নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাচাতো ভাই উবাইদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর শখ ছিলো মানুষকে খাওয়ানো। তিনি ছিলেন একজন ব্যবসায়ী এবং উদার প্রকৃতির। প্রতিদিন একটি উট জবাই করে মানুষকে খাওয়াতেন।
সেই সময় প্রতিদিন একটি উট জবাই করে খাওয়ানো ছিলো বিশাল ব্যাপার।
তাঁর বড়ো ভাই আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু কোনো কারণে তাঁকে নিষেধ করলেন। তাঁকে বললেন, প্রতিদিন এমনটা করার দরকার নেই।
বড়ো ভাইয়ের নিষেধাজ্ঞা না মেনে তিনি এবার প্রতিদিন দুটো করে উট জবাই শুরু করলেন। আগে করতেন একটি, এখন দুটো। দুটো উট জবাই করে মানুষকে খাওয়াতেন উবাইদুল্লাহ ইবনে আব্বাস।
তার সম্পর্কে সাহাবী-তাবেয়ীরা বলতেন- ‘উবাইদুল্লাহ ফুরাত নদীর ঢেউ‘।
তিনি যখন দান করতেন, বাছবিচার করতেন না। এমনভাবে দান করতেন, গ্রহীতা অবাক হয়ে যেতো।
একবার একটি সফরে একজন বেদুইনের বাড়িতে তিনি ও তার দাস আশ্রয় নেন। বেদুঈনটি তাদেরকে আপ্যায়ন করায় তার একমাত্র ছাগল জবাই করে। এই ছাগলের দুধ খেয়ে সেই বেদুঈনের দুই মেয়ে জীবনযাপন করতো।
অতিথিদেরকে নিজেদের শেষ সম্বল দিয়ে আপ্যায়ন করা হলে বেদুঈনের স্ত্রী তার ওপর রাগ করে।
উবাইদুল্লাহ আড়াল থেকে এসব শুনেন। তিনি তার দাসকে জিজ্ঞেস করলেন, “আমাদের কাছে কতো দিনার আছে?” দাস জানালো ৫০০ দিনার। আমাদের সময়ের অন্তত ৫০ লক্ষ টাকা!
উবাইদুল্লাহ বললেন, “সবগুলো তাকে দিয়ে দাও।”
তার দাস অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“মাত্র ৫ দিরহামের ছাগলের জন্য আমরা ৫০০ দিনার দেবো!?“
উবাইদুল্লাহ বললেন,
“সে আমাদের চেয়েও উদার। আমরা আমাদের সম্পদ থেকে সামান্য অংশ তাকে দিচ্ছি। আর সে তো নিজের স্ত্রী-সন্তানের জীবনের ওপর অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের প্রতি উদারতা দেখিয়েছে!”
তথ্যসূত্র: উসদুল গাবা: ৩/৪২০