যদি কেউ সেহেরির পূর্বে হস্তমৈথুন করে ও নাপাক অবস্থায় সেহেরি খায় এবং সকালে গোসল করে ফজর সালাত কাজা করে তাহলে তার রোজা হবে কি?
নিম্নোক্ত অতি সংক্ষেপে কয়েকটি পয়েন্টে উক্ত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হল:
ক. হস্তমৈথুন করা আল্লাহর সীমারেখা লঙ্ঘনের শামিল ও কবিরা গুনাহ। (সূরা মুমিনূন এর ৫, ৬ ও ৭ নং আয়াতের আলোকে)।
আর এটি বাস্তব সত্য ও বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত বিষয় যে, এই বদ অভ্যাস মানুষের শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক দিয়ে মারাত্মক ক্ষতিকর। সুতরাং তা থেকে বিরত থাকার স্বার্থে বিয়ে করা এবং বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী একসাথে থাকা জরুরি। অনিবার্য কারণ বশত: বিয়ে করতে কিছুটা বিলম্ব হলে রোজা রাখতে হবে এবং আল্লাহর ভয় অন্তরে জাগ্রত রেখে এই গোপন গুনাহ ও বদভ্যাস থেকে আত্মসংবরণ করার চেষ্টা করতে হবে।
কিন্তু অজ্ঞতা, কু প্রবৃত্তির তাড়না বা শয়তানের প্ররোচনায় এমনটি করে থাকলে অনতিবিলম্বে আল্লাহর কাছে লজ্জিত অন্তরে তওবা করা এবং ভবিষ্যতে জেনে-বুঝে আর কখনো এমনটি না করার জন্য অঙ্গীকার করা জরুরি।
খ. হস্তমৈথুনের মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটালে শরীর নাপাক হয়। গোসল ছাড়া পাক হওয়া যায় না।
গ. শরীর নাপাক (গোসল ফরজ) অবস্থায় সেহেরি খেয়ে রোজা রাখা জায়েজ। তবে তার আগে ওজু করে নেয়া ভালো। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো কখনো জুনুবি (নাপাক) অবস্থায় সেহেরি খেয়ে রোজা রেখেছেন বলে সহিহ হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে।
যাহোক, গোসল ফরজ অবস্থায় সেহরি খাওয়ার পর রোজা রাখলে ইনশাআল্লাহ তা সহিহ হবে।
ঘ. শরীর নাপাক অবস্থায় সেহরি খাওয়া জায়েজ হলেও ফজর সালাতের পূর্বে গোসল করা অত:পর যথাসময়ে ফজর সালাত আদায় করা আবশ্যক।
ঙ. ফজরের পূর্বে গোসল না করা অত:পর যথাসময়ে ফজর সালাত আদায় না করা আল্লাহর বিধানকে অবহেলা করার শামিল ও কবিরা গুনাহ। শরিয়ত সম্মত কারণ ছাড়া সালাতকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদায় না করা কুফরি পর্যায়ের গুনাহ। এর জন্য আল্লাহর নিকট তওবা করতে হবে।
চ. এভাবে অলসতা ও অবহেলা বশত: ফজরের পূর্বে ফরজ গোসল ও ফজর সালাত থেকে বিরত থাকা অত:পর দিনের বেলায় গোসল করার পর ফজর সালাত কাজা করলে সম্ভাবনা আছে, মহান আল্লাহ তা কবুল করবেন না। তবে দায়িত্ব পালনার্থে কাজা করা আবশ্যক। অর্থাৎ সওয়াব না হলেও কাজা করা আবশ্যক। কেননা তা তার কাঁধে অর্পিত ফরজ (অবশ্যপালনীয়) কর্তব্য।
আল্লাহ আমাদেরকে তার নাফরমানি ও ক্রোধ থেকে হেফাজত করুন।
আমিন।