কাজী নজরুল ও ইসলাম

কাজী নজরুল ইসলামের জীবনটা ছিলো এককথায় ‘প্যারাডক্সিকাল’। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মতো তাঁর জীবনের মূলনীতি ছিলো- ‘আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা/ করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা’। তাঁর জীবনীতে এতোটা বৈপরিত্য, নাটকীয়তা ছিলো, যেটা আমার পড়া অন্য কারো জীবনীতে পাইনি।
পড়ালেখার সুযোগ তেমন পাননি, যখন পেয়েছেন কাজে লাগিয়েছেন। একজন ধনাঢ্যের কৃপায় একটা স্কুলে ভর্তি হয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম হোন। এসএসএসি (তখনকার প্রবেশিকা) পরীক্ষা সামনে। হঠাৎ জোঁক জাগলো যুদ্ধে যাবেন। কিসের পরীক্ষা কিসের কী! ক্লাসের ‘ফার্স্ট বয়’ এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে চলে গেলেন যুদ্ধে।

যদিও যুদ্ধ করতে হয়নি, কিন্তু ফিরে এসে খুব গর্বকরে নিজের নামের সাথে ‘হাবিলদার’ পদ যোগ করেন। সেই কবি আবার ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লিখে ব্রিটিশদের উপাধি ত্যাগ করেন।

সৈয়দা খাতুন ওরফে নার্গিসের সাথে তাঁর রিলেশন ছিলো, সেটা বিয়ে পর্যন্ত যায়। বিয়ের দিন নজরুল জানতে পারলেন নার্গিসের মামা আলী আকবর নিজের প্রকাশনীর স্বার্থে আপন ভাগ্নীর সাথে তাঁকে বিয়ে দিয়ে ‘ঘরজামাই’ করে রাখতে চাচ্ছেন। কিসের প্রেম, কিসের বিয়ে! বিয়ের আসর ছেড়ে চলে যান নজরুল।

বিয়ের আসর ছেড়ে যে বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন, পরবর্তীতে সেই বাড়ির মেয়ে আশালতা ওরফে দোলনকে (যাকে তিনি নাম দেন প্রমীলা দেবী) কয়েকবছর পর বিয়ে করেন। ঘরজামাই হবেন না এই অজুহাতে আগের বিয়েটি করেননি। অথচ প্রমীলা দেবীর সাথে অনেকটা ‘ঘরজামাই’ হয়েই তাঁকে থাকতে হয়।

দ্বিতীয় পুত্র বুলবুলের জন্মের পর ছেলে এবং স্ত্রীকে খাওয়ানোর মতো ঘরে কিছু ছিলো না। চারিদিকে হাত পাতেন। ঐ সময় লিখেন তাঁর বিখ্যাত আরেকটি কবিতা ‘দারিদ্র্য’। ঘরে যখন নুন আনতে পান্তা ফুরায়, সেই সময় তিনি সিদ্ধান্ত নেন কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক পরিষদের নির্বাচন করবেন! তাঁর প্রতিপক্ষ ছিলেন তিনজন জমিদার! নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়ে শুধু হার মানেননি, জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিলো।

‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতা লেখার অভিযোগে তাঁকে রাজদ্রোহী অভিযোগে একবছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জেলের মধ্যে খাবার আর থাকার মান ভালো না দেখে শুরু করলেন অনশন। তাঁর অনশনের খবরে সারা দেশ উত্তাল। রবীন্দ্রনাথ থেকে শরৎচন্দ্র, সবাই তাঁকে অনুরোধ করলেন অনশন ভাঙ্গার জন্য। রবীন্দ্রনাথ লিখলেন- Give up hunger strike, our literature claims you!

এই ‘খ্যাপ্যা’ মানুষটাকে বুঝানোর জন্য চুরুলিয়া থেকে ছুটে এসেছিলেন তাঁর মা জাহেদা খাতুন। আপন মায়ের কথা মানা তো দূরের কথা, মায়ের সাথে দেখা পর্যন্ত করেননি। অন্যদিকে পাতানো মা বিরজাসুন্দরী দেবীর অনুরোধে অনশন ভাঙ্গেন নজরুল।

যখনই যে তাঁকে অনুরোধ করেছে, লিখে দিয়েছেন গান-কবিতা। তাঁর বিখ্যাত বেশিরভাগ গান-কবিতাগুলো ছিলো ফরমায়েশী। চিত্তরঞ্জন দাস কারারুদ্ধ হলে তার স্ত্রী বাসন্তী দেবী নজরুলকে অনুরোধ করেন একটা কবিতা লেখার জন্য। নজরুল লিখে দেন তাঁর বিখ্যাত কবিতা- লাথি মার ভাঙরে তালা/ যত সব বন্দীশালায় / আগুন জ্বালা, আগুন জ্বালা… ফেল উপাড়ি।

‘সওগাত’ পত্রিকার জন্য নাসিরউদ্দীন যখন নজরুলকে বলেন, “কোনো বিখ্যাত অথবা মহৎ মুসলিম ব্যক্তিত্বকে নিয়ে একটা কবিতা লিখে দিবেন?” তখন নজরুল লিখে দেন তাঁর অন্যতম বড়ো কবিতা- খালেদ। খালিদ বিন ওয়ালিদকে (রাদিয়াল্লাহু আনহু) নিয়ে লেখা কবিতাটি ১৯৪ লাইনের।

“খালেদ! খালেদ! ফজর হল যে, আজান দিতেছে কৌম
ঐ শোন শোন- আসসালাতু খায়র মিনান্নৌম।”

যেই কবি সাহাবীদের নিয়ে কবিতা লিখেছেন, সেই কবি আবার হিন্দুদের শ্যামা সংগীতও লিখেছেন! ইসলামি সাহিত্য-সংস্কৃতিতে বিপ্লব আনার লক্ষ্যে নজরুলকে যখন আব্বাসউদ্দীন বলেন, “কাজীদা, একটা ইসলামি সংগীতও লিখো না…” তখন সেই নজরুল লিখলেন- ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে…’।

শ্যামা সংগীত ছেড়ে যিনি ইসলামি সংগীত-গজল, হামদ-নাত, ইসলামি কবিতা লেখা শুরু করেন, যিনি ইসলামি সাহিত্যে বিপ্লব নিয়ে আসেন, তিনি কি তাহলে ‘ইসলামিস্ট’ হয়ে গিয়েছিলেন? সেটার উত্তর হচ্ছে- না। নজরুল শেষ বয়সে এসে ইসলামের দিকে ঝুঁকলেও তিনি তাঁর ঐ মূলনীতি ছাড়তে পারেননি- ‘আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা’।

সাহিত্য জীবনের প্রথমদিকে আলেমদের সাথে তাঁর চরম দ্বন্দ্ব ছিলো। কয়েকশোবার বেফাঁস কবিতা, মন্তব্যের জন্য ‘কাফির’ ট্যাগ পেয়েছিলেন। হুজুরদেরকে কটাক্ষ করে ‘মোল্লা-মুন্সী’ বলে অনেক কবিতাও লিখেছেন। সেই নজরুল সাহিত্য জীবনের শেষদিকে তাঁর শ্রেষ্ঠ অবদান কুরআনের ক্যাব্যানবুবাদ ‘কাব্য আমপারা’ উৎসর্গ করে যানে এদেশের আলেমদেরকে!

‘কাব্য আমপারা’র উৎসর্গের পাতায় নজরুল লিখেন- “উৎসর্গ- বাংলার নায়েবে-নবী (নবীর উত্তরসূরী) মৌলবী সাহেবানদের দস্ত মোবারকে।”
তাঁর জীবনটা এতোটা বৈচিত্রপূর্ণ প্লাস বৈপরীত্য ছিলো যে, তাঁকে ডিফাইন করাটা অসম্ভব। তাঁর প্রথম জীবন নিয়ে আলেমদের ফতোয়া ছিলো ‘কাফির’, অন্যদিকে শেষজীবনের প্রত্যাবর্তন দেখে অনেকেই সেই ফতোয়া থেকে সরে আসেন এবং তাঁকে বরণ করে নেন। তিনি যে কুফর অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেননি, বরং বাহ্যিকভাবে একজন মুসলিম অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন, সেটা নিয়ে তাঁর জীবনীকারদের মধ্যে ‘ইজমা’ হয়ে গেছে।

তারপরও যারা নজরুলকে কাফির প্রমাণের জন্য উঠেপড়ে লাগবে, তারা যেনো এই হাদীসটি মনে রাখে।

“একজন অপরজনকে ফাসিক বলে যেন গালি না দেয় এবং একজন অন্যজনকে কাফির বলে অপবাদ না দেয়। কেননা, অপরজন যদি তা না হয়, তবে সেই অপবাদ তার নিজের উপরই (যে অপবাদ দেয়) আপতিত হবে।”
[সহীহ বুখারী: ৬০৪৫]

নজরুল চর্চার সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হলো- জাজমেন্টাল কনক্লুশন। নজরুলকে না পড়ে, নজরুলের জীবনী না পড়ে আমরা একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে থাকি- নজরুল কাফির কবি ছিলেন নাকি ইসলামিক কবি ছিলেন?

কাফির কবি হলে ‘পরিত্যাজ্য’ আর ইসলামি কবি হলে ‘মাথার তাজ’– এরকম মানসিকতা নিয়ে আর যাই হোক কবিতা পড়া যাবে না। নজরুলকে না বলা যাবে ‘কাফির কবি’ না বলা যাবে ‘ইসলামিক কবি’। নজরুলের শেষদিকের কবিতা-গজলকে সর্বোচ্চ বলা যায় ‘ইসলামি কবিতা’। তাই বলে নজরুলকে ‘ইসলামিক কবি’ বলাটা অতিরঞ্জিত।
সেক্ষেত্রে নজরুলকে কি ‘Third Eye View’ থেকে পাঠ করা যাবে?
হ্যাঁ, যাবে। সেই পদ্ধতিটি স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিখিয়ে দিয়েছেন।

একদিন নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর এক সাহাবী আমর ইবনু শারীদকে (রাদিয়াল্লাহু আনহু) জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার কি কবি উমাইয়্যাহ ইবনে আবুস সালাতের কোনো কবিতা মনে আছে?” তিনি ‘হ্যাঁ’ বললে নবিজী তাঁকে আবৃত্তি করতে বলেন।
ঐ সাহাবী একে একে উমাইয়্যার একশোটি কবিতার লাইন আবৃত্তি করে নবিজীকে শুনান।
[সহীহ মুসলিম: ৫৭৭৮]

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে কবির কবিতা এতো আগ্রহ নিয়ে শুনেন, সেই কবি কি মুসলিম ছিলেন? উত্তর হচ্ছে- না। তাহলে নবিজী কেনো একজন কাফির কবির কবিতা শুনেন? কারণ, ‘তার কবিতা ঈমান আনলেও কবির হৃদয় ঈমান আনেনি’।
নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ কাফির কবি সম্পর্কে বলেন- “সে তো প্রায় মুসলিম হয়েই গিয়েছিলো!”
[সহীহ মুসলিম: ৫৭৮২]

একজন কাফির কবির কবিতায় ঈমানের উপাদান- তাওহীদ ছিলো বলে নবিজী সেই কবিতাকে এপ্রিশিয়েট করেন।
জাহেলী যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি তারাফার একটি কবিতা রাসূলের সামনে আবৃত্তি করা হলে তিনি কবিতার প্রশংসা করে বলেন- “এতো নবীদের কথার মতো।”
[নাকদ আশ শি’র, মুকাদ্দিমা ২৩]

নবিজীর সেই লিগ্যাসী ধরে রাখেন তাঁর সাহাবীরা। খুলাফায়ে রাশেদার চারজন সাহাবীর মধ্যে তিনজনই ছিলেন কবি।
সা’ঈদ ইবনে মুসায়্যিব বলেন, “আবু বকর (রা:) কবি ছিলেন। উমর (রা:) কবি ছিলেন। আলী (রা:) ছিলেন এই তিনজনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কবি।” [আল ইকদ আল ফারীদ: ৫/২৮৩]
উমর ইবনুল খাত্তাবকে (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তো বলা হতো তখনকার আরবের সবচেয়ে বড়ো সাহিত্য সমালোচক। [আল-বায়ান ওয়াত তাবয়ীন: ১/১৩৯]

উমর (রাদি:) ‘কাফির কবি’ যুহাইর বিন আবু সুলমাকে যুগের ‘সর্বশ্রেষ্ঠ কবি’ মনে করতেন।
কেন তার কারণ তিনি ব্যাখ্যা করেন, “তিনি এক কথার মধ্যে আরেক কথা গুলিয়ে ফেলতেন না। জংলী ও অশোভন কথাও এড়িয়ে চলতেন। কোনো ব্যক্তির মধ্যে বিদ্যমান গুণেরই তিনি প্রশংসা করতেন। কোনো রকম অতিরঞ্জন করেননি।” [ইবন সালাম, তাবাকাত আশ-শু’আরা, ২৯]

নবিজীর স্ত্রী আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) তো ‘কাফির কবি’ যুহাইর ইবনে জানাবের কবিতা প্রায় সময়ই আবৃত্তি করতেন। [আল ইকদ আল ফারীদ: ৫/২৭৫]
এমনকি আয়িশা (রা:) নবিজীকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘কাফির কবি’ আবু কাবীর আল হুযালীর একটি কবিতা আবৃত্তি করে শুনাতেন। আয়িশার (রা:) কবিতা আবৃত্তি শুনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রফুল্লবোধ করেন।
[কবিতাটি সংকলিত আছে- ইবনুল কায়্যিম, মাদারিজুস সালিকীন ২৭৭]

আল্লাহ যার উপর ওহী প্রেরণ করেন, তিনি যেমন হাসান ইবনে সাবিত, কা’ব ইবনে যুহাইর, আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহার (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) মতো ‘বিশ্বাসী কবিদের’ কবিতা আবৃত্তি পছন্দ করতেন, তেমনি পছন্দ করতেন কাফির কবিদের কবিতা। কারণ, ঐসব কবিতাগুলো ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক ছিলো না।

কোন কবিতা শুনবো, কোন কবিতা বর্জন করবো সেটার মাপকাঠি সাহাবীদের কাছেও স্পষ্ট ছিলো। ‘কাফির কবিদের কবিতা শুনা যাবে না, শুধু মুসলিম কবিদের কবিতাই শুনা যাবে’ এরকম মানসিকতা তাঁরা লালন করতেন না। ভালো, সত্য-সুন্দরকে স্বাগত জানানো এবং অসত্য, কুৎসিতকে বর্জন করাই ছিলো সাহাবীদের কবিতা পাঠের নীতি তথা ‘ফিল্টার’।

আয়িশা (রা:) বলেন, “কবিতার মধ্যে কিছু আছে ভালো, কিছু আবার নিকৃষ্ট। তুমি তার ভালোটা গ্রহণ করো আর নিকৃষ্টটা পরিহার করো।” [বুখারী, আদাবুল মুফরাদ: ৮৭৪]
এই নীতি ফলো করলে, এই ফিল্টারে রেখে নজরুল, কী রবীন্দ্রনাথ, জন কিটস, উইলিয়াম ওয়ার্ডসওর্থ, বা লংফ্যালো সবাইকে পড়া যায়। কেউ যদি কবিতা পাঠে আগ্রহী হয়, তার ঈমান-কুফর সম্পর্কে আকীদা ক্লিয়ার থাকে, তাহলে ইসলাম ধর্ম তার কবিতা পাঠে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। কেউ যদি তার ঈমান নিয়ে দূর্বলতাবোধ করে, কবিতা পাঠে তার আগ্রহ না থাকে তাহলে তো সেটা ভিন্ন ব্যাপার।

কেউ যদি তার লেখায় নজরুলকে Quote করে, নজরুলের নাতে রাসূল- ‘ত্রি ভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ’ নিয়ে আসে, তখন অনেকেই গর্জে উঠে- “আরে, তুমি নজরুলকে ‘প্রমোট’ করছো কেনো?”

তাদেরকে বিনয়ের সাথে বলতে চাই- এটাই তো সালাফদের নীতি! আমরা তো স্বাভাবিক লেখায় নজরুল-রবীন্দ্রনাথের উদ্ধৃতি দিচ্ছি, সালাফরা তো কুরআনের তাফসীর লিখতে গিয়ে ‘কাফির কবিদের’ উদ্ধৃতি দিতেন।

তাফসীরে তাবারী, তাফসীরে কুরতুবি থেকে শুরু করে তাফসীর ইবনে কাসীর পর্যন্ত প্রায় বেশিরভাগ ক্লাসিক্যাল তাফসীরে আরবের কবিগুরু, ‘কাফির কবি’ ইমরাউল কাইসের কবিতা আছে। ক্লাসিক্যাল বেশিরভাগ তাফসীরে নাবিগা যুবয়ানি এবং আল-আ’শার মতো কয়েক ডজন ‘কাফির কবি’র কবিতা আছে।
কুরআনের তাফসীরে কেনো ‘কাফির কবি’র কবিতা? এটা নিয়ে তো কেউ প্রশ্ন তুলেনি। তাফসীরের কিতাবে কেনো কাফিরদেরকে ‘প্রমোট’ করা হচ্ছে, এটা নিয়ে তো কাউকে ফেসবুকে স্টেইটাস দিতে দেখিনা!

আমাদের সালাফরা তো যে তালে কুরআন-হাদীস পাঠ করতেন, সমান তালে না হলেও কবিতা পাঠকে তাঁরা গুরুত্ব দিতেন।
ইমাম আবু হানিফাকে (রাহিমাহুল্লাহ) যিনি ইলম অর্জনের রাস্তা দেখান, সেই ইমাম শাবী (রাহিমাহুল্লাহ) তো হাদীসের মতো কবিতা মুখস্ত করতেন। তিনি বলেন, “আমি চাইলে একটানা একমাস কবিতা আবৃত্তি করতে পারবো, কিন্তু এক কবিতা দুইবার আবৃত্তি করবো না!”
[আল ইকদ আল ফারীদ: ৫/২৭৫]

‘আমার কবিতা পড়তে ভালো লাগে না’ কিংবা ‘নজরুলকে আমার পছন্দ না’ এই যুক্তিই তো যথেষ্ট। ‘সে কাফির, এজন্য আমি কবিতা পড়ি না’ এরকম খোঁড়া যুক্তি দেবার কোনো দরকার আছে?

লিখেছেন

আরিফুল ইসলাম (আরিফ)

পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার কলম তাকে উজ্জীবিত করেছে স্বীয় বিশ্বাসের প্রাণশক্তি থেকে।
অনলাইন এক্টিভিস্ট, ভালোবাসেন সত্য উন্মোচন করতে এবং উন্মোচিত সত্যকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে।

লেখকের অন্যান্য সকল পোষ্ট পেতে ঘুরে আসুন

পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার কলম তাকে উজ্জীবিত করেছে স্বীয় বিশ্বাসের প্রাণশক্তি থেকে।
অনলাইন এক্টিভিস্ট, ভালোবাসেন সত্য উন্মোচন করতে এবং উন্মোচিত সত্যকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে।

Exit mobile version