কবরের নিকট কুরআন তিলাওয়াত করা কতটুকু শরীয়ত সম্মত?
এটি দ্বীনের মধ্যে নব আবিষ্কৃত বিদআত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো কবর যিয়ারত করতে গিয়ে কুরআন পাঠ করেছেন মর্মে দলীল নেই। তাই সেটি অবশ্যই পরিত্যজ্য।
তাছাড়া শরীয়তের মূলনীতি হল, গোরস্থান কুরআন তিলাওয়াতের জায়গা নয় এবং সেখানে কুরআন পাঠ করা জায়েযও নয়। এ ব্যাপারে স্পষ্ট দলীল হল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لاَ تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ مَقَابِرَ إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْفِرُ مِنَ الْبَيْتِ الَّذِى تُقْرَأُ فِيهِ سُورَةُ الْبَقَرَةِ
“তোমরা তোমাদের বাড়ীকে গোরস্থানে পরিণত করোনা। যে ঘরে সূরা বাকারা পাঠ করা হয় শয়তান সে ঘর থেকে পলায়ন করে। ”
(সহীহ মুসলিম। অনুচ্ছেদ: বাড়ীতে নফল নামায পড়া মুস্তাহাব তবে মসজিদেও পড়া জায়েয। হাদিস নং ১৮৬০ আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত)
তিনি আরও বলেন:
صَلُّوا فِي بُيُوتِكُمْ وَلَا تَتَّخِذُوهَا قُبُورًا
“তোমরা তোমাদের ঘরে (নফল) নামায আদায় কর এবং তা কবরস্থানে পরিণত কর না। ”
(তিরমিযী, ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত। অনুচ্ছেদ: বাড়ীতে নফল নামায পড়া মুস্তাহাব। হাদিস নং ৪৫৩। ইমাম তিরমিযী এ হাদিসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন।)
অর্থাৎ কবরে যেমন নামায পড়া হয় না কিংবা কুরআন তেলাওয়াত করা হয় না তদ্রূপ ঘরে নফল নামায এবং কুরআন পড়া বাদ দিয়ে ঘরকে গোরস্থানে পরিণত করনা।
কবরের পাশে কুরআন পড়লে যদি মৃতদের উপকার হত তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নফল নামায এবং কুরআন ঘরে পড়তে বলতেন না এবং নিজেদের ঘরকে গোরস্থানে পরিণত করতে নিষেধ করতেন না। যদিও তিনি উম্মতের সব চেয়ে বেশী কল্যাণকামী এবং মুমিনদের প্রতি পরম করুণাময়।
তার এ কথা বলার উদ্দেশ্য এই যে, গোরস্থান কুরআন তেলাওয়াত এবং নামায পড়ার স্থান নয়। আর এ কারণে তিনি কবরের নিকট কুরআন তেলাওয়াত করেছেন বা কুরআনের কোন সূরা পড়েছেন তার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। অথচ তিনি অধিকহারে নফল নামায আদায় করতেন এবং কবর যিয়ারত করতেন, সেই সাথে মানুষকে কবর যিয়ারত করার নিয়ম-পদ্ধতিও শিক্ষা দিতেন।
এখান থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, গোরস্থানে কুরআন তেলাওয়াত করা বা কুরআনের বিশেষ কোন সূরা পাঠ করা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ নয় বরং বিদআতের অন্তর্ভুক্ত যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।