গুনাহের রাজ্যেই আমাদের বসবাস৷ জীবন চলার পথে, উঠতে-বসতে, প্রতিনিয়ত অসংখ্য কবিরা/সগিরা গুনাহের সম্মুখীন হই আমরা। শয়তান তার স্বীয় মিশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমাদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যায় ধীরে ধীরে- ধাপে ধাপে৷ গুনাহের কাজের ভয়ংকর শাস্তির কথা আমাদের জ্ঞাত থাকলেও — আমরা গুনাহ থেকে বিরত থাকতে পারিনা৷
নৈতিকতার তৃতীয় পর্যায় হচ্ছে ‘তাক্বওয়া’। তাক্বওয়া অর্জিত ব্যক্তি তথা মুত্তাকী সর্বদা কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকলেও অথবা থাকার চেষ্টা করলেও আ’মলনামায় বিভিন্ন সময় সগিরা গুনাহ সংযোজন হয়৷ আর মুত্তাকী ব্যক্তি ছাড়া বাকিদের অবস্থা তো মারাত্মক! হাঁটতে -চলতে গুনাহ৷ প্রতিক্ষণেই গুনাহ৷ সময়ক্ষেপণ মানেই ফাহেশা-অশ্লীলতা৷
সমুদ্রে ফেনার কি কোন পরিমান আছে?
মানে তা কি কোন পরিমাপক যন্ত্র দ্বারা পরিমাপ করা যায়?
আমার জানামতে— এরকম কোন যন্ত্র নাই৷ অসীম এই সংখ্যার পরিমান সগিরা গুনাহ যদি কারো আ’মলনামায় থাকে— তা রবের পক্ষ থেকে মাফ হয়ে যায় মাত্র কয়েক মিনিটের এক তাসবীহ পাঠের মাধ্যমে। জেনে আসি, রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাদিস থেকে।
নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
❝যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর তেত্রিশবার ‘সুবহানাল্লাহ্’, এবং তেত্রিশবার ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ এবং চৌত্রিশবার ‘আল্লাহু আকবার’ পড়বে এবং শেষে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদ, ওয়া হুওয়া আ’লা কুল্লি শাই ইন ক্বাদীর’ পড়বে, আল্লাহ পাক তার সমস্ত (ছগীরা) গোনাহ্ মাফ করে দিবেন, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয় না কেন।❞
[ সহীহ মুসলিমঃ ৫৯৭]
হাদিস অনুযায়ী প্রত্যেক নামাজের পর পড়তে হবেঃ-
- সুবহানাল্লাহঃ- ৩৩ বার
- আলহামদুলিল্লাহঃ- ৩৩ বার
- আল্লাহু আকবার – ৩৪ বার (অপর হাদিসে ৩৩ বার পাঠের কথা বলা হয়েছে)।
এবং সর্বশেষ পাঠ করতে হবেঃ-
إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুওয়া আলা কুল্লি শাই ইন ক্বাদীর)
এমন লোভনীয় আমল কি মিস করা যায়। তাহলে আজ থেকেই শুরু হোক!
- উপরের তাসবিহটি ‘ফাতেমী তাসবিহ’ নামে অধিক পরিচিত।
- ফরজ নামাজের পর ছাড়াও অন্যান্য সময় এই তাসবীহ পাঠের অমূল্য ফজিলত রয়েছে৷ ইনশাআল্লাহ অন্য কোন পর্বে আলোচিত হবে৷