প্রবাসীরা কি তাদের ফিতরা দেশে দিতে পারবে
প্রবাসীরা কি তাদের ফিতরা দেশে দিতে পারবে? দিলে কীভাবে দিবে?
প্রবাসীরা যদি প্রবাসে দুস্থ ও অসহায় মানুষ পায় তাহলে সেখানে ফিতরা দিবে। এটাই উত্তম। একজন মানুষ যেখানে বসবাস করে এবং আয়-উপার্জন করে সেখানকার গরিব-অসহায় মানুষরা ফিতরা পাওয়ার বেশি হকদার। কিন্তু যদি মনে হয়, সে দেশের চেয়ে নিজ দেশে বা অন্য কোথাও সঙ্কট ও অভাব-অনটন বেশি তাহলে সেখানে ফিতরা প্রেরণ করা যেতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রবাসে যে পরিমাণ ফিতরা দিতে হতো অন্যত্র দিলে সে পরিমাণটা ঠিক রাখা উত্তম। (তবে তা যেন আড়াই বা তিন কেজির কম না হয়)।
উদাহরণ: যে সব বাংলাদেশী মধ্যপ্রাচ্য বা ইউরোপ-আমেরিকায় বসবাস করে তারা সে দেশে সাধারণত: যে মানের চাল খেয়ে থাকে সে মানের আড়াই বা তিন কেজি পরিমাণ চালের মূল্য বাংলাদেশে প্রেরণ করে সেখানে তার পরিবার অথবা অন্য বিশ্বস্ত কাউকে দায়িত্ব দিবে যেন, উক্ত অর্থ সমপরিমাণ চাল ক্রয় করে এলাকার গরিব-অসহায় মানুষের মাঝে বণ্টন করে দেয়।
এ ক্ষেত্রে বিদেশের তুলনায় বাংলাদেশে চালের দাম তুলনা মূলক কম হওয়ায় চালের পরিমাণে হয়ত কিছু বেশি হবে। এতে গরিবরা একটু বেশি উপকৃত হবে আশা করা যায়। যদিও দেশের হিসেবে তিন কেজি দিলেও আদায় হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য যে, হাদিসে যেহেতু খাদ্য দ্রব্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তাই সুন্নত অনুসরণ করতে চাইলে খাদ্য দ্রব্য (নিজ এলাকার প্রধান খাদ্যদ্রব্য যেমন: চাল) দিতে হবে। একান্ত অপরিহার্য পরিস্থিতি না হলে মূল্য বা টাকা দ্বারা ফিতরা দেয়া সুন্নত পরিপন্থী।
সৌদি আরবের স্থায়ীয় ফতোয়া বোর্ড বলেছে:
“مقدار زكاة الفطر صاع من تمر أو شعير أو زبيب أو أقط أو طعام..، وتعطى فقراء المسلمين في بلد مخرجها، ويجوز نقلها إلى فقراء بلد أخرى أهلها أشد حاجة…، وليس قدرها تابعا للتضخم المالي، بل حدها
الشرع بصاع” فتاوى اللجنة الدائمة/ م1″ (9/ 369).
“জাকাতুল ফিতরের পরিমাণ হল, এক সা খেজুর, যব, কিশমিশ, পনির অথবা খাদ্য। ফিতরা দাতার দেশের দরিদ্রদেরকে তা দিতে হবে। তবে যে দেশে অভাব আরও বেশি প্রকট সে দেশের অভাবী মানুষের উদ্দেশ্যে তা স্থানান্তরিত করা জায়েজ আছে।” [ফাতাওয়া লাজনাহ দায়েমা (সৌদি ফতোয়া বোর্ড) ৯/৩৬৯]
আল্লাহু আলাম।