সারারাত কীভাবে ইবাদতে কাটাবেন?

যারা রাত জেগে ইবাদত আমলে, ইলমী সাধনায় অভ্যস্ত, তাদের জন্য এ পোস্ট নয়।
এটা আমার মত রাতজাগরণে অনভ্যস্তদের জন্য।
সন্ধ্যা থেকে ১০/১১টা পর্যন্ত সাধারণত সবাই জাগন থাকে। কিন্তু এটাকে ইবাদত ও আমলে কাজে লাগায়, এমন মানুষের সংখ্যা তুলনামূক কম। কাজেই প্রথমেই এটাকে কাজে লাগাতে চেষ্টা করুন। পরেরটা পরে।

তারপরের সময়গুলোকে ভাগ করুন। আপ‌নি কী কী কাজ করবেন, সেটা ঠিক করুন। মনে করুন আপ‌নি এ কাজগুলো করবেন :

নামায+তেলাওয়াত+যি‌কির+দুআমুনাজাত+পড়াশোনা+লেখালে‌খি ইত্যাদি। যাদের দ্বীনি পড়াশোনা বা লেখালে‌খির কাজ নেই, তারা সাংসারিক কোনো কাজ নিতে পারেন, যা নিঃশব্দে সম্পন্ন করা যায়। যেমন হাতের সেলাই বা ঘর গোছানো ইত্যাদি।

এবার আপ‌নি কিছুক্ষণ নামায পড়তে থাকুন। কয়েক রাকাআত পড়ার পর তেলাওয়াতে বসুন। কিছুক্ষণ পর আবার নামাযে দাঁড়ান। তারপর কিছু যি‌কির-আযকার করুন। তারপর কিছুক্ষণ দুআ-মুনাজাতে কাটান। তারপর আবার নামাযে দাঁড়াতে পারেন অথবা কিছুক্ষণ পড়াশোনা করতে পারেন অথবা সাংসা‌রিক কাজ করতে পারেন।
এভাবে কর্ম বদলের মাধ্যমে অলসতা ও ঘুমকে দূরে রাখতে পারেন। এক-দু’বার অযুও করে আসতে পারেন। দাঁ‌ড়িয়ে নামায পড়ে ক্লান্ত হয়ে গেলে বসে পড়তে পারেন। তবে এতে সওয়াব অর্ধেক হবে।

যারা নিয়‌মিত অধ্যায়ন, মুতালাআ, লেখালে‌খি ও গবেষণার কাজ করেন, তারা কিছুক্ষণ লেখালে‌খি বা ইলমী কাজ করলেন। পাশেই মুসাল্লা পেতে রাখবেন। কতক্ষণ পর পর আপ‌নি নামাযে দাঁড়াতে পারেন। ইচ্ছে করলে দুআ মুনাজাতেও। এভাবে লেখকদের রাত আধ্যাত্মিক ও ইলমী কাজের স‌ম্মিলনে নূরানী হয়ে ওঠতে পারে। আর লেখাজোখা হয়ে ওঠতে পারে রুহা‌নিয়াতে আরও বে‌শি প্রাণবন্ত।

তা‌লিবে ইলমগণও রাত জাগতে চাইলে এ প্রক্রিয়া ফলো করতে পারেন। পড়ার জায়গার পাশেই মুসাল্লা পেতে রাখুন।

এ ধারা‌টি আপ‌নি যেমন শবে কদর, শবে বরা‌তের জাগরণে অনুসরণ করতে পারেন, তেম‌নি সারাবছরও প্রয়োজনে অনুসরণ করতে পারেন।

তবে খুববে‌শি রাতজাগরণ স্বা‌স্থ্যের পক্ষে ক্ষ‌তিকর। অ‌ভিজ্ঞতায় দেখা‌ গেছে, রাতজেগে পড়ালেখার চাইতে ফজরের পরে কাজে অ‌ধিক বরকত হয়। এজন্য ফজীলতের রাতগু‌লো ছাড়া অন্যসময়ে খুব বে‌শি রাত জেগে কাজ করার চাইতে ফজরের পর কাজ করা উত্তম। রাতের ঘুম সকা‌লে না গিয়ে রাতের ঘুম রাতেই যান, সকালে কাজ করুন। অবশ্যই কাজ ও অবস্থাভেদে রাত জাগা আবশ্যক হয়ে পড়ে। বই প্রকা‌শের শেষের দিকে লেখকদের রাত জাগতেই হয়। নতুবা সময়মত বই প্রসব হয় না।
এ লেখাটাও লিখ‌ছি ২১রামাযান রাতের কোনো এক ফাঁকে। আপনিও চেষ্টা করতে পারেন।
وفقكم الله تعالي.

লিখেছেন

সাইফুদ্দীন গাযী

‌শিক্ষকতা, দাওয়াহ, লেখালে‌খি, সস্পাদনা, খুতবা প্রদান

All Posts

‌শিক্ষকতা, দাওয়াহ, লেখালে‌খি, সস্পাদনা, খুতবা প্রদান

Exit mobile version