ওজু বিনষ্টের কারণ সমূহ
নিম্নে ওজু বিনষ্টের কারণ সমূহ সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো:
১. যে কোন অবস্থায় পেশাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বের হয়ে যাওয়া। যেমন: পেশাব, মজি (পাতলা তরল পদার্থ বা কামরস), ওদি (পেশাবের পর নির্গত অপেক্ষাকৃত গাঢ় তরল পদার্থ) ইত্যাদি।
মজি বলা হয়, পাতলা আঠালো জাতীয় পানিকে যা স্ত্রী শৃঙ্গারে বা সঙ্গমের কথা স্মরণ করলে বা ইচ্ছা করলে লিঙ্গ থেকে নির্গত হয়।
আলি রা. বলেন, আমার খুব বেশি মজি (পাতলা তরল পদার্থ বা কামরস) নির্গত হত। তখন আমি মিকদাদ রা. কে অনুরোধ করলাম, এ সম্পর্কিত বিধান নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করতে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেন, «فيه الوضوء» “এতে ওজু করা আবশ্যক।” [বুখারী ও মুসলিম]
আবু দাউদের বর্ণনায় বলা হয়েছে: তিনি বলেছেন, فليَغسلْ ذكَرَه وأُنثييه “সে যেন স্বীয় লিঙ্গ এবং অণ্ডকোষ ধৌত করে নেয়।”
ওদী বলা হয়, পেশাবের পর নির্গত গাঢ় সাদা পানিকে। এটা নাপাক।
আয়েশা রা. বলেন, “ওদী হচ্ছে যা পেশাবের পর নির্গত হয়। এজন্য লিঙ্গ এবং অণ্ডকোষ ধৌত করবে এবং ওজু করবে; গোসল করবে না।” [ইবনুল মুনযির]
২. ঘুমে অচেতন হলে অথবা অন্য কোন কারণে বেহুশ হলে। [আহমদ, নাসাঈ, তিরমিযী। তিনি হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।]
বসা অবস্থার নিদ্রা ওজু ভঙ্গ করে না। [মুসলিম]
৩. কোন পর্দা ব্যতীত গুপ্তাঙ্গ স্পর্শ করা। শিশুর গুপ্তাঙ্গ স্পর্শ করলেও ওজু নষ্ট হয়। [আহমদ, নাসাঈ, তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ]
৪. উটের মাংস ভক্ষণ করা। [মুসলিম]
(তৃতীয় ও চতুর্থ বিষয়ে আলেমদের মাঝে দ্বিমত থাকলেও অধিক বিশুদ্ধ মতে এসব কারণে অজু ভেঙ্গে যায়)।
প্রকাশ থাকে যে, মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়া, মুখ ভরে বমি করা, শরীরের কোন স্থান থেকে রক্ত প্রবাহিত হওয়া, স্ত্রীকে চুম্বন করা ইত্যাদি কারণে ওজু বিনষ্ট হয় না। (যদিও কিছু আলেম এগুলোকেও ওজু ভঙ্গের কারণ বলেছেন)। কেননা এ সকল ক্ষেত্রে ওজু বিনষ্ট হওয়ার পক্ষে বিশুদ্ধ কোন হাদিস নেই। আল্লাহু আলাম।
উৎস: ফিকহ, লেভেল-১
অনুবাদক: শাইখ আব্দুল্লাহ আল কাফী রাহ.