মাই বডি মাই চয়েজ

নারীবাদীদের বানানো শ্লোগান পোশাকের স্বাধীনতা “মাই বডি মাই চয়েজ” অনুযায়ী যেকোন নারী কি পরিধান করবে সেটা তার একান্ত ইচ্ছা, যার শরীর সে সিদ্ধান্ত নেবে সে কিসে কমফোর্ট ফিল করে। এই এক‌ই সুত্র অনুযায়ী একজন মাদকাসক্ত ব্যাক্তিও দাবী করতে পারে ‘আমার শরীর আমি যা খুশি তাই করবো’। ইস্কর্টরা দাবি করতে পারে আমার শরীর, যখন খুশি যাকে খুশি তাকে বিক্রি করবো। এই ফালতু যুক্তি মেনে নেওয়া মানে তো সকল অশ্লীলতাকে স্বীকৃতি দেয়া।

স্বাধীনতা মানে কি! স্বাধীনতা মানে এটা নয় যে যা খুশি তাই করা যাবে। আপনি তো স্বাধীন দেশের নাগরিক তাই বলে আপনি কি রাষ্ট্র বিরোধী কাজে লিপ্ত হতে পারবেন? আপনি কি আইন অমান্য করতে পারবেন? শৃঙ্খলা নষ্ট করতে পারবেন?

পারবেন না, কারণ স্বাধীনতা মানে যা খুশি তাই করা নয়। নির্দিষ্ট সীমারেখার ভেতরে অবস্থান করেই স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারবেন, অন্যথায় শাস্তি পেতে হবে। পোশাকের স্বাধীনতা মানে নারীবাদীরা যা খুশি তাই করতে চায়, উলঙ্গপনাকে সভ্যতা হিসেবে দাড় করাতে চায়।

আমরা মুসলিম, আমরা শালীনতাকে ধারণ করি, উলঙ্গপনাকে ঘৃণা করি। আপনার বাসায়, প্রাইভেট প্রোপার্টিতে যা খুশি পরিধান করেন আমাদের আপত্তি নেই, কিন্তু জনসম্মুখে অশ্লীল পোশাক পরিধান করবেন, প্রচার করবেন আবার অর্ধ‌উলঙ্গ, উলঙ্গপনা কে সভ্যতা দাড় করাতে যা খুশি করে বেড়াবেন। আমরা সেটা মেনে নিতে পারিনা, আমরাও স্বাধীন দেশের নাগরিক।

এই তথাকথিত প্রগতিশীল নারীবাদীরা দ্বিমুখী আচরণকারী। এরা মূলত ইসলাম বিদ্বেষী।

সমুদ্রের তীরে আ্যমেরিকানরা ন্যুড হয়ে রোদ্রস্নান করে তা নিয়েও প্রগতিশীলদের কাউকে কোন দিন‌ টু শব্দটি পর্যন্ত করতে শুনিনি এবং শুনবো বলে মনে হয় না‌। বিকিনি পড়ে রোদ্রস্নান করা আ্যমেরিকানদের পোশাকের স্বাধীনতা কিন্তু মুসলিম নারী স্বেচ্ছায় হিজাব করতে পারবে না। তাদের কাছে হিজাব করা পোশাকের স্বাধীনতা নয়।

আফ্রিকান ট্রিবালরা সারাজীবন ধরে উলঙ্গ হয়ে আছে তা নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা নাই। তাদেরকে লজ্জা শেখানোর ব্যাপারে প্রগতিশীলরা কোনদিন এগিয়ে আসে না।

বিকিনি পড়া স্বাধীনতা কিন্তু স্বেচ্ছায় যেকোন নারী হিজাব করবে সেটা স্বাধীনতা নয়‌। সারাজীবন ট্রিবালরা উলঙ্গ হয়ে আছে সেটা কালচার হিসেবে মেনে নেয়া যায়, মুসলিম নারী ধর্মীয় কালচার হিসেবেও যদি বোরখা পড়ে সেটা মেনে নেয়া যায় না। ধর্মীয় আদেশ হিসেবে খ্রিস্টানরাও হিজাব করে সে নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই, নানরা বোরখার মতোই দেখতে “হ্যাভিট” নামে একটা পোশাক পরে কখনো কাউকে এ নিয়ে কিছু বলতে শুনেছেন? শোনেন নি।

ন্যুড হয়ে সমুদ্রপাড়ে‌ শুয়ে থাকলেও আ্যামেরিকানরা সবচেয়ে সভ্য জাতি। ওরা ন্যুড হলেও কারো কোন ক্ষতি হয় না। ওগুলো তাদের কালচার, পোশাকের স্বাধীনতা। কিন্তু মুসলিম নারী স্বেচ্ছায় বোরখা পড়লে প্রগতিশীলদের বিরাট ক্ষতি হয়ে যায়।

অশ্লীলতা, উলঙ্গপনা কখনো স্বাধীনতা হতে পারেনা। আমরা শালীনতা চাই। শালীনতা বজায় রেখে যেকোন ধর্মাবলম্বী যা খুশি পরতে পারে, আপত্তি নেই। যে কেউ যেকোন ধর্মীয় ড্রেসকোড মেনে পোশাক পরিধান করলে নারীবাদীদের কেন যেন জ্বলে যায়। অর্ধনগ্ন পোশাক পরিধান ভিন দেশীয় সংস্কৃতিতে শালীনতা হতে পারে, আমার দেশের নয়। এ দেশ মুসলিম প্রধান দেশ, সকল ধর্ম সহিষ্ণু দেশ। এদেশের সংস্কৃতি ধর্মীয় সংস্কৃতি‌। বিজাতীয় অর্ধ‌উলঙ্গপনা কখনোই এ দেশের সংস্কৃতি নয়, এদেশের মানুষের দৃষ্টিকোণে শালীনতা নয়।

স্বাধীনতার নামে উলঙ্গপনাকে আমরা ঘৃণা করি, আমরা বিশ্বাস করি শালীনতায়। উলঙ্গপনা যদি সভ্যতা হতো, তবে তো বনের পশুরাই হতো সবচেয়ে বেশি সভ্য।

লিখেছেন

মোরশেদুল আলম মেহরাব

গল্প, উপন্যাসের ভীড়ে হারিয়ে প্রশ্নের বেড়াজালে ঈমান খোয়ানোর আগ মুহুর্তে সত্যের সন্ধান পাওয়া জ্ঞান পিপাসু যুবক।
মেডিকেল সায়েন্সের পড়া ক, খ, গ টুকুই আগলে রেখে বাকিটা জীবন তুলে ধরতে চান ইসলামের সৌন্দর্য্য।

All Posts

গল্প, উপন্যাসের ভীড়ে হারিয়ে প্রশ্নের বেড়াজালে ঈমান খোয়ানোর আগ মুহুর্তে সত্যের সন্ধান পাওয়া জ্ঞান পিপাসু যুবক।
মেডিকেল সায়েন্সের পড়া ক, খ, গ টুকুই আগলে রেখে বাকিটা জীবন তুলে ধরতে চান ইসলামের সৌন্দর্য্য।

Exit mobile version