কুরআনুল কারিম একজন মানুষের জীবনের প্রতিটি দিককে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যথেষ্ট। জীবনযাপনের জন্য পর্যাপ্ত জ্ঞান সেখানে যেরকম রয়েছে, ঠিক সেরকম ধীরে ধীরে মানুষের ইন্টেলেকচুয়ালিটি বিকশিত হচ্ছে কোরআনের সৌন্দর্য উপলব্ধি করার জন্য।
আদব, নৈতিকতা, এবং মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা করতে আমি সূরা গাশিয়াহ’র ১৪ নাম্বর আয়াত থেকে একটি ইম্প্রেসিভ ইনসাইট শেয়ার করছি। তবে ১৪ নাম্বার আয়াতে যাওয়ার পূর্বে, আমরা তার আগের দুটি আয়াত নিয়ে একটু আলোচনা করি।
আল্লাহ জান্নাতের বর্ণনা দিচ্ছেন। আল্লাহ বলেন— ‘জান্নাতে একটি প্রবাহমান ঝরনা থাকবে।’ ১৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “এবং সেখানে থাকবে উঁচু আসন”। আরেকটি আয়াতে বলা হয়েছে, “এবং থাকবে গ্লাস ও পানপাত্র সুন্দরভাবে রাখা”।
এবার বিষয়টি নিয়ে একটু চিন্তা করলে বুঝা যায় যে— আল্লাহ জান্নাতে প্রবাহমান ঝর্ণার কথা বলেছেন, যা সলসবিলের ঝরনা বা এরকম অন্যান্য ঝর্ণার মতো। এই আলোচনার মধ্যে, আল্লাহ “কুব” শব্দটির বহুবচন “আকওয়াব” ব্যবহার করেছেন। যার অর্থ গ্লাস বা পানপাত্র, এবং “মাদউউ” অর্থ সুন্দরভাবে স্থাপন করা।
মারেফুল কোরআনের তাফসিরে বলা হয়েছে— এই আয়াতটি সামাজিক আচরণের খুব সুন্দর একয়ি শিষ্টাচার নিয়ে আলোচনার সূচনা করে। তা হলো, যথাস্থানে প্রতিটি বস্তু রাখা। অর্থাৎ, যখন কাউকে পানি পরিবেশন করবেন, নিশ্চিত করুন যে পাশে একটি গ্লাস রাখা আছে।
এই ব্যাখ্যাটি আরও বিস্তৃত করা যায়। যেমন— ব্যাবহারের সুবিধার্থে বাথরুমের পাশেই তোয়ালে, টিস্যু রাখা উচিত। অনেক সময় এই আদবের অভাবেই সমস্যার বিভিন্ন সৃষ্টি হয়। তাছাড়া, চাবিটি যথাস্থানে না রাখার কারণে কিংবা রিমোট যথাস্থানে রাখা হয়নি, যার কারণে সালাত বিলম্বিত হয়েছে বা কোনো অনুষ্ঠান দেরি হয়েছে। কেউ গাড়িতে উঠে পড়েছে কিন্তু চাবি খুঁজে না পাওয়ায় গাড়ি স্টার্ট করতে পারছেনা।
কুরআন কী বলে এবং কীভাবে এই শিক্ষাকে প্রয়োগ করতে বলা হয়েছে? “গ্লাস এবং পানপাত্র সুন্দরভাবে স্থাপন করা”।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা ! মূল বার্তা কি?
প্রতিটি জিনিস তার যথাযথ স্থানে রাখুন। এটাই সূরা গাশিয়াহ থেকে শেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ আদব। যা মানুষের জীবন যেরকম সুন্দর করতে সহযোগিতা করে ঠিক তেমন কোরআনের সৌন্দর্যও প্রকাশ করে।