পূর্বপুরুষদের ঈমানী দৃঢ়তা

একবার নবীজি ﷺ কাবাঘরের ছায়ায় একটি চাদর জড়িয়ে বসে ছিলেন।সাহাবায়ে কেরামগণ রাহমাতুল লিল আলামিনের কাছে এসে কাফিরদের অত্যাচারের ব্যাপারে অভিযোগ করলেন।তারা বললেন,”আপনি কি আমাদের জন্য সাহায্য চাইবেন না? আপনি কি আমাদের জন্য দুআ করবেন না?”

নবীজি ﷺ বললেন,

“তোমাদের পূর্বযুগে মুমিনদেরকে ধরে এনে গর্তে নিক্ষেপ করা হতো। এরপর করাত এনে তার মাথায় রাখা হতো এবং তাকে দ্বিখণ্ডিত করা হতো। লোহার শলাকা দিয়ে তার হাড় থেকে মাংস আলাদা করা হতো; কিন্তু এরপরও তারা দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিত না। আল্লাহর কসম, এ দীন এমন পূর্ণতা পাবে যে, একজন আরোহী সানআ থেকে হাযরামাউত পর্যন্ত ভ্রমণ করবে, অথচ আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করবে না; কেবল মেষপালের ব্যাপারে নেকড়ের ভয় করবে; কিন্তু তোমরা অতিশয় তাড়াহুড়ো করছো।”
[সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৬১২]

গর্তে নিক্ষেপ করা কিংবা করাত দিয়ে মাথা দ্বিখণ্ডিত করা কিংবা লোহার শলাকা দিয়ে অত্যাচার করা- প্রতিটি শাস্তির পরিসীমা চোখ বুঁজে ভাবতে থাকুন। গুয়ান্তানামো বে কিংবা গুলাগের বর্ণনা যাদের জানা আছে তারা ভয়াবহতা বেশ ভালোভাবেই হয়তো অনুধাবন করতে পারবেন।

এবার ভাবুন যেখানে একটা কাটাছেঁড়া হলেই কিংবা একটু আঘাত পেলেই আমরা হাশফাশ করি সেখানে আমাদের পূর্ববর্তী মুমিনরা কোনোকিছুই ভয় করতো না কেবল মাত্র আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা ছাড়া। সবকিছু সয়ে নিতে রাজি কিন্তু আপোস করতে রাজি না। সেখানে কেবলমাত্র কিছু ক্ষমতা সম্পদ কিংবা পরিচয়-প্রতিপত্তির জন্য এখন নিজের সমাজ, সমাজের শিক্ষা ব্যবস্থা, নিজের ভবিষ্যত উম্মাহ বিক্রি করে দিতে একটা বার‌ও ভাবছি না আমরা! হোক না শতো অত্যাচার কিংবা বহিঃশক্তির প্রতাপ তবে কেন হীনমন্যের মতো নিজের দ্বীন বিক্রি করে দিতে উদ্যত হবো আমরা!

কাফেরদের বৈশিষ্ট্য‌ই এটা যে তারা মুমিনের সাথে শত্রুতা পোষণ করবে।ক্রুসেড আগেও ছিলো,এখনো আছে এবং তা থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না ইমাম মাহদী এর চূড়ান্ত রূপ দিতে নেতৃত্ব দিবেন। এই বাস্তবতা মরুর বুকে জেরুজালেমে কিংবা পাহাড়ের বুকে কালো পাগড়িধারীর দল বেশ ভালোভাবেই জানে তাই তারা আক্ষেপ থাকা সত্ত্বেও ক্রুসেড থামিয়ে দেয়নি এবং অভিযোগ ও করেনি। কিন্তু শান্তিতে তিন বেলা খেয়ে,পড়ে, ঘুমিয়ে সম্পদের কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়া আমরা একটা ছোট্ট বিপদ ঘটলেই আল্লাহর কাছে অভিযোগ করি। তাওয়াক্কুল না করে কেবল অভিযোগ করলেই কি দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে!

লিখেছেন

John Doe

জেনারেল লাইনে পড়াশোনার ব্যস্ততায় দ্বীনি জ্ঞানার্জনের সুযোগ খুবই কম পেয়েছি তারপরও অনলাইন ভিত্তিক দাওয়াহ এবং ইসলামী ব‌ইয়ের সুবাদে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের সুযোগ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
সেই জ্ঞানকে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ইসলামের সৌন্দর্যকে উম্মাহর সামনে ফুটিয়ে তোলার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আমার এই টুকটাক লেখালেখি।

All Posts

জেনারেল লাইনে পড়াশোনার ব্যস্ততায় দ্বীনি জ্ঞানার্জনের সুযোগ খুবই কম পেয়েছি তারপরও অনলাইন ভিত্তিক দাওয়াহ এবং ইসলামী ব‌ইয়ের সুবাদে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের সুযোগ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
সেই জ্ঞানকে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ইসলামের সৌন্দর্যকে উম্মাহর সামনে ফুটিয়ে তোলার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আমার এই টুকটাক লেখালেখি।

Exit mobile version