Q/A

অমুসলিমদের অর্থ ও সম্পদ আত্মসাৎ করা কি জায়েজ

কোন বিধর্মীর টাকা আত্মসাৎ করলে আখিরাতে মুমিনকে কি আটকানো বা পাক্রাও হতে হবে?
যেমন, কেউ যদি হিন্দুর কাছ থেকে টাকা ধার নেয় কিন্তু পরে টাকা ফেরত না দেয় বা টাকা ফেরত দিতে গিয়ে দেখা যায় যে হিন্দু ব্যক্তি মারা গেছে এবং তার কোন উত্তরাধিকারী নেই, তাহলে কি করা উচিত, দয়া করে দলীল সহ উত্তর দিন।

ইসলামে সবচেয়ে বড় পাপ এর মধ্যে বা গুনাহগুলির মধ্যে মারাত্মক গুনাহ বা পাপ হল চুরি। আল্লাহ তায়ালা চুরির শাস্তি হিসেবে হাত কেটে ফেলার বিধান দিয়েছেন। সেখানে যার সম্পত্তি চুরি হচ্ছে তার মর্যাদা বা অবস্থান বিবেচ্য বিষয় নয় বা অপ্রাসঙ্গিক। নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ, মুসলিম-অমুসলিম সবার ক্ষেত্রে বিষয়টি খোলা রেখেছেন। তাই হিন্দু বা অন্য কোনো ধর্মের ব্যক্তির সম্পদ আত্মসাৎ করা জায়েজ নয়।

সুনানে আবু দাউদে একটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যার একটি অংশ হল, সাহাবী মুগীরা ইবনে শোবা রা. অন্ধকার যুগে (ইসলাম গ্রহণের আগে) তিনি কিছু লোককে সঙ্গী হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন, তারপর তিনি তাদের হত্যা করেছিলেন এবং তাদের সম্পদ গ্রাস করে নিয়েছিলেন।
অতঃপর তিনি নবী (ﷺ) এর নিকট হাজির হয়ে ইসলাম কবুল করেন। তখন নবী (ﷺ) বলেনঃ আমি তো তোমার ইসলাম গ্রহণ করাকে কবুল করলাম, কিন্তু ধন–সম্পদ যা ধোঁকাবাজীর দ্বারা অর্জন করেছ, এতে আমাদের কোন প্রয়োজন নেই।
[সুনান আবূ দাউদঃ ২৭৬৫]

এখন প্রশ্ন আসে খুব সহজে যদি পাওনাদারকে বা তার কোন আত্মীয় স্বজনকে খুজে না পাওয়া গেলে করণীয়

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার ভাই-এর ওপর যুলুম করেছে সে যেন তার কাছ থেকে ক্ষমা নিয়ে নেয়, তার ভাই-এর পক্ষে তার নিকট হতে পুণ্য কেটে নেয়ার আগেই। কারণ সেখানে কোন দ্বীনার বা দিরহাম পাওয়া যাবে না। তার কাছে যদি পুণ্য না থাকে তবে তার (মাজলুম) ভাই-এর গোনাহ্ এনে তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।
[সহীহ বুখারীঃ৬৫৩৪]

তাই আপনাকে যা করতে হবে তা হল আপনার পাওনাদার বা তার উত্তরাধিকারী বা নিকটাত্মীয়দের খুঁজে বের করা। লম্বা সময় খুজতে হবে এবং যদি তাদের কাউকে খুঁজে না পাওয়ার সন্দেহ দূর না হওয়া পর্যন্ত সম্ভাব্য সবকিছু করা। এরপর যদি কাউকে না পাওয়া যায়, তাহলে পাওনাদারের পক্ষ থেকে যে পরিমান ঋণ আপনি নিয়েছেন সেই পরিমাণ সম্পদ গরীব-দুঃখীকে দান করবেন। আর মনে মনে এই নিয়ত রাখুন যে, আল্লাহ তায়ালা এই দানের সওয়াব পাওনাদারকে পৌঁছে দেন। উক্ত ঋণের টাকা আপনার গরিব আত্মীয় বা স্বজনদের দান করতে কোন সমস্যা নেই। আর যদি আপনি সাদাকাহ পাওয়ার যোগ্য হন তাহলে আপনি নিজেই টাকা ব্যবহার করতে পারেন। তবে পরবরীতে মালিক এসে দাবি করলে তাকে উক্ত ঋণের টাকা ফেরত দিতে হবে।
(ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি- ২/২৯৯-৩০০, আল-মুহিতে বুরহানি- ৮/৮৬৬, ফাতাওয়ায়ে সিরাজিয়া- ২৪১)

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture