আমরা ৬ ভাগে কুরবানি দিয়েছি। কিন্তু ভাগ করার সময়ে ৭ ভাগ করা হয়েছে। এখানকার নিয়ম নাকি ১ ভাগ কসাইদের দেওয়া। কিন্তু এমনটা করা জায়েজ নাই-বলার পরেও তারা শুনেনি। এখন আমাদের কুরবানি কি সঠিক হয়েছে?
কসাইকে পারিশ্রমিক হিসেবে কুরবানির গোশত, চামড়া, মাথা, পা ইত্যাদি কোন কিছু দেওয়া জায়েজ নয়। কেননা হাদিসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। যেমন:
আলি রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
أَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَقُومَ عَلَى بُدْنِهِ وَأَنْ أَتَصَدَّقَ بِلَحْمِهَا وَجُلُودِهَا وَأَجِلَّتِهَا وَأَنْ لاَ أُعْطِيَ الْجَزَّارَ مِنْهَا قَالَ “ نَحْنُ نُعْطِيهِ مِنْ عِنْدِنَا
“রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে (বিদায় হজের সময়) তার কুরবানির উটগুলোর দেখাশোনা করার নির্দেশ দিলেন এবং এগুলোর মাংস, চামড়া ও (উটের পিঠে ব্যবহৃত) ঝুল বা জিনপোশ দান করে দিতে বললেন। সেই সাথে তিনি এগুলো দ্বারা কসাইয়ের মজুরি দিতে নিষেধ করলেন।
আর বললেন, আমাদের নিজেদের পক্ষ থেকে তার মজুরি পরিশোধ করে দেব।”
[সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী), অধ্যায়: ১৬। হজ, পরিচ্ছেদ: ৬১. কুরবানির গোশত, চামড়া ও উটের পিঠে ব্যবহৃত ঝুল দান করা এবং এসব দিয়ে কসাইয়ের পারিশ্রমিক পরিশোধ না করা]
অর্থাৎ কুরবানির পশু জবেহ করা বা তা প্রস্তুত করার বিনিময়ে কসাইকে পারিশ্রমিক হিসেবে কুরবানির মাংস, চামড়া, মাথা, পা ইত্যাদি কোন কিছু দেওয়া জায়েজ নাই। বরং আলাদা অর্থ দ্বারা তাদেরকে তাদের পারিশ্রমিক দিতে হবে।
ইবনে কুদামা এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন,
لأن دفع جزء منها عوضاً عن الجزارة كبيعه، ولا يجوز بيع شيء منها. اهـ
“কারণ কুরবানির কিছু অংশ দ্বারা কসাইকে পারিশ্রমিক দেওয়া তা বিক্রয় করার নামান্তর। অথচ কুরবানির কোন কিছুই বিক্রি করা জায়েজ নেই।”
[আল মুগনি]
তবে আলাদা অর্থ দ্বারা পারিশ্রমিক দেওয়ার পর সাধারণ দান বা উপহার হিসেবে কসাইকে কুরবানির মাংস, চামড়া ইত্যাদি দিলে তাতে কোন সমস্যা নাই।
অত:এব উল্লেখিত প্রশ্ন অনুযায়ী কুরবানির গরুকে ৭ ভাগ করে একভাগ দ্বারা কসাইয়ের পারিশ্রমিক প্রদান করা শরিয়ত সম্মত হয়নি। সে কারণে যারা এমনটি করেছে তারা গুনাহগাহ হয়েছে কিন্তু এতে কুরবানি বাতিল হয়ে যায়নি।
এখন করণীয় হল, অজ্ঞতা পূর্ণ এ কাজের জন্য আল্লাহর নিকট তওবা করা এবং ভবিষ্যতে এমনটি আর না করা। নিশ্চয় আল্লাহ পরম দয়ালু ও ক্ষমাশীল।
আল্লাহ তৌফিক দান করুন।
আমিন।