স্ক্রীন আসক্তিঃ এক নীরব ঘাতক

৫ মিনিট মাত্র! মেসেজটা চেক করে বেরিয়ে আসবো.. এমন চিন্তা করে ৫ মিনিটের জায়গা দখল করে নিছে ৫০ মিনিট কিংবা আরো বেশি সময়!
বিষয়টা নিয়ে নিজেও সেভাবে ভাবিনি। এইতো তিন চারদিন আগে, ফোনের সেটিংস ঠিক করতে গিয়ে দেখলাম একটা অপশন আমাকে জানাতে পারে আমি সেদিন ঠিক কতো সময়, কত ঘন্টা, কত মিনিট ফোনের পেছনে ব্যয় করেছি! কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে চেক করে যা দেখি তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না!

দশ ঘন্টা! পুরো দশ ঘন্টা দশ মিনিট আমি মোবাইলের পেছনে ব্যয় করেছি! ওয়াল্লাহি, আমার নামাজের সময় বাদে এতো দীর্ঘ সময় আমি অপচয় করেছি, শয়তান অপচয় করাতে সাহায্য করেছে ভেবেই শিউরে উঠেছি। দশ ঘন্টার এই বৃহৎ সময়ের

– ৬ ঘন্টা ৩০ মিনিট ফেসবুক
-৫৬ মিনিট টেলিগ্রাম
-৩৫ মিনিট নোটপ্যাড
-২৬মিনিট ইউটিউব

আর এভাবেই আরো কিছু এপে আমার সময় বন্দী হয়ে ছিলো! ২৪ ঘন্টার ১০ ঘন্টাই আমার জীবন থেকে ফোনের জন্য চলে যায়!

অথচ এই দশটা আমি চাইলে ভিন্ন আরো কাজে ব্যয় করতে পারতাম। হতে পারতো সে কাজ কোনো বইয়ের কয়েক পাতা বেশি পড়ে, হতে পারে ঘরের মানুষের মাঝে দাওয়াহ দিয়ে, হতে পারতো কুরআনের সাথে সময় কাটিয়ে কিংবা নফল নামাজে সিজদাহ করার মাধ্যমে।

অথচ শয়তানের সুক্ষ্ম ফাঁদে পা দিয়ে আমি দেদারসে সময় কাটাচ্ছি; যেন সময় কখনো বয়ে চলবে না। আমি যেভাবে খুশি সময়ের কম বেশি করতে পারবো। সময়ের এমন অপচয় আমাকে জানান দিয়েছিলো আমি কিভাবে আমার আখিরাত, আমার চিরস্থায়ী আবাস ধ্বংসের কাজে লেগে পরেছি!

স্ক্রীন আসক্তির আগাম এ বার্তা আমাকে জানিয়েছে, সামনের মহিমান্বিত রামাদান কখনোই আমার পক্ষে প্রোডাক্টিভ ভাবে কাটানো সম্ভব নয়। আর এই আসক্তি কাটানোর জন্য যা করতে হয়েছে তা হলো ফোনের এপ দিনের দীর্ঘ সময় অব্দি লক করে রাখা, কুরআনের সাথে কাটানো হোক তা অর্থ পড়ে কিংবা শুধু আয়াত পড়ে। আর সর্বোপরি দোয়া করতে হয়েছে, কারণ আরশের মালিক তৌফিক না দিলে কোনো ভাবেই এই ক্ষতি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয়।

কথাগুলো এজন্য বলিনি যে আমি কতোটা সফল তা দেখুন, আমি বলেছি কারণ শেষ যামানায় এসে আমাদের উচিত ছিলো কুরআনের সাথে লেগে থাকা। নিত্যনতুন ফিতনায় নিজেকে সামলে রাখা অথচ আমরা নিজেরা বিভিন্ন ফিতনায় নিজেকে লেলিয়ে দিয়ে জান্নাতের স্বপ্ন দেখছি! সারাদিন দিনরাত নিজেদের রজ্জু রবের সাথে রেখেও সাহাবিরা জাহান্নামের আশঙ্কা করতেন আর আমরা ৫ ওয়াক্ত ফরজ সালাত পড়েই জান্নাতের সুধা পেতে চাই। হাস্যকর বটে!

এরপরেও যদি কারো নফস বলে সে তার স্থানে ঠিক, তাহলে তাকে স্মরণ করাতে চাই আল্লাহ আযযা ওয়া’জালের সে আয়াত যেখানে তিনি বলেছেন,

” সময়ের শপথ! অবশ্যই মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে”
[সূরা আছর-১,২]

লিখেছেন

কারিশমা আনান

নারী আড়ালেই সুন্দর। যদি সে বইও প্রকাশ করে ফেলে তবুও আড়ালেই থাকুক।

জানানোর মতন, পরিচয় দেবার মতন কোনো পরিচয় নেই। আমি আল্লাহর এক সৃষ্টি, আমার নবী ﷺ এর উম্মতের একজন। এর বেশি পরিচয় নেই, দিতেও ইচ্ছুক না

লেখকের সকল পোষ্ট পেতে ঘুরে আসুন

নারী আড়ালেই সুন্দর। যদি সে বইও প্রকাশ করে ফেলে তবুও আড়ালেই থাকুক। জানানোর মতন, পরিচয় দেবার মতন কোনো পরিচয় নেই। আমি আল্লাহর এক সৃষ্টি, আমার নবী ﷺ এর উম্মতের একজন। এর বেশি পরিচয় নেই, দিতেও ইচ্ছুক না

Exit mobile version