কাওয়ালী গানের আয়োজন এবং সেটি শোনার বিধান কী

কাওয়ালি গান শোনা কি হারাম নাকি জায়েজ।
দেখুন কাওয়ালি গান এর কথামালা যদি খারাপ না হয়। অর্থাৎ সেটার যে কথাগুলো আছে, সেখানে যদি এমন কিছু না থাকে, যেটাতে শিরক আছে বা হারাম কিছু আছে। তাহলে সেটা খালি গলায় গাইলে সেটা জায়েজ আছে। শোনাও জায়েজ আছে, গাওয়াও জায়েজ আছে।
যদি খালি গলায় গাওয়ার পাশাপাশি তার সাথে বাদ্যযন্ত্র যুক্ত হয়, তাহলে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য কোন আলেম নেই যার ফতোয়া আছে এটা হালাল হওয়ার।
অর্থাৎ সবাই প্রায় একমত যে বাদ্যযন্ত্র যখন যুক্ত হবে, তখন গানের কথা ভালো থাকলেও সেটা কি হয়ে যাবে হারাম হয়ে যাবে।

একজন মুসলিম হিসেবে হালাল হারাম মেইনটেইন করা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা ঐচ্ছিিক কোন বিষয় না। মনে রাখবেন শরীয়ত যে বিষয়গুলো হারাম করেছে, কিন্তু আমাদের বুঝে আসে না কেন হারাম করেছে। আপনি নিশ্চিত থাকবেন, যে অকাট্যভাবে শরীয়তের কোরআন হাদিসের আলোকে যেটি হারাম হওয়া প্রমাণিত হয়েছে, সেই বিষয়ে অবশ্যই শরীয়তের কোন হিকমা বা রহস্য আছে, অর্থাৎ আল্লাহ সুবহানাতালা নিষেধ করেছেন আর কোন কারণ নাই লজিক নাই এটা হতে পারে না, যেমন গানের কথায় যদি আপনি বলেন, গান এর সাথে যখন বাদ্যযন্ত্রের সংমিশ্রণ হয় মানুষের মনের ভিতরে যে এক ধরনের ভাব তৈরি হয়, এর ফলশ্রুতিতে মানুষ শয়তানের সাথে কানেক্টেড হয়।

শয়তান দ্বারা খুব বেশি প্রভাবিত হতে থাকে, শয়তান আমাদের দৈনন্দিন জীবনে, আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে, আমাদের উঠাবসায় নানাভাবে আমাদেরকে প্রভাবিত করে, তো এইটা থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে এবং সতর্ক থাকতে হবে।

তো শরীয়ত সেজন্য আমাদেরকে বাদ্যযন্ত্রের ব্যাপারে খুবই সতর্ক করেছে, সূরা লোকমানের ছয় নম্বর আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন

وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا ۚ أُولَـٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِينٌ
একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং উহাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।1

লাহুয়াল হাদিস কেনার ব্যাপারে যে বর্চনা করেছেন সেখানে মূলত হাদিস বলতে এই জাতীয় গান যেগুলোতে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার আছে এবং অশ্লীলতা শিরকপূর্ণ কথা আছে সেগুলোর কথা মিন করা হয়েছে।
এই আয়াতের ব্যাখ্যা করলেই আপনি বিশ্ববিখ্যাত মুফাসসিরগণ সাহাবায়ে কেরাম এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্নেহধন্য ব্যক্তিবর্গের যে তাফসীর রয়েছে, বড় বড় বিশ্ববিখ্যাত যে তাফসীর রয়েছে, সবগুলো দেখলেই আপনি দেখতে পাবেন যে এখানে গান এবং যন্ত্রকে বোঝানো হয়েছে।

অতএব খালি গলায় কাওয়ালি গাইলেন, সেটার কথা মানার ভিতরে কোন শিরক আপত্তিকর শরীয়া বিরোধী কথা থাকলো না সেটা জায়েজ আছে।
আর যদি শরীয়া বিরোধী কোন কথা থাকে অনেক সময় দেখা যায় এত কাওয়ালিতে এমন এমন কথা থাকে যে কথাগুলো সবসময় না কোন কোন গানের মধ্যে, যে কথাগুলো আসলে শরীয়ার আলোকে সঠিক নয় গর্হিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মর্যাদা দিতে গিয়ে আল্লাহর পর্যায়ে নিয়ে গেল, তাহলে এটা শিরক হয়ে গেল।

তো এইরকম যদি কিছু থাকে তাহলে সেটা খালি গলায় গাওয়া জায়েজ নাই, আর দ্বিতীয়ত হলো যে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার থাকতে পারবে না, এই দুই শর্তে সেটা জায়েজ আছে, কাওয়ালি হইলে সেটাকে আমরা অনেক ইসলামিক মনে করি গলদ করি এবং সেটাকে ইসলামিক মনে করি এটা ইসলামিক না, পরিষ্কারভাবে আমাদের ধারণা থাকতে হবে।

  1. সূরা লোকমান:০৬ ↩︎
Exit mobile version