জোহর ও আসর নামাজে ইমামের সাথে সূরা ফাতিহা পড়া যাবে কি
ইমামের পিছনে মুক্তাদির জন্য কোন প্রকার কেরাত নেই। সেটা হোক জোহরের নামাজ হোক আসরের নামাজ অথবা ফজরের নামাজ কেননা,
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, مَنْ كَانَ لَهُ إِمَامٌ فَقِرَاءَتُهُ لَهُ قِرَاءَةٌ ‘যে ব্যক্তির ইমাম আছে তার ইমামের কেরাতই তার জন্য কেরাত বলে ধর্তব্য হবে।’
(সুনানে ইবনে মাজাহ: ৮৫০)
ইমামের কেরাতই মুক্তাদির পক্ষে যথেষ্ট- এটি সাহাবা, তাবেয়ীন ও তাবে-তাবেয়ীন-যুগের ‘আমলে মুতাওয়াতির’ (যুগ পরম্পরায় চলে আসা ব্যাপক ও অনুসৃত কর্মধারা)-এর মাধ্যমে প্রমাণিত। এর বিশুদ্ধতা তাঁদের কাছে ছিল এক স্বীকৃত বিষয়।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, যায়েদ ইবনে ছাবিত, জাবির ইবনে আবদুল্লাহ ও আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাযি. প্রমুখের আমলও এ অনুযায়ীই ছিল। যদি রাসূলুল্লাহ ﷺ মুক্তাদিকে ইমামের পেছনে কুরআন পড়ার নির্দেশ দিতেন, তাহলে তাঁদের সেটা জানা থাকত এবং তাঁরা সে অনুযায়ীই আমল করতেন আর মানুষকে শেখাতেন। অথচ তাঁদের আমল ছিল ইমামের পেছনে কুরআন না পড়া এবং তাঁরা মানুষকে এরই তালীম দিয়েছেন।
(উমদাতুল ক্বারী ৬৭:৩ ফাতহুল মুলহিম ২০:২ ইলাউস সুনান ৪৩:৪ তাবারী ৩৭৮ : ১১ তাফসীর ইবনে কাসীর ১ :২৮১)
একারণে এই বিষয়ে হানাফী মাযহাবের ফাতওয়া হলো, যে কোন ধরনের নামাযে মুক্তাদির জন্য যে কোন কিরাত ওয়াজিব নয়। বরং মুক্তাদী চুপ থাকবে। কেউ যদি ইমামমের পিছনে কিরাত পড়ে তাহলে তার নামায আদায় হয়ে গেলেও মাকরূহের সহিত আদায় হবে।
হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ আলেম আল্লামা বুরহানুদ্দীন মরগনানী রহ. বলেন,ولا يقرأ المؤتم خلف الإمامঅর্থাৎ, মুক্তাদী ইমামের পিছনে কিরাত পড়বে না। (শরহ বেদায়াতুল মুবতাদী ১/৫৫)
মাউসূআতুল ফিকহিয়্যা-এর মধ্যে রয়েছে ,
وذهب الحنفية إلى أن المأموم لا يقرأ مطلقا خلف الإمام حتى في الصلاة السرية ، ويكره تحريما أن يقرأ خلف الإمام অর্থাৎ, এবং হানাফী মাযহাবের উলামায়ে কিরাম এই দিকে গিয়েছেন যে, মুক্তাদী ইমামের পিছনে কোন অবস্থায় কিরাত পড়বে না। এমন কি নিরবে কিরাত পড়ার নামাযেও। এবং ইমামের পিছনে কিরাত পড়া মাকরূহে তাহরীমী।
(আল মাউসূআতুল ফিকহিয়্যা আল কুয়েতিয়্যা ৩৩/৫৩)
আল্লাহ তায়াল আমাদের সকল কে ইসলামের সঠিক সমাধান জানার তাওফিক দান করুক। আমিন ইয়া রাব্বাল আলামীন।