এমন নিয়ামতকে আগলে রাখতে জানে না।

দুঃখজনক হলেও বাস্তব,আমাদের সমাজে অনেক স্বামী আছেন যারা স্ত্রীকে দেখতেই পারেন না। স্ত্রীকে জুড়েই যেনো তার সমস্ত ঘৃণা। সবসময় ধমকের স্বরে চিৎকার চেঁচিয়ে কর্কশ গলায় কথা বলেন।সামান্যতেই রাগ করে বসেন। উঠতে বসতে গালিগালাজ করেন এমনকি স্ত্রীর মা-বাবা যাদের কারণে-ই তার স্ত্রীর দুনিয়াতে আসা হয়েছে সেই তাদেরকে জড়িয়েও গালি দিতে কুন্ঠাবোধ করেন না। এমন স্বামীরা তাদের স্ত্রীর সাথে কখনো হাসিমুখে কথা বলেন না। সবসময় স্বৈরশাসকের মতো আচরণ করেন। তাদের এমন অমানবিক আচরণে স্ত্রীরা সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকেন, প্রতিটি মুহুর্ত এক ধরনের ভয়ের মধ্যে দিয়ে যান। আর এসব ব্যাপার আসলেই খুবই পীড়াদায়ক।

আচ্ছা ভাই আমার!
আপনি একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন তো, আপনার স্ত্রী যদি আপনার সাথে চিৎকার চেঁচিয়ে কথা বলে, খারাপ আচরণ করে তখন আপনার কেমন লাগবে?
যদি ভালো না লাগে তবে আপনি কেন আপনার স্ত্রীর সাথে দুর্ব্যবহার করে চলছেন?
নিজেকে প্রশ্নের কাঁঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করুন তো, যেই ব্যবহার আপনাকে কষ্ট দিবে সেই একই ব্যবহার আপনি কীভাবে আপনার স্ত্রীর সাথে অনায়াসে করতে পারেন?
তাতে কি আপনার কষ্ট হয় না, খারাপ লাগে না?

যে মেয়ে বিয়ের মাধ্যমে তার মা-বাবা, ভাই-বোন, চাচা চাচিসহ সকল পরম আপনজনকে ছেড়ে আপনার কাছে চলে আসলো সেই মেয়েটা কি আপনার নিকট একটুও ভালোবাসা পাওয়ার দাবি রাখে না?
যে মেয়ে আপনার চরিত্র হেফাজতে ভূমিকা পালন করছে, অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে আপনার প্রজন্মকে গর্ভধারণ করছে, আপনার সন্তানের দেখভাল করছে, আপনার মা বাবাকে দেখাশুনা করছে, আপনার বাসায় অবস্থানরত সকল আত্নীয়ের যত্ন করে চলছে সে মেয়েটা কোথাও সামান্য একটু ভুল করে বসলে আপনি কীভাবে তাকে চট করে গালি দিতে পারেন, কীভাবে হাত পর্যন্ত তুলে দিতে পারেন, কীভাবে তার উপর জবরদস্তি খাটাতে পারেন, কীভাবে তার বাবার বাড়ি থেকে এটা-সেটা এনে দেওয়ার আবদার করে তাকে মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে রাখতে পারেন?
এভাবে যুলুম করে যালিমের ভূমিকায় যেতে আপনার কি একটুও বিবেকে বাঁধা দেয় না?

একটু গভীরভাবে ভাবুন তো, যে মেয়ে আপনার চরিত্র হেফাজত থেকে শুরু করে আপনার জন্য প্রতিনিয়ত এতো কিছু অনায়াসে করে যাচ্ছে সেই মেয়েটা কি আপনার কাছে একটুখানি ভালোবাসা পেতে পারে না, আপনার একটুখানি যত্ন পেতে পারে না? আপনার জন্য তার এতো কিছু করে যাওয়ার বিপরীতে তার সাথে খারাপ আচরণ করা, তাকে অবহেলা- অবজ্ঞা করাটা কি তার প্রতি আপনার কৃতজ্ঞতার নমুনা? যে আপনি যেকোনো বিষয়ে সবার কাছ থেকে সুবিচার পেতে চান সেই আপনি নিজেই কি আপনার স্ত্রীর সাথে সুবিচার করছেন?

যে স্ত্রী নিজের কথা চিন্তা না করে সবসময় আপনার জন্য ভালো খাবার টেবিলে এনে দিচ্ছে, আপনি খেয়েছেন কিনা তা পরম যত্নে খোঁজ নিচ্ছে, আপনার অসুস্থতার সময় সে অস্থির হয়ে যাচ্ছে, আড়াঁলে আপনার জন্য অশ্রু জড়িয়ে কায়মানোবাক্যে আল্লাহর নিকট দোয়া করে যাচ্ছে সে স্ত্রী নিজে ভালো মন্দ কিছু খেয়েছি কি-না, সে স্ত্রী নিজে ভালো আছে কি-না সেগুলো কি কখনো আপনি ভালোবাসার কন্ঠে জিজ্ঞেস করেছেন?
সে কিছু চায় কি-না কিংবা তার কিছু লাগবে কিনা তা কি কখনো আপনি হাসিমুখে দরদ নিয়ে জানতে চেয়েছেন?

স্বামীর বাড়িতে একজন স্ত্রীর জন্য সবচেয়ে বড়ো আপনজন হচ্ছে তার স্বামী। সেই স্বামীই যদি তাকে এড়িয়ে চলে, তার সাথে দুর্ব্যবহার করে, তাকে কেয়ার না করে তবে সেই স্ত্রীর কষ্টের কোনো অন্ত থাকে না। তখন তার চেয়ে বড়ো অসহায় আর কে হতে পারে, ভাবুন তো?
সে তো আপনার জন্যই তার সবাইকে ছেড়ে চলে আসলো। এখন আপনি স্বামীই যদি তাকে অপছন্দ করেন, তার প্রতি সহায় না হোন তবে তার আর যাওয়ার জায়গা কোথায় থাকলো, বলুন?
আপনি কি তার অসহায়ত্ব একটুও অনুভব করতে পারেন না?
নিজেকেই একটু অসহায় অবস্থায় রেখে কল্পনা করে দেখুন না যে, কেমন অনুভব হয় আপনার। তখন বুঝতে পারবেন অসহায়ত্ব কতো কষ্টের।

আপনি কি জানেন, স্ত্রীর সাথে হাসিমুখে কথা বলা, স্ত্রীর সাথে গল্প করা, স্ত্রীর কাছ থেকে ভালো পরামর্শ নেওয়া, স্ত্রীর জন্য কেনাকাটা করা, স্ত্রীকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া এমনকি স্ত্রীর সাথে সহবাস করাও সদকাহের অন্তর্ভুক্ত?
এতো সহজভাবে সদকার সওয়াব হাসিল করার সুযোগ থাকতে আপনি কেন তা মিস করবেন?
হে ভাই আমার! আপনি কি চাইবেন না, স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহার করে সদকাহের সওয়াব পাওয়ার মাধ্যমে আপনার আখিরাতের অ্যাকাউন্ট সমৃদ্ধ করতে?

নিশ্চয়ই চাইবেন। তাই আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে সবসময় ভালো ব্যবহার করুন। তাকে গৃহস্থালির কাজে সাহায্য করুন। তাকে সময় করে মাঝে মাঝে বেড়াতে নিয়ে যান। তার পছন্দ অনুযায়ী কোনো কিছু কিনে দিন। তার সাথে মজা করে হেসে হেসে কথা বলুন। তার রূপের ও কাজের প্রশংসা করুন। তাকে জানান, সে-ই আপনার রাণী, সে-ই আপনার উত্তম সঙ্গী। সর্বোপরি, তার প্রতি আপনার অকৃত্রিম ভালোবাসা প্রকাশ করুন। নিজেকে তার কাছে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করুন।

প্রসঙ্গত, নিজের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার বিষয়টি খেয়াল রাখবেন। শরীরের দুর্গন্ধের বিষয় খেয়াল রাখবেন। আপনি যেমন চান আপনার স্ত্রী আপনার জন্য সাজগুজ করুক, পরিপাটি হয়ে থাকুক, আপনার সাথে আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলুক ঠিক তেমনি সে-ও আপনার কাছে তেমনি প্রত্যাশা করে।

আপনার স্ত্রীর যৌক্তিক অপছন্দীয় জিনিস পরিহার করতে এবং তার বিভিন্ন সুপরামর্শ গ্রহণ করতে কখনো নিজের ইগোকে প্রশ্রয় দেবেন না। তার সাথে এমন এমন রোমান্টিক কথা বলুন যা তার মনকে চাঙ্গা করে দেয়, সবসময় মন ফ্রেশ রাখে। তার কুলে মাথা রেখে তেলাওয়াত করুন, খুনসুটি করুন।তাকে নিজ হাতে মুখে তুলে খাবার খাইয়ে দিন। একসাথে বসে গল্প করতে করতে খাবার খান। তাকে রেখে কখনো একা খেতে যাবেন না। ভুল হলে বিনয়ী কন্ঠে সরি বলুন। এছাড়া, কাছে থাকা সত্ত্বেও তাকে সবসময় মহব্বত নিয়ে জিজ্ঞেস করুন সে ভালো আছে কিনা, সে কিছু চায় কিনা। তাকে মাঝে মাঝে গিফট করুন, সাপ্রাইজ দিন। দেখবেন, সে আপনার কাছ থেকে কোনো সাপ্রাইজ পেয়ে কত্তো খুশি হয়। এগুলোই নবী জীবনের শিক্ষা।

বিশ্বাস করুন, এমন আচরণে একে অপরের প্রতি প্রকৃত মহব্বত সৃষ্টি হবে, সম্পর্ক আরো মজবুত হবে। এমন আচরণই আপনার অনুপস্থিতিতে তার দুচোখ বেয়ে অশ্রু ঝড়াবে। তখন মন থেকে আপনার জন্য তার দোয়া চলে আসবে। সে আল্লাহর কাছে অশ্রুসিক্ত নয়নে বলবে,
হে আমার রব! আজ আমার স্বামী আমার পাশে নেই। কর্মের কারণে আমাকে ছেড়ে উনাকে একটু দূরে যেতে হয়েছে। আজ নিজেকে বড়ো একা লাগছে। উনার অনুপস্থিতি আমার হৃদয়কে যেনো খান খান করে দিচ্ছে।

মাবুদ গো, তুমিই তো সাক্ষী আছো, আমার স্বামী আমাকে কতোটা ভালোবাসেন, কতোটা যত্নে আগলে রাখেন। আমাকে ছাড়া তিনি খেতেই বসতেন না। তিনি আমার সাথে সবসময় উত্তম ব্যবহার করতেন। এগুলো আমি কীভাবে ভুলবো গো মাবুদ। এসব স্মৃতির ভারে আজ যে আমি নুইয়ে পড়ছি, আজ যে আমি অচল।
ও আমার রব! আমি যতোই কষ্টে থাকি না কেন আমার স্বামীর যেনো একটুও কষ্ট না হয়, আমার স্বামীকে সর্বাবস্থায় ভালো রেখো। আমার স্বামী ভালো থাকলেই আমার ভালো থাকা হবে, আমার সুখে থাকা হবে ইয়া পরওয়ারদিগার।

এভাবেই আপনার স্ত্রী আপনার জন্য সিজদায় লুটে পড়ে আবেগ আপ্লূত হয়ে একদম মন থেকে দোয়া করবে যা আপনি যদি স্বচক্ষে দেখতে পেতেন তবেই বুঝতে পারতেন স্ত্রীকে ভালোবাসলে স্ত্রীর ভালোবাসার প্রতিদান কতো গভীর, কতো মধুরও বটে। তখন আপনার মাথা লজ্জায় এই ভেবে নিচু হয়ে আসতো, হায়! কীভাবে মানুষ তার স্ত্রীর সাথে এতো খারাপ আচরণ করতে পারে যেখানে তাদের সাথে একটুখানি ভালো আচরণ করলেই এতো সুন্দর প্রতিদান পাওয়া যায়।

অতএব, আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করুন।কক্ষণো ঘাড়ত্যাড়ামি করবেন না,এমন আচরণ করবেন না যে আচরণে আপনার স্ত্রী আপনার অনুপস্থিতিতে আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করে এটা বলে যে, হে আল্লাহ! একজন যালিমকে আমার কাছ থেকে দূর করেছো। বরং এমন আচরণ করুন যে আচরণ আপনার অনুপস্থিতি তাকে অশ্রুসিক্ত করে, আপনার কথা ভেবে ভেবে বালিশ ভিজিয়ে দেয় এবং সবসময় আপনাকে পাওয়ার জন্য তার মন ব্যকুল হয়ে থাকে।

আপনার স্ত্রীর যে জিনিস আপনার কাছে পছন্দ হয় না তাকে কাছে এনে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলুন। তাকে বিনীত কন্ঠে বলুন যে, ও আমার প্রিয়তমা! তোমার এই এই জিনিস আমার পছন্দ হয় না। তাই তুমি দয়া করে ওগুলো পরিত্যাগ করো। আমি চাই না, আমার প্রিয়তমা এমন কিছু করুন যা তার প্রতি আমার ভালোবাসা কমিয়ে দেয়। এভাবে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলুন। কোনোভাবে শুরুতেই রাগ করে কিছু বলতে যাবেন না। রাগ করে কিংবা গালিগালাজ করে কাউকে কিছু শিখানো যায় না। রাগ করে কিংবা লজ্জা দিয়ে ভালো কথা বললেও সে কথার আর কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। কাউকে কিছু শিখাতে হলে মহব্বত করে শিখাতে হয়, ভালোবাসা দিয়ে শোধরে দিতে হয়।

দোষ-গুন নিয়েই মানুষের জীবন। একসাথে চলতে গেলে মাঝে মাঝে একটু এদিক সেদিক হবেই। এটাই স্বাভাবিক। কারণ সবসময় জীবন একভাবে চলে না। ফলে চলার পথে কোনো ভুলের কারণে স্ত্রীর সাথে রাগ করে একেবারে মাথা গরম করে ফেলা যাবে না। আপনার স্ত্রী কোনো ভুল করে বসলে তাকে আদর করে ভালোবাসা দিয়ে সংশোধন করে দিন। বিশ্বাস করুন, তখন দেখবেন আপনার প্রতি তার শ্রদ্ধা আরও বহুগণ বেড়ে যাবে। সে আপনাকে ছাড়া এক মুহুর্তও কল্পনা করতে পারবে না। মেয়েদের মন এমনিতেই অনেক নরম। একটুখানি ভালোবাসা পেলে স্বামীর জন্য জান দিতেও পিছপা হবে না।

রাসূল (সাঃ) বলেছেন, গোটা দুনিয়াটাই হলো সম্পদ। আর দুনিয়ার মধ্যে নেক্কার স্ত্রীলোকের চেয়ে অধিক উত্তম কোনো সম্পদ নেই।
[সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং : ১৮৫৫]

স্বামীর অনুগত স্ত্রী তথা নেক্কার স্ত্রী পাওয়া যেমন সৌভাগ্যের বিষয় তেমনি নেক্কার স্ত্রীর কদর বুঝতে না পারা আরও দুর্ভাগ্যের বিষয়। সেই তো প্রকৃত অর্থে হতভাগা যে নেককার স্ত্রীর মতো অমূল্য নেয়ামতের কদর বুঝতে পারলো না।

অপরদিকে, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সে সর্বশ্রেষ্ঠ, যে তার স্ত্রী তথা পরিবারের নিকট উত্তম এবং আমার পরিবারের কাছে আমি উত্তম।
[সুনানে তিরমিজি, হাদীস নং : ৩৮৯৫]

এই হাদীসের আলোকে আপনার চরিত্রের সার্টিফিকেট আপনার স্ত্রীর কাছ থেকেই নিতে হবে। আপনি দুনিয়ার সবার কাছে ভালো বলে পরিচিতি হলেও আপনি প্রকৃতপক্ষে ভালো নন যদি না আপনি আপনার নেককার স্ত্রীর নিকট ভালো হিসেবে পরিচিত থাকেন। পক্ষন্তরে, দুনিয়ায় সবাই আপনাকে খারাপ বললেও আপনি খারাপ নন যদি আপনি আপনার নেককার স্ত্রীর নিকট উত্তম চরিত্রের মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পান। কাজেই স্ত্রীর সাথে এমন উত্তম আচরণ নিশ্চিত করুন যে আচরণে পৃথিবীর অন্য সবাই আপনাকে খারাপ বললেও আপনার স্ত্রী যেনো আপনাকে উত্তম চরিত্রের সার্টিফিকেট দেয়, আপনার স্ত্রী যেনো আপনাকে ছাড়া জান্নাত কল্পনাই না করে।

স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা - Islami Lecture
স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা – Islami Lecture

[২]

স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি কেয়ারিং হবে আর স্ত্রী হবে না তা তো হতে পারে না। উভয়পক্ষকেই ব্যালেন্স করে চলতে হবে। তবেই আল্লাহর রহমতে একটি সংসারে শান্তি নিশ্চিত হবে। প্রতিটি স্ত্রীকেও তার স্বামীর প্রতি সচেতন থাকতে হবে, যত্নশীল হতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে, স্বামী কীসে সন্তুষ্ট হয় আর কীসে অসন্তুষ্ট হয়। স্বামী হিসেবে সবসময় সে চাইবে তার স্ত্রী তাকে একটু বেশি কেয়ার করুক, তার জন্য সেজেগুজে বসে থাকুক, তার সাথেই বেশি রোমান্স করুক। তাই এসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।মাঝে মাঝে তার পছন্দের খাবার প্রস্তুত করে তাকে সাপ্রাইজ দিন। তাকে নিজ হাতে আদর করে হাসিমুখে খাইয়ে দিন। এসবে আপনার প্রতি তার মহব্বত বাড়বে। এছাড়া, মাঝে মাঝে বাইরে থেকে তার জন্য কিছু গিফট কিনে এনে সাপ্রাইজ দিন। সেটি যতো কম মূল্যেরই হোক না কেন। দেখবেন, আপনার স্বামী আপনার প্রতি কত্তো খুশি হয়। বিচক্ষণ স্ত্রীরা এভাবেই তাদের স্বামীদের প্রতি নিজেদের আকর্ষণ ধরে রাখে।

মনে রাখবেন, আপনার স্বামী চায়, আপনি যেন তাকেই বেশি গুরুত্ব দেন, আপনার ভালোবাসা যে তাকেই উজাড় করে দেন। ফলে আপনি স্বামীকে যথেষ্ট সময় দিচ্ছেন কিনা সেটা অতি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। মোবাইল, টেলিভিশন থেকে শুরু করে ফেইসবুক, ইউটিউব, টিকটক ইত্যাদিতে মগ্ন থাকা যেন কোনোভাবেই আপনার স্বামীকে সময় দেওয়ার বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায়। অন্যথায়, এগুলোই ধীরে ধীরে স্বামী-স্ত্রীর মনের দূরত্ব সৃষ্টি করবে। আর এগুলোই আপনার সংসারে অশান্তি হওয়ার অনেক বড়ো কারণ হতে পারে যা ঠেরই পাবেন না। মোট কথা, আপনি এমন কোনো কাজ করবেন না যা আপনার স্বামীর প্রতি আপনার অবহেলার চিত্র ফুটিয়ে তুলে, যে কাজ স্বামীকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে খারাপ কাজের দিকে টেলে দেয়।

স্বামীর সাধ্যের বাইরে কিছু চাইতে যাবেন না। খেয়াল রাখবেন, আপনার কোনো আবদার যেনো আপনার স্বামীকে পেরেশানির মধ্যে ফেলে না দেয়। আপনার পীড়াপীড়ি যেনো স্বামীকে হারাম উপার্জনের দিক ধাবিত না করে। আপনার কোনো কর্ম যেনো স্বামীর উপর থাকা অন্যের হক নষ্টের কারণ না হয়। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আজকের সমাজে অনেক স্ত্রী আছেন যারা তার স্বামীর হকদারকে তাদের প্রাপ্য হক পাওয়া থেকে বিভিন্ন ভাবে বঞ্চিত রাখেন।এভাবে স্বামীর জান্নাতকে ধীরে ধীরে কঠিন করে তুলেন। সত্যিকার অর্থে, স্বামীকে ভালোবাসতে পারা, স্বামীর কল্যাণ চাওয়া কোনো স্ত্রী এমন কাজ করতে পারে না।

স্বামীর অপছন্দনীয় জিনিস এড়িয়ে চলবেন। স্বামীর কোনো ভুল নজরে পড়লে রাগ না করে, তর্ক না করে সুন্দর ভাষায় বুঝিয়ে বলবেন। স্বামীর কোনো ভুল-ত্রুটি সংশোধনের ক্ষেত্রে সংশোধনের মূল মন্ত্র ভালোবাসাকেই কাজে লাগাবেন।একজন মানুষকে তার ভুল উপলব্ধি করানোর জন্য, তাকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য ভালোবাসা যে কতোটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে তা বলে বোঝানো যাবে না। সত্যিই, ভালোবাসার মধ্যে আল্লাহ অন্যরকম এক শক্তি দিয়ে রেখেছেন।

স্বামীর যথোপযুক্ত প্রশংসা করবেন। কখনো স্বামীর কোনো ভালো কাজের কিংবা ভালো গুণের প্রশংসা করতে কার্পণ্য করবেন না। স্বামীর প্রশংসা আপনার প্রতি তার ভালোবাসা আরো বাড়িয়ে দিবে। বলতে পারেন, স্বামীকে হালাল জাদু করার কিংবা স্বামীর হৃদয়ের গহীনে জায়গা করে নেওয়ার একটি কৌশল হচ্ছে তার উপযুক্ত প্রশংসা করা। অবশ্য, শুধু শুধু বাড়িয়ে বাড়িয়ে প্রশংসা করতে যাবেন না। যতোটুকু প্রশংসার দাবি রাখেন মন থেকে ততোটুকুই সুন্দর করে করলে হবে।

স্বামীকে ‘আপনি’ করে সম্বোধন করলে স্বামী নিজেকে আরো বেশি সম্মানিত বোধ করে যা স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধির জন্য খুবই সহায়ক। ‘আপনি’ সাউন্ডটাই অন্যরকম। এই সাউন্ডটির মধ্যে একসাথে সম্মান ও ভালোবাসা দুটোই রয়েছে যা প্রতিটি স্বামীই পেতে চায়। আর স্বামীর বেশি ভালোবাসা পাওয়ার জন্য বুদ্ধিমান স্ত্রীরা কখনোই এমন সুযোগকে হাতছাড়া করে না। স্বামীর ভালোবাসা পাওয়ার স্বার্থে তারা প্রতিটি সুযোগকে কাজ লাগানোর জন্য সবসময় তৎপর থাকে। এটাই হচ্ছে স্বামীর ভালোবাসা আদায়কারী স্ত্রীদের একটি স্পেশাল গুণ। এভাবে তারা স্বামীর কাছে নিজেকে প্রিয় করে তুলে, স্বামীর মনে শক্ত জায়গা দখল করে নেয়। তাদের এমন অসাধারণ কিছু গুণই স্বামীকে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া থেকে হেফাজত করে রাখে। কেননা এসব গুনই স্বামীর মনে ভীষণ দাগ কাটে যা কখনো কোনো ভুল পথে পা বাড়ানোর আগে তাকে প্রচন্ডভাবে ভাবায়।

যাইহোক, স্বামী যদি কখনো রাগ করে অন্যায় কিছু বলেও ফেলেন দয়া করে একটু ধৈর্য ধরে তার মাথা ঠান্ডা হওয়ার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। স্বামী স্থির হলে তাকে আদরমাখা কন্ঠে আপনার প্রতি তার অন্যায় আচরণের জন্য তার কাছেই বিচার চান। তাকে জিজ্ঞেস করুন যে, তার সাথে যদি আপনি তার মতো কোনো খারাপ আচরণ করতেন তবে কি তিনি তা সহ্য করতে পারতেন?
যদি না পারেন তবে কি তার উচিত নয় তার সহধর্মিণীর সাথে এমন আচরণ পরিহার করা যা তিনি নিজের বেলায় সহ্য করতে পারবেন না? দেখবেন, তিনি বিষয়টি উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন। এমনকি তার নিজের মধ্যে অনুতাপও কাজ করবে। অথচ ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়লে ঝামেলা এবং অশান্তি দুটোই সমান তালে বাড়তেই থাকবে।

স্বামীর সাথে চিৎকার চেঁচিয়ে কিংবা কর্কশ ভাষায় কথা বলবেন না। এতে সে খুব অপমান বোধ করবে। আর এই অপমান বোধ হওয়ার বিষয়টি আস্তে আস্তে আপনার কাছ থেকে তাকে দূরে সরিয়ে নিবে অর্থাৎ আপনার প্রতি অনাকর্ষণ সৃষ্টি করবে। আর এই সুযোগে ইবলিশ অন্যের প্রতি তার আকর্ষণ সৃষ্টিতে উঠেপড়ে লাগবে। ফলে এ ব্যাপারটিকে মোটেও হালকাভাবে নিবেন না। স্মার্ট স্ত্রীরা কী করে, জানেন? কথার মধ্যে কর্কশতা পরিহার করে বিনয়ের সাথে কথা বলে, আদরমাখা কন্ঠে স্বামীর মন জয় করে। আর আপনি নিশ্চয়ই স্মার্ট স্ত্রীই হতে চাইবেন।

স্বামীর মাথা গরমের সময় নিজের মাথাকেও গরম করে ফেলা যাবে না। কারণ স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে বিচ্ছেদের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য শয়তান সবসময় ওঁৎ পেতে থাকে। ফলে শয়তানকে একটু সুযোগ দিলেই সে তার সুযোগের সৎ ব্যবহার করেই ছাড়বে। হাদীসের ভাষ্যমতে, শয়তান নিজেকে তখনই সবচেয়ে সফল মনে করে যখন সে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেওয়ার মতো জঘন্য কোনো কাজ করে ফেলতে পারে। অতএব সাবধান, খুবই সাবধান।

সবসময় অল্পে তুষ্ট থাকবেন। স্বামী তার সাধ্যমতো যা এনে দিবে তাতেই সন্তুষ্ট থাকবেন এবং সন্তুষ্টি প্রকাশ করবেন। তাতে সে আপনার প্রতি অনেক খুশি হবে, আপনার প্রতি তার মহব্বত আরও বেড়ে যাবে। অল্পতেই আল্লাহ বারাকাহ দান করবেন। আল্লাহ বারাকাহ না দিলে আপনার সবকিছু থাকার পরও নিজেকে অভাবী মনে হবে, কোনো কিছুতেই তৃপ্তি পাওয়া যাবে না। দুনিয়ার কোনো কিছুই আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না। এখানে একটি পেলে আরেকটি পেতে মন চাইবে। কারণ দুনিয়া সন্তুষ্টির জায়গা নয়। আখিরাতই হচ্ছে সন্তুষ্টির জায়গা। ফলে সেখানে কীভাবে সন্তুষ্ট থাকা যায় সেটার জন্যই দুনিয়াকে কাজে লাগান। আখিরাতকে প্রাধান্য দিয়ে প্রতিটি কাজ করুন।

রাসূল (সাঃ) বলেছেন, দুনিয়াতে তুমি অল্পে তুষ্ট হও, তাহলে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন এবং অন্যের যা আছে তা পেতে চেয়ো না, তাহলে মানুষেরাও তোমাকে ভালোবাসবে।
[সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং : ৪১০২]

সুতরাং আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে অল্পে তুষ্ট থাকতে হবে। আল্লাহ যাকে ভালোবাসবেন তার আর কোনো দুশ্চিন্তা নেই, ভয় নেই। তার জন্যই তো আল্লাহ জান্নাতের সকল নাজ-নিয়ামত প্রস্তুত করে রেখেছেন।

কক্ষণো অন্যের জিনিসের সাথে নিজের স্বামীর জিনিসের তুলনা করবেন না। অন্যের স্বামীর সাথে নিজের স্বামীর পার্থক্য নিরূপণ করা ভালো কাজের অন্তর্ভুক্ত নয়। এগুলো খুবই জঘন্য কাজ। এমন কাজে স্বামীকে রীতিমতো ছোটো করা হয়, অসম্মান করা হয়। একজন সম্মানিতা স্ত্রী কখনোই তার স্বামীকে ছোটো করার মতো হীন কাজ করতে পারে না। তিনি সবর্দা স্বামীর মর্যাদার বিষয় খেয়াল করে চলবেন।

এছাড়া, স্বামীর নিকট কোনো পরনারীর সৌন্দর্য বর্ণনা করবেন না। এমনকি কোনো ছবিও দেখাবেন না। এতে আল্লাহর পর্দার বিধান লঙ্ঘন হওয়ার পাশাপাশি ঐ নারীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ভবিষ্যতে আপনার স্বামীর বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। ফলে স্বামী আল্লাহর যতো বড়ো ওলীই হোক না কেন এমন সম্ভাবনার দরজা কোনো অবস্থাতেই খোলা রাখা যাবে না। নতুবা পরকীয়ার মতো কঠিন এক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পুরো পরিবারটাই একসময় ধ্বংসের অতল গহব্বরে তলিয়ে যেতে পারে। প্রকৃত জ্ঞানী তো সে, যে আগে থেকেই এসব বিষয়ে নিজেকে সচেতনতার বাউন্ডারিতে রেখে চলে।

কখনো স্বামীর গোপন কোনো বিষয় কারো সাথে শেয়ার করবেন না। আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন,

নারীরা যেমন তোমাদের জন্য পোশাক স্বরুপ ঠিক তেমনি তোমরাও তাদের জন্য পোশাক স্বরুপ। 
[সূরা আল বাকারা, আয়াত নং : ১৮৭]

অর্থাৎ পোশাক যেমন মানুষের গোপন জিনিস ঢেকে রাখে ঠিক তেমনি স্বামী স্ত্রী নিজেদের গোপন বিষয়াদি এমনভাবে রক্ষা করে চলবেন যেনো তারা একজন আরেকজনের পোশাক।

আপনি যদি নিজেকে স্বামীর খেদমতে আত্মনিয়োগ করতে পারেন, স্বামীর যৌক্তিক কথা মতো চলতে পারেন, আপনার কাজ স্বামীকে সন্তুষ্ট করতে পারে তবে আপনার জন্য অনেক বড়ো এক সুসংবাদ রয়েছে, যে সুসংবাদ শুনলে আপনি আপনার স্বামীর প্রতি আরও বেশি কেয়ারিং হওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ পাবেন। জানেন, সে সুসংবাদটি কী?

রাসূল (সাঃ) প্রতিটি নারীকে সে পরম সুসংবাদ দিয়ে বলেছেন, কোনো নারী যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, রমজানের রোজা রাখে, নিজের লজ্জাস্থান রক্ষা করে (পর্দা করে) এবং স্বামীর আনুগত্য করে, তাহলে তাকে কিয়ামতের দিন বলা হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করো।’
[মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং : ১৬৬১]

এখন আপনি কি চাইবেন না, জান্নাতের যেকোনো দরজা দিয়ে প্রবেশ করার অ্যাকসেস লাভ করতে? নিশ্চয়ই চাইবেন। তাহলে আপনার স্বামীকে কখনোই অবহেলা করবেন না, স্বামীর সাথে কখনোই কষ্টদায়ক আচরণ করবেন না। দেখবেন, কিয়ামতের দিন আপনি সেইসব সৌভাগ্যবানদের একজন হবেন যারা আল্লাহর রহমতে জান্নাতের যেকোনো দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।

আজকের সমাজে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা না থাকার কারণেই দিন দিন পরকীয়া নামক সামাজিক ব্যাধি বেড়েই চলেছে। এই ব্যাধি পারিবারিক চরম অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এরকম অশান্তি থেকে বাঁচতে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের প্রতি ভালোবাসার কোনো বিকল্প নেই। স্বামী-স্ত্রী উভয়ই একে অপরকে সময় দিচ্ছেন, একে অপরের সুবিধা- অসুবিধা বুঝছেন,একে অপরকে সম্মান করছেন, সুন্দর ব্যবহার করছেন এমন বিষয় নিশ্চিত করতে হবে।তাতেই একটি পরিবার আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে সুখী হবে। ইং শা আল্লাহ!

লিখেছেন

Picture of রাকিব আলী

রাকিব আলী

পরকালীন তথা স্থায়ী জীবনের লক্ষ্যে নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করছি। নিজে হেদায়েতের ওপর অটল থাকার পাশাপাশি অন্যেদেরকেও হেদায়েতের দিকে আহবান করা তথা পথ হারাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনাই আমার লেখালেখির মূল উদ্দেশ্য।

All Posts

পরকালীন তথা স্থায়ী জীবনের লক্ষ্যে নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করছি। নিজে হেদায়েতের ওপর অটল থাকার পাশাপাশি অন্যেদেরকেও হেদায়েতের দিকে আহবান করা তথা পথ হারাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনাই আমার লেখালেখির মূল উদ্দেশ্য।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture