Muhammad Abdul Malek Life History

মুহাম্মাদ আবদুল মালেক

জন্ম

মুহাম্মাদ আবদুল মালেক (জন্ম: ২৯ আগস্ট ১৯৬৯) একজন বাংলাদেশি হাদিস বিশেষজ্ঞ ও হানাফী ফকিহ এবং বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব। হাদিসশাস্ত্র সহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি আলেমদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় আসন লাভ করেন। তিনি আব্দুর রশীদ নোমানীর কাছে তিন বছর উচ্চতর হাদিসশাস্ত্র এবং তাকি উসমানির কাছে দুই বছর ফিকহশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে সৌদি আরবে আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহর সাথে আড়াই বছর হাদিসশাস্ত্রে গবেষণামূলক কাজ করেন। ১৯৯৮ সালে তার রচিত আল মাদখাল ইলা উলুমিল হাদিসিশ শরিফ প্রকাশিত হয়, যা বিভিন্ন দেশে পাঠ্যবই হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার সহপ্রতিষ্ঠাতা, বর্তমানে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাসচিব ও উচ্চতর হাদিস বিভাগের প্রধান। এই প্রতিষ্ঠানের মুখপত্র হিসেবে ২০০৫ সালে তার তত্ত্বাবধানে মাসিক আল কাউসার প্রকাশিত হয়। ২০১২ সালে তিনি বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশনের সদস্য মনোনীত হন। এছাড়াও তিনি ভারতের ইসলামি ফিকহ একাডেমির সদস্য।

জীবনী

মুহাম্মাদ আবদুল মালেক ১৯৬৯ সালের ২৯ আগস্ট কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার সারাশপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তার পিতা শামসুল হক একজন আলেম ছিলেন। পরিবারে কুরআন ও প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের পর তিনি চাঁদপুরের শাহরাস্তি খেড়ীহর কওমি মাদ্রাসায় মিশকাত জামাত পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি পাকিস্তানের জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়ায় দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন। এরপর তিনি এই মাদ্রাসার উচ্চতর হাদিস বিভাগে ভর্তি হয়ে তিন বছর আব্দুর রশীদ নোমানীর তত্ত্বাবধানে হাদিস অধ্যয়ন করেন। ১৯৯২ সালে তিনি দারুল উলুম করাচিতে ভর্তি হয়ে দুই বছর তাকি উসমানির তত্ত্বাবধানে উচ্চতর ফিকহ ও ফতোয়া অধ্যয়ন করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি সৌদি আরব গমন করে আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহর তত্ত্বাবধানে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত প্রায় আড়াই বছর হাদিসশাস্ত্রসহ অন্যান্য গবেষণামূলক কাজের গবেষণা সহযোগী হিসেবে কাজ করেন।

কর্ম জীবন

সাহিত্যকর্ম

২০০৫ সালে তার তত্ত্বাবধানে মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার মুখপত্র হিসেবে মাসিক আলকাউসার প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকায় হাদিসশাস্ত্রের নবউদ্ভাবিত বিভ্রান্তির নিরসনমূলক রচনাসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে তার লেখা প্রকাশিত হয়। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে:

প্রকাশিত

অপ্রকাশিত

স্বীকৃতি

সৌদি আরবে মুহাম্মাদ আবদুল মালেকের শিক্ষক আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ তার পিতার কাছে লিখিত একটি চিঠিতে বলেন, “তিনি (মুহাম্মাদ আবদুল মালেক) দাবি করেন যে, আমার কাছ থেকে তিনি উপকৃত হয়েছেন অথচ আমি দেখি তার থেকে আমিই অনেক উপকৃত হয়েছি৷ সে তার অনেক শিক্ষকদের থেকেও এগিয়ে যাবে, সে সকল শিক্ষকদের মধ্যে আমি হবো প্রথমজন৷”
তার আরেক শিক্ষক আব্দুর রশীদ নোমানী তার লিখিত আল মাদখাল ইলা উলুমিল হাদিসিশ শরিফ দেখে বলেন, “তোমার আল মাদখাল দেখে আমি অনেক আনন্দিত!” একটি চিঠি দিয়ে তিনি ফিকহ পড়ার জন্য তাকে তাকি উসমানির হাতে তুলে দেন৷ চিঠিতে তিনি লিখেন,
“এই ছাত্র কী পরিমাণ যোগ্যতাসম্পন্ন, কত গভীর ইলমের অধিকারী, তাকে পড়ালেই তা বুঝতে পারবেন৷”
তার শিক্ষক তাকি উসমানি তার লিখিত আল মাদখাল দেখে অভিভূত হয়ে তাকে আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহর নিকট পাঠান৷

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আমীর শাহ আহমদ শফী বলেন, “মাওলানা আবদুল মালেক সাহেব সমকালীন একাধিক প্রখ্যাত আলেম ও হাদিস বিশেষজ্ঞদের সুদীর্ঘ সান্নিধ্য লাভে ধন্য হয়েছেন এবং হাদিসশাস্ত্রে তাঁর একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়ে আলেমদের নিকট সমাদৃত হয়েছে।”
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব নূর হুসাইন কাসেমী বলেন, “আমাদের দেশের গৌরব, আমাদের জন্য সাআদাত মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক দামাত বারাকাতুহুমুল আলিয়া৷ তার অস্তিত্ব নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য সাআদাত-সৌভাগ্য এবং বহুত বড় বরকতের বিষয়।”
হাকিম মুহাম্মদ আখতারের শিষ্য আবদুল মতিন বিন হুসাইন বলেন,
“আমরা কেন মাওলানা আবদুল মালেকের ভক্ত? তাঁর কাছে ইলম আছে। এরকম মানুষ আমরা দেখিনি। সারাবিশ্বের আলেম ওলামা তার কদর করেন।”

Exit mobile version