বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে আল্লাহ পাকের “রহমত”

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
In the name of Allah the Most Beneficent and the Most Merciful.
এ আয়াতটি আল কোরআনের ১১৩টি সূরার প্রারম্ভে ব্যবহৃত হয়েছে। সূরা নামলের ৩০ নং আয়াতে আরো একবার এটি উল্লেখ আছে। সুমহান আল্লাহ তা’আলার দু’টি সিফাতী নাম (গুণবাচক নাম) পাশাপাশি যুক্ত হয়ে এ আয়াতে এসেছে। একটি হলো ‘রহমান‘ অপরটি ‘রহীম‘। নাম দু’টির মূল শব্দ ‘রহমত‘, যার সরল অর্থ দয়া, মেহেরবানী, করুণা, স্নেহ-প্রীতি, ভালোবাসা, অনুগ্রহ ইত্যাদি।

কোরআনে আল্লাহ পাকের যে সিফাতী নামটি সবচেয়ে বেশি উল্লিখিত হয়েছে তা হলো ‘রব’ এবং তারপরে ‘রহমানুর রহীম‘। পরম হিতৈষী আল্লাহ পাক তাঁর বান্দাদের কাছে যে গুণটি সবচেয়ে বেশি এবং ব্যাপকভাবে প্রকাশ করেছেন তা হলো ‘রহমত’। সুতরাং ‘রহমত’ শব্দটিকে ঘিরে এখন আমাদের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ অগ্রসর হবে।

বিশাল মহাবিশ্বের অসীম অন্তরীক্ষে অসংখ্য গ্রহ-নক্ষত্রের সমাহার ঘটেছে। এসব গ্রহ-নক্ষত্রের রয়েছে মহাকর্ষ শক্তি (Force of gravitation)। এ মহাকর্ষ শক্তির টানে এরা একে অপরের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করে। যদি আসতে পারে তাহলে একে অপরের সাথে প্রচণ্ড সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। করুণাময় আল্লাহ পাক মহাকর্ষ শক্তির বিরুদ্ধে আর একটি বিপরীত শক্তির সুন্দর ব্যবস্থা সক্রিয় করে রেখেছেন। তা হলো সম্প্রসারণ গতি (Force of expansion)। মহাবিশ্ব সুষম হারে অবিরত সম্প্রসারিত হওয়ার ফলে গ্রহ-নক্ষত্র তথা গ্যালাক্সিসমূহের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে চলেছে। তাই সংঘর্ষ ঘটতে পারে না।

সুতরাং মহাকর্ষ বলের বিপরীতে সম্প্রসারণ গতি হলো আল্লাহ পাকের রহমত।

পৃথিবীতে শক্তির মূল উৎস হলো সূর্য। সূর্য একটি জ্বলন্ত নক্ষত্র (Star)। এ নক্ষত্র থেকে অবিরাম বেরিয়ে আসে বিদ্যুৎ চুম্বকীয় বিকিরণ (Electromagnetic radiations), তেজস্ক্রিয় রশ্মি (Radioactive rays), অতি বেগুনী রশ্মি (Ultra-violet rays), এবং এক্স-রে (X-rays)। সূর্যের বাইরের পরিমণ্ডলে উত্থিত সৌরবায়ুর (Solar wind) মধ্যে থাকে আয়ন ও ইলেকট্রন কণা।

এরা প্রতি ঘন্টায় ১৪,৫০,০০০ কি.মি. বেগে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে আঘাত হানে। এক ধরনের নিউট্রন তারকা আছে যাদেরকে পালসেটিং স্টার বলা হয়। এ নিউট্রন তারকাগুলোও জীবনঘাতী এক্স-রে উৎপন্ন করে। সুদূর মহাশূন্য থেকে আগত মহাজাগতিক রশ্মি (Cosmic rays) আলোর বেগের কাছাকাছি বেগে এসে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেই বাতাসের কণাকে আঘাত করে। ফলে অসংখ্য নিউট্রন, ইলেকট্রন, প্রোটন, আলফা কণা, মিউমেসন, ফোটন, এক্স-রে ইত্যাদি সৃষ্টি হয়।

বিদ্যুৎ চুম্বকীয় বিকিরণ, অতিবেগুনী রশ্মি, তেজস্ক্রিয় রশ্মি, এক্স-রে, কসমিক-রে এবং সৌরবায়ুর তীব্রতা প্রমাণ করে যে, এরা পৃথিবীতে উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের জীবন রক্ষার পক্ষে অতিশয় মারাত্মক। তাই এসব মারাত্মক ক্ষতিকর রশ্মি ও অণুকণা থেকে পৃথিবীর বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্য মেহেরবান আল্লাহ বায়ুমণ্ডলে কতগুলো প্রতিরক্ষামূলক স্তর সৃষ্টি করে দিয়েছেন। একটি স্তরের নাম ট্রপোস্ফিয়ার (Troposphere)-এ স্তর অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড চুষে নিয়ে green house effect থেকে পৃথিবীবাসীকে রক্ষা করে।

এর পরের স্তরের নাম স্ট্রাটোস্ফিয়ার (Stratosphere) যার মধ্যে রয়েছে ৩০ কি.মি. পুরু ওজন (০১) স্তর। এ ওজন স্তরই অতি বেগুনী রশ্মি পরিশোষণ করে। আর একটি স্তরের নাম আইনোস্ফিয়ার (Inosphere)। সে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তেজস্কণাকে আয়ন কণায় রূপান্তরিত করে। আর একটি স্তরের নাম মেঘনেটোস্ফিয়ার (Magnetosphere), যা ইলেকট্রন ও প্রোটন কণা আটকে রাখে। পরম হিতৈষী আল্লাহ পাক দয়া করে ফিল্টারিং ব্যবস্থার মতো যদি বায়ুমণ্ডলে এসব স্তর তৈরি করে না দিতেন এবং যদি স্তরগুলোর সাহায্যে মারাত্মক বিকিরণ ও অণু কণাগুলো আটকানোর ব্যবস্থা না করতেন তাহলে সূর্য থেকে নির্গত ক্ষতিকর রশ্মি ও তেজস্কণাগুলো পৃথিবীতে পৌঁছে সবকিছুর ব্যাপক বিনাশ সাধন করতো। জীবনের উৎপত্তি ও বিকাশ এখানে কখনো সম্ভব হতো না।

মাতৃগর্ভে মানব শিশুর ভ্রূণ সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে তার জীবন-ইতিহাসের সূচনা ঘটে। গর্ভের যে অংশে ভ্রূণটি বিকাশ লাভ করে তা একটি থলের মতো অঙ্গ যাকে Uterus বলা হয়। পবিত্র কোরআনে এটাকে বলা হয়েছে ‘কারারীম মাকীন‘ বা সুরক্ষিত আধার। কারণ এ অঙ্গটি বিস্ময়কর কৌশলে তৈরি এবং খুবই সুরক্ষিত। এ খলি ভ্রূণকে এমনভাবে রক্ষা করে যাতে বাইরের কোনো আঘাত এবং ক্ষতিকারক জীবাণু তার ক্ষতি সাধন করতে না পারে। এখানে ভ্রূণটি কতগুলো পর্যায় অতিক্রম করে পূর্ণ মানব শিশুতে পরিণত হয়।

প্রথমে এটি জোঁক সদৃশ (Leech-like substance) রক্তপিন্ডের মতো রূপ ধারণ করে। এরপর মাংসপিন্ডে রূপান্তরিত হয়। এরপর অস্থি বা কঙ্কাল (Skeleton) কাঠামো গড়ে ওঠে। এরপর কঙ্কালের চারিদিকে মাংসপেশী আবৃত হয়। এ রূপান্তরগুলো ঘটে ব্যাপক জটিল ক্রিয়া কর্মের মধ্যে দিয়ে এবং পুরো প্রক্রিয়াটি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় আল্লাহ পাকের সর্বোত্তম রহমতের উপস্থিতিতে।

শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর দয়াময় আল্লাহ পাক মাতৃস্তনে প্রবাহিত করেন পুষ্টিকর পানীয় দুধ। মাতৃদুগ্ধ পান করে শিশু তর তর করে বেড়ে ওঠে। আর কোনো খাদ্য প্রয়োজন হয় না। কারণ দুধের মধ্যে ৬ প্রকার খাদ্য-উপাদান থাকে। যথা- শর্করা (Carbohydrate), স্নেহ পদার্থ (Protein), চর্বি (Fat), ভিটামিন (Vitamin), খনিজ লবণ (Mineral salt) এবং পানি (Water)।

জন্মলাভ করেই শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে বিনামূল্যে আলো, বাতাস, আদ্রতা, উষ্ণতা লাভ করে যা না হলে পৃথিবীতে বেঁচে থাকা তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়তো। সাধারণত জীবনকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বায়ু ও পানি অপরিহার্য। বায়ুতে সুষম হারে মিশে আছে অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জলীয় বাষ্প। এসব বায়বীয় পদার্থ ব্যতীত জীবনের উৎপত্তি ও বিকাশ এক রকম অসম্ভব। পরম হিতৈষী আল্লাহ তা’আলার রহমতের প্রমাণ এখানে খুবই স্পষ্ট।

এরপর আল্লাহ তা’আলার রহমতে দৃষ্টান্ত হলো মানুষের কণ্ঠে কথা বলার শক্তি দান। মানুষের কথা বলার শক্তি না থাকলে শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের ধারা স্তবির হয়ে যেত। মানুষ কখনো আবিষ্কার করতে পারতো না। একটা বাকশক্তিহীন-বোবা লোকের জীবন যেমন প্রাণহীন আড়ষ্টতায় পর্যবসিত হয়, তেমনিভাবে মানব জাতি পশু-পাখির মতোই বেঁচে থাকতো।

সূরা আর রহমানের শুরুতে আল্লাহ পাক বলেছেন:
“পরম হিতৈষী আল্লাহ পাক পরম করুণাময় যিনি কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন, মানুষ সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে কথা বলার কৌশলগত শিক্ষা দান করেছেন”।

কথা বলার সহায়ক দুটি পদ্ধতিগত বৈশিষ্ট্য মহান আল্লাহ মানুষের কন্ঠে সম্পৃক্ত করে দিয়েছেন। একটি হলো Phonation পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে স্বর যন্ত্রের স্বর পর্দার (Vocal-cord) সাহায্যে শব্দ তরঙ্গ ও কম্পন সৃষ্টি হয়। অপরটি Articulation। এ পদ্ধতির মাধ্যমে ঠোঁট, জিহ্বা, মুখবিবর, মাংসপেশী, তালু প্রভৃতি অঙ্গের সঞ্চারণ দ্বারা শব্দ তৈরী হয় এবং তা ডেলিভারী হয়। প্রয়োজনীয় কথা তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট অঙ্গ থেকে স্নায়ু তন্ত্রর মাধ্যমে সংকেত প্রেরিত হয় মস্তিষ্কের একটি কেন্দ্রে, যার নাম ‘Speech centre’।

উপরন্তু মস্তিষ্কের ‘ব্রোকার জোন’ কথা বলার সাথে জড়িত অনসমূহের নড়াচড়া (Movement) নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

দয়াময় আল্লাহ পাক মানবদেহে প্রতিরক্ষামূলক অসংখ্য কৌশলী গ্রন্থি (Gland) তৈরি করে নিয়েছেন, যা না হলে রোগজীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার হতো। চোখের অশ্রু গ্রন্থি (Lacrimal gland) থেকে যে অশ্রু নির্গত হয় তাতে আছে লাইসোজাইম (Lysozyme) যা চোখকে ধুয়ে দেয় এবং ভাইরাসের আক্রমণ থেকে চোখকে রক্ষা করে।

লালা গ্রন্থি ও পাকস্থলী থেকে নির্গত হাইড্রোক্লোরিক এসিড খাদ্যের সঙ্গে রোগজীবাণু প্রবেশ করলে তা আক্রমণ করে ধ্বংস করে দেয়। রক্তের স্বেত কণিকা (White blood corpuscle) জীবাণুর সাথে যুদ্ধ করে তাদের মেরে ফেলে। এছাড়া যকৃত, প্লীহা, লসিকা গ্রন্থি, টনসিল, তাইমাস, অস্থিমজ্জা ইত্যাদি গ্রন্থিগুলো জীবাণুর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকে।

মানব দেহের অভ্যন্তরে যেসব শাখা অঙ্গ আছে তাদের মধ্যে হৃৎপিণ্ডের কাজ হলো রক্তকে সংকোচন ও প্রসারণ প্রক্রিয়ায় দেহের সর্বত্র সঞ্চারিত করা। ফুসফুসের কাজ হলো নিঃশ্বাসের সাহায্যে অক্সিজেন গ্রহণ করা এবং প্রশ্বাসের সাহায্যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করা। এভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের সাহায্যে ফুসফুস রক্তকে পরিশোধিত করে। পরিপাক যন্ত্র হজমের কাজ সমাধা করে এবং পুষ্টিকর উপাদানগুলো ধারণ করে। লিভার রাসায়নিক বস্তুকে বিষমুক্ত করে। কিডনীদ্বয় রক্তকে পরিশ্রুত করে। মস্তিষ্ক দেহের সকল কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং দেহের সকল আভ্যন্তরীণ অঙ্গ ও গ্রন্থির জটিল কর্মকাণ্ডের উপর আল্লাহ পাকের রহমত অত্যন্ত সক্রিয়।

করুণাময় আল্লাহ তাঁর রহমতের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন আর একটি অপূর্ব সৃষ্টির মধ্যে, তা হলো পানি (H₂O)। উদ্ভিদ ও প্রাণী জগতের জীবন রক্ষার জন্য এবং রাসায়নিক কর্মকাণ্ডের জন্য পানির প্রয়োজনীয়তা কতবেশি গুরুত্বপূর্ণ এখন তা আর কাউকে বুঝিয়ে বলতে হয় না। প্রজ্ঞাময় আল্লাহ পাক পানিকে তিনটি রূপ দান করেছেন-
কঠিন,
তরল ও
বায়বীয়।

পানিই একমাত্র বস্তু যা O’C তাপমাত্রায় জমে কঠিন বরফে পরিণত হয়। কিন্তু জমাট বরফ পানির চেয়ে হালকা, বরফ যদি পানির চেয়ে হালকা না হতো তাহলে তা পানিতে ডুবে গিয়ে তলায় জমা হতো এবং ক্রমান্বয়ে তা স্তরে স্তরে উপরে ওঠে আসতো। এমন অবস্থা ঘটলে হিমেল আবহাওয়া অঞ্চলে হৃদ, নদী ও সাগরের পানির নিম্নাঞ্চল জমে কঠিন বরফে পরিণত হতো। ফলে সকল জলজ প্রাণী জমাট বাধা বরফে আটকা পড়ে সমূলে বিনাশ হয়ে যেত।

এটা সুমহান আল্লাহ তা’আলায় অসীম করুণার বহিঃপ্রকাশ, যিনি জমাট বাধা বরফকে পানির চেয়ে হালকা করেছেন এবং তাকে পানিতে ভেসে থাকার গুণ দান করেছেন। অপরপক্ষে ১০০°℃ ভাপমাত্রায় পানি বাষ্পে পরিণত হয়। অতি উষ্ণ প্রদেশে জলীয় কণা যখন নদ-নদী, সাগর-মহাসাগর থেকে বাষ্পাকারে উপরে ওঠে তখন সেটা চারপাশের বায়ুস্তরের চেয়ে হালকা হয়ে যায়।

ফলে জলীয় বাষ্প উৎপন্ন হয়েই উপরের দিকে ওঠতে থাকে এবং মেঘের ঘন আস্তরণ সৃষ্টি করে। করুণাময় আল্লাহ পাক জলকণাসহ মেঘমালাকে শুদ্ধ এলাকায় প্রবাহিত করেন এবং বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে সেই এলাকাকে সিক্ত করেন। এভাবে ভূ-পৃষ্ঠ জীবনী-শক্তি লাভ করে এবং ক্ষেতের ফসল ও উদ্ভিদের জৈবিক বিকাশ তরান্বিত হয়।

করুণাময় আল্লাহ পাক মানব জাতি ও অন্যান্য প্রাণীর জীবন ধারণের জন্য বায়ুমণ্ডল ও মাটি সৃষ্টি করেছেন। জীবন রক্ষার জন্য অতি প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী প্রদান করেছেন। জীব ও জড় জগতের সম্প্রসারণ ঘটাবার জন্য জোড়া সৃষ্টি করেছেন। সমস্ত সৃষ্টির উপর মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। তাঁর বিশাল সৃষ্টিজগৎ অবলোকন করার জন্য মানুষকে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি জ্ঞান দান করেছেন। এভাবে আমাদের চতুর্দিকে আল্লাহ পাকের অসংখ্য রহমত ছড়িয়ে আছে। পরম হিতৈষী আল্লাহ পাক পরম করুণাময়।

সংগ্রহীত এবং লিখেছেন
মুহাম্মদ আবু তালেব
বইঃ- সাইন্স ফ্রম আল-কোরআন

Exit mobile version