মাহরাম ব্যতিত ভ্রমণ
ভার্সিটি পড়ুয়া কিংবা কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা ছেলে বন্ধু কিংবা মেয়ে বন্ধুদের সাথে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের উপভোগ্যতায় নিজেকে হারাতে ট্যুরে চলে যাই সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি। কিন্তু কি জানো বোন! ইসলাম তোমাকে মাহরাম ব্যতিত এই ট্যুরে যাওয়া কিংবা লং জার্নির অনুমতি দেয় নাই। সহজভাষায় বলা চলে মাহরাম ব্যতিত এসব ট্যুরে যাওয়া কিংবা লং জার্নি করা হারাম। বিভিন্ন রাবি থেকে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) বলেছেন —
“কোন মহিলা যেন সাথে মাহরাম ব্যক্তি ছাড়া একাকী তিন দিনের (দূরত্বে) সফর না করে।”
[বুখারী : ৩১২৪]
“যে স্ত্রীলোক আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান এনেছে তার জন্য সাথে কোন মাহরাম ব্যক্তি ছাড়া তিন দিনের দূরত্বে পথের সফর করা বৈধ নয়।”
[বুখারী : ৩১২৬]
“কোন মহিলা যেন দু’ দিনের পথেও সফর না করে তার সাথে তার কোন মাহরাম পুরুষ অথবা তার স্বামী ব্যতীত।”
[বুখারী : ৩১২৪]
“কোন মুসলিম মহিলার জন্য সাথে তার কোন মাহরাম পুরুষ ব্যতীত এক রাতের পথও সফর করা বৈধ নয়।”
[বুখারী : ৩১৩২]
বাস্তব জীবনের পাঠশালা থেকে তোমাকে একটা গল্প বলি— সাস্টে পরীক্ষা দিয়ে রাতের গাড়িতেই ঢাকায় ফিরছি, আমার সামনের সিটে বসে আছে একটা মেয়ে আরেকটা ছেলে। এরা কেউ কাউকে চিনে না। পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফিরবে এখন বাসে পাশাপাশি সিট পড়েছে পাশাপাশি বসা ছাড়া ত উপায়ান্তর নেই। রাতে ঘুম ধরবে এটাই স্বাভাবিক ত মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়ে আর বাসের ঝাঁকুনিতে একজনের মাথা আরেকজনের কাঁধে যাবে এটাও স্বাভাবিক। যখন ঢাকায় পৌঁছি তখন দেখি দুজন বেঘোর ঘুমে, দুজনের মাথা একবিন্দুতে একীভূত হয়ে আছে।
যদি মেয়েটার সাথে মাহরাম কেউ আসত তাহলে এরকম পরিস্থিতিতে তাঁকে পড়তে হতো না। একটা অপরিচিত ছেলের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমাতে হতো না। এই বিষয়ে শাইখ আহমাদুল্লাহ (হাফি.) এর নজরকাড়া একটা কথা —
“নারীরা হলো প্রেসিডেন্টের মতো। সে যেখানেই যাক তার বডিগার্ড থাকা লাগবেই। এমনকি সে যদি বডিগার্ড রাখতে নাও চায় তবুও বডিগার্ড নিজ দায়িত্বের কারণে তাকে একা ছাড়তে পারেনা। কোনো প্রেসিডেন্ট কি বডিগার্ড ছাড়া থাকে নাকি? আর নারীর বডিগার্ড হলো তার মাহরাম। সবচেয়ে সেরা বডিগার্ড তার ভাই বাবা এবং স্বামী।”
এমনকি হজ্জের মতো পবিত্র ও সওয়াবের কাজেও নারীদের একা যেতে নিষেধ করা হয়েছে, স্ত্রীকে হজ্জে একা না পাঠিয়ে বরং সাথে স্বামীকে যাওয়ার জন্য রাসূল (ﷺ) জিহাদের ময়দান থেকে সাহাবিদের ছুটি দিয়েছেন। ইবনু আব্বাস (রাযি) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবিজি(ﷺ) কে ভাষণ দিতে শুনেছি — “কোন স্ত্রীলোক যেন সাথে কোন মাহরাম পুরুষ ছাড়া একাকী সফর না করে। এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমার স্ত্রী হজ্জের উদ্দেশে রওনা হয়ে গেছে এবং আমাকে অমুক সৈন্য বাহিনীতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে- যা অমুক স্থানে যুদ্ধে যাবে। তিনি বললেন, তুমি চলে যাও এবং তোমার স্ত্রীর সাথে হাজ্জ কর।”
[বুখারী : ৩১৩৮]
তুমি বলতে পারো, প্রগতির এই যুগে নারীদের ঘরে রাখার ফন্দি এঁটেছে এই কাঠমোল্লারা। বোন এটা ফন্দি নয় বরং এটা তোমার মর্যাদা। বরং এটা তোমার নিরাপত্তার বলয়। বরং এটা তোমার শরীর যাতে অন্য পুরুষের সংস্পর্শে না আসে সেটার নিশ্চয়তা।
বোন নিজেকে বিন্দাস বানানোর আগে একটু ভাবো, নিজের কাজগুলোকে ইসলামের আয়নায় মেপে দেখ। তোমার কাজের প্রতি কি তোমার রব খুশি?