মাহরাম পুরুষের জন্য মাহরাম মহিলার কতটুকু দেখা জায়েয

মাহরাম পুরুষের জন্য মাহরাম মহিলার কতটুকু দেখা জায়েয?
গলা দেখা কি জায়েয?
মাহরাম মহিলাদের দিকে দৃষ্টি দেয়া কতটুকু জায়েয এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বলা হয়,

وأما نظره إلى ذوات محارمه فنقول: يباح له أن ينظر منها إلى موضع زينتها الظاهرة والباطنة وهي الرأس والشعر والعنق والصدر والأذن والعضد والساعد والكف والساق والرجل والوجه،

যৌন উত্তেজিত হওয়ার আশংকা না থাকলে পুরুষ তার মাহরামে আবদিয়্যাহ মহিলার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সৌন্দর্যময় স্থানের দিকে দৃষ্টি দিতে পারবে। সে স্থানগুলো হল, মাথা, চুল, গর্দনা, বুকের উপরি অংশ, কান, বাহু, হাতের কবজি, পায়ের গোড়ালি, পা ও চেহারা। অত:পর বলা হয়,

وما حل النظر إليه حل مسه ونظره وغمزه من غير حائل ولكن إنما يباح النظر إذا كان يأمن على نفسه الشهوة، فأما إذا كان يخاف على نفسه الشهوة فلا يحل له النظر، وكذلك المس إنما يباح له إذا أمن على نفسه وعليها الشهوة، وأما إذا خاف على نفسه أو عليها الشهوة فلا يحل المس له، ولا يحل أن ينظر إلى بطنها أو إلى ظهرها، ولا إلى جنبها، ولا يمس شيئا من ذلك، كذا في المحيط.وللابن أن يغمز بطن أمه وظهرها خدمة لها من وراء الثياب، كذا في القنية

যার দিকে বা যে সমস্ত স্থানের দিকে দৃষ্টি দেয়া জায়েয সে সমস্ত স্থানকে মধ্যখানে কোনো প্রকার কাপড় ব্যতীত সরাসরি হাত দ্বারা স্পর্শ করা ও মলা/ধাবানো জায়েয। স্বরণ রাখতে হবে যে, যেভাবে যৌন উত্তেজিত হওয়ার আশংকা না থাকলে দৃষ্টি দেয়া জায়েয,আর আশংকা থাকলে না জায়েয।ঠিকতেনিভাবে স্পর্শ করার বিধান প্রযোজ্য। মাহরাম মহিলার পেট ও পিঠে বা এ দুয়ের পার্শ্বদিকে দিকে দৃষ্টি দেওয়া যাবে না এবং স্পর্শ করাও যাবে না। তবে শুধুমাত্র ছেলে খেদমতের উদ্দেশ্যে তার মায়ের পিট ও পেঠকে কাপড়ের উপর দিয়ে ধাবিয়ে দিতে পারবে।(ফাতাওয়া হিন্দিয়া-৫/৩২৮)

স্বর্তব্য যে এখানে মাহরাম দ্বারা কোন প্রকার মাহরাম উদ্দেশ্য? বলা যায় যে,মাহরাম হলো……. মাহরাম যাকে বিবাহ করা হারাম।তা আবার দু-প্রকার যথাঃ-

(১)চিরস্থায়ী হারাম
(২)অস্থায়ী হারাম

সম্পর্কে চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ “আল-মাওসু’আতুল ফেক্বহিয়্যায় ” বর্ণনা করা হয়,

المحرمات من النساء نوعان أ – محرمات على التأبيد، وهن اللائي تكون حرمة نكاحهن مؤبدة، لأن سبب التحريم ثابت لا يزول، كالأمومة، والبنوة، والأخوة. ب – محرمات على التأقيت، وهن من تكون حرمة نكاحهن مؤقتة؛ لأن سبب التحريم غير دائم، ويحتمل الزوال كزوجة الغير، ومعتدته، والمشركة بالله. أولا: المحرمات تحريما مؤبدا ٣ – أسباب تأبيد حرمة التزوج بالنساء ثلاثة، هي: أ – القرابة. ب – المصاهرة. ج – الرضاع.

ঐ সমস্ত মহিলা যাদেরকে বিবাহ করা হারাম তা দু-প্রকার

ক-চিরস্থায়ী হারাম,

যাদের সাথে বিবাহ করা চিরস্থায়ীভাবে হারাম। কেননা এক্ষেত্রে হারাম হওয়ার মূল কারণ(তথা উক্ত সম্পর্ক)কখনো রহিত হবে না।যেমনঃ মা-গং তথা মা ও তার উর্ধতন মহিলাগন,সন্তানাদি,ভাই-বোন ইত্যাদি।

খ-অস্থায়ী হারাম,

যাদের সাথে বিবাহ অস্থায়ীভাবে হারাম। কেননা এখানে হারাম হওয়ার কারণ সমূহ হঠাৎ রহিত হয়ে যেতে পারে। যেমন অন্যর স্ত্রী, বা কারো তালাকপ্রাপ্ত ইদ্দতপালনকারী, বা মুশরিক মহিলা। এ সমস্ত মহিলাদেরকে বিবাহ করা চিরস্থায়ী হারাম না বরং সাময়িক হারাম। তবে হালাল সম্ভাবনাময়। চিরস্থায়ীভাবে কাউকে বিবাহ করা তিন কারণে হারাম হতে পারে,

(১)আত্মীয়
(২)বৈবাহিক সম্পর্ক
(৩)দুধ সম্পর্ক।{আল-মাওসু’আতুল ফেক্বহিয়্যায়-৩৬/২১০}

পর্দা বিষয়ে মাহরাম দ্বারা ঐ মাহরাম উদ্দেশ্য যাকে বিবাহ করা চিরস্থায়ীভাবে হারাম। সুতরাং অস্থায়ী মাহরাম আজনবী তথা অপরিচিতর মত।একজন আজনবীর সামনে একজন মহিলা যেভাবে পর্দা করবে ঠিকতেমনিভাবে অস্থায়ী মাহরামের সামনেও সেভাবে পর্দা করে চলবে।

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

Exit mobile version