নফল অথবা ফরজ রোজা রাখার উদ্দেশ্যে যদি রাত ১২/১টার দিকে সেহরি খেয়ে শুয়ে পড়ি আর ভোর রাতে খেতে না উঠি তাহলে কি রোজা হবে?
যদি রোজা রাখার নিয়তে রাত ১২টা/১টার দিকে খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েন আর ভোর রাতে কিছু না খান তাহলেও রোজা শুদ্ধ হবে ইনশাআল্লাহ। তবে ইচ্ছাকৃত ভাবে এমনটি না করাই ভালো।
সবচেয়ে উত্তম হল, ভোর রাতে উঠে এক ঢোক পানি হলেও পান করা। (মূলত: ভোর রাতের খাবারকে সেহরি বা সাহুর বলা হয়। রাতের প্রথমাংশ বা মধ্যরাতের খাবারকে নয়)
হাদিসে সেহরি খেতে যথেষ্টে উৎসাহিত করা হয়েছে। কারণ তাতে বরকত আছে। যেমন:
রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«السَّحُورُ أَكْلُهُ بَرَكَةٌ فَلَا تَدَعُوهُ وَلَوْ أَنْ يَجْرَعَ أَحَدُكُمْ جُرْعَةً مِنْ مَاءٍ فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى الْمُتَسَحِّرِينَ»
“সেহরি খাওয়া বরকতপূর্ণ। সুতরাং তা পরিত্যাগ করো না যদিও এক ঢোক পানি পান করে হয়। কারণ আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ সাহরি ভক্ষণকারীর ওপর রহমতের দুআ করেন।”
[আহমদ: ৩/১২। সহিহুত তারগিব, হাসান লি গাইরিহ, হা/১০৭০]
◍ তিনি আরও বলেন:
ﺗَﺴَﺤَّﺮُﻭْﺍ ﻭُﻟَﻮْ ﺑِﺠُﺮْﻋَﺔٍ ﻣِﻦْ ﻣَﺎﺀٍ
“সেহরি গ্রহণ যদিও এক ঢোক পানি দিয়ে হয়।”
(সহিহ ইবনে হিব্বান]
◍ তিনি আরও বলেন,
البَرَكَةُ فِي ثَلَاثَةٍ؛ فِي الجَمَاعَةِ وَالثَّرِيدِ وَالسُّحُورِ
“তিনটি বস্তুতে বরকত রয়েছে: জামাআতে (সংঘবদ্ধ জীবন) সারীদ (গোস্তের ঝোল বা গোস্তের সাথে রুটির সংমিশ্রণে বিশেষ এক প্রকার আরবিয় খাদ্য) এবং সেহরিতে’।
(সহীহুল জামে হা/২৮৮২)
◍ অন্য বর্ণনায় এসেছে:
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﺟَﻌَﻞَ ﺍﻟْﺒَﺮَﻛَﺔَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﺤُﻮْﺭِ
“‘নিশ্চয় আল্লাহ সেহরিতে রবকত দিয়েছেন।”
(সিলসিলা সহিহাহ হা/১২৯১)
এ বিষয়ে আরও হাদিস রয়েছে।
তাই সুন্নত পালনার্থে পেটে ক্ষুধা না থাকলেও ভোররাতে সেহরির নিয়তে এক গ্লাস পানি, কয়েকটি খেজুর, ফল, বিস্কুট ইত্যাদি যা কিছু সম্ভব হয় ভক্ষণ করা উচিত।
আল্লাহ তওফিক দান করুন। আমীন
আল্লাহু আলাম
(দয়া করে, কেউ সেহরি আর সাহরি নিয়ে বিতর্ক করতে আসবেন না। বাংলা ভাষা-সাহিত্যে প্রচলিত ও সর্বসাধারণের নিকট সুপরিচিত শব্দ ‘সেহরি’ ব্যবহার করাকেই অধিক সঠিক মনে করি)