আমাদের সমাজে প্রায় সকল মসজিদ এ বাচ্চা শিশুদের প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। এটা কেন ভাই, বাচ্চা শিশুদের মসজিদ এ ডুকার ব্যাপারে রাসুল صَلَّى ٱللَّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ত কখনও নিষেধ করে নি। আপনি কেন করছেন??
রাসুল(স) খুতবা দেওয়ার সময় তার নাতি হাসান ও হুসাইন (রা) আসলে তিনি খুতবা বন্ধ রেখে তাদেরকে জড়িয়ে ধরে আদর করতেন,কোলে তুলে নিয়ে চুম্বন করতেন আর বলতেন খুতবা শেষ করা পর্যন্ত আমি ধৈর্য ধরতে পারবো না তাই খুতবা বন্ধ করেই এদের কাছে চলে আসছি। ( নাসাই শরীফ)
মুহাম্মদ صَلَّى ٱللَّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ নিজে বাচ্চাদের কুলে রেখে নামাজ পড়িয়েছেন আর আমাদের কতিপয় বুজুর্গ মুসল্লিরা মসজিদেই তাদের উপস্থিতি সহ্য করতে পারেন না।
রাসুল صَلَّى ٱللَّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ বলেছেন – ” যে ছোটদের আদরযত্ন করে না বড়দের সম্মান করে না সে আমার উম্মতের দলভুক্ত নয়।
( আবুদাউদ,তিরমিজী, মুসনাদে আহম্মদ)
বাচ্চারা মসজিদে দুষ্টুমি করবে এটাই স্বাভাবিক।তারা যদি বুঝতো তাহলে দুষ্টুমি করতো না। বাচ্চা থাকতে আপনিও এমন করেছেন। অনেকে আবার বলে এখনকার বাচ্চারা একটু বেশিই দুষ্টু। হ্যাঁ এটাও ঠিক কিন্তু তাই বলে ত আপনি বাচ্চাকে ধমক দিলে হিতের বিপরীত হবে। কেননা যে একবার ধমক খায় সে কোন দিন মসজিদে আসতে ভয় পায়। বাচ্চাদের যদি মসজিদ থেকে দূরে রাখেন তাহলে পরবর্তী প্রজন্মে নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে মুসল্লী থাকবে না।
চাক্ষুস যা দেখি, অনেকেই আছেন যারা মসজিদে বাচ্চাদেরকে আপদ মনে করে। কোথাও বসলে পিছনে সরিয়ে দেয়। পিছনের জন তাকে আবার পিছনে পাঠায়। এভাবে পিছনে যেতে যেতে তাকে যেতে হয় সবচেয়ে পিছনের কাতারে। আর মসজিদে জায়গা না হলে হয়তো মসজিদে বাহিরে দাঁড়ানো ছাড়া তার আর কোন উপায় থাকে না।
আর এলাকার সিজনাল যুবক মুরব্বিরা তো মসজিদে গেলে বড় বড় লিডার হয়ে যায়, সামনের কাতারে ছোটদের দাড়াতে দেই না, বাচ্চারা আওয়াজ করলে চড় থাপ্পর এসব তো আছেই। হুজুররা যারা এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসুলের জীবনের কিছু ঘটনা জানেন তারাও এটাকে অনেক সময় এড়িয়ে যান।
ত এমন পরিস্থিতিতে করনীয় কি? নিশ্চয়ই কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন।
কৌশলসমুহঃ
১. বাচ্চারা নরমালি পিছনের সারিতে দাড়ায়। আপনি ও তাদের মধ্যে দাড়ান তাহলে তারা ভয়ে অন্তত কিছুটা চুপ থাকবে। কথা বললে হাতে মুখে ইশারা করুন।
২. মাঝেমধ্যে বাচ্চাদের সাথে কথা বলুন, পারিবারিক খোঁজ খবর নিন, চকলেট দিন, এতে করে সে আপনার সাথে ফ্রি হবে এবং আপনি যা বলবেন তা শুনবে।
৩. বাচ্চাদের সাথে কথা বলায় আরেকটি সুবিধা আছে তা হলো তার মাধ্যমে তার পরিবার এর সাথে একটা বন্ধন সৃষ্টি হবে। কেননা বাচ্চাদের মন নরম, কেউ কিছু দিলে বা কেউ আদর করলে আম্মুকে গিয়ে বলে ফেলে। এভাবে সামাজিক বন্ধন ও ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হবে।
পরিশেষে এ ব্যাপারে তরুণরা এগিয়ে আসা দরকার, মুরুব্বী দের বুঝানো দরকার, হুজুরদের বয়ানে এসব স্পষ্ট করা দরকার। তাহলে বাচ্চারা মসজিদ মুখি হতে আগ্রহী হবে। সবাই সবার প্রতি কোমল হবে। সুখী ও সমৃদ্ধশালী সমাজ হবে। বাচ্চারাই আগামীর ভবিষ্যত গড়বে।তাদেরকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলা আপনার আমার নৈতিক দায়িত্ব বটে। সুন্দর আগামীর ভবিষ্যত প্রজন্ম গড়ে তুলতে আপনি, আমি কি এ ভূমিকা রাখতে পারি না?