ইতিকাফ-এর সময় মোবাইল ফোনে কুরআন তিলাওয়াত, ওয়াজ ইত্যাদি কি শোনা যাবে?
হ্যাঁ, যাবে। তবে এ সময় যথাসম্ভব নেট মোবাইল ব্যবহার থেকে দূরে থাকাই ভালো। কারণ এটা খুবই আকর্ষণীয় জিনিস। এতে বিভিন্ন নোটিফিকেশন আসে। তখন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকে সময় অপচয় হওয়ার ও বিভিন্ন অনর্থক কাজে সময় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি হারাম জিনিস দেখা বা শোনার দিকেও মন ধাবিত হতে পারে। ইউটিউবে ওয়াজ বা কুরআন তিলাওয়াতের সময় অপ্রত্যাশিত হারাম এড প্রদর্শিত হতে পারে-যা ইতিকাফ-এর ভাব গাম্ভীর্যটাকে নষ্ট করবে এবং মসজিদের আদবে ক্ষুণ্ণ করবে।
তবে এ বিকল্প হিসেবে নেট বিহীন মোবাইল ফোন থেকে মেমরিতে সংরক্ষিত কুরআন অডিও-ভিজ্যুয়াল তিলাওয়াত বা বিজ্ঞ আলেমদের ওয়াজ/ইসলামি আলোচনা শ্রবণ করা যেতে পারে।
মনে রাখতে হবে যে, ইতিকাফ-এর উদ্দেশ্য হল, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের সাথে যোগাযোগ, দুনিয়াবি কর্মব্যস্ততা, পাপাচার ইত্যাদি থেকে নিজেকে মুক্ত করে এক আল্লাহর আনুগত্যে নিবিষ্ট চিত্তে কিছু সময় অতিবাহিত করা। এটি মহান স্রষ্টা আল্লাহ সাথে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করা এবং নিজেকে পরিবর্তন করা অপূর্ব সুযোগ। এটি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত।
তাই এ সময় জামাতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়, সিয়াম পালন ইত্যাদি ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি যথাসাধ্য নফল সালাত আদায়, কুরআন তিলাওয়াত, দুআ, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, ইসতিগফার, দরুদ পাঠ, হাদিস পাঠ, ইসলামি বই-পুস্তক থেকে জ্ঞানার্জন ইত্যাদির মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করার চেষ্টা করতে হবে।
ইতিকাফকারীর জন্য মসজিদে মোবাইল-ফোন সঙ্গে রাখা এবং এর মাধ্যমে পরিবার ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজনীয় খোঁজ-খবর রাখা জায়েজ আছে। কিন্তু মোবাইলের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা, গেমস খেলা, ক্রিকেট-ফুটবল ম্যাচ ইত্যাদি দেখা কিংবা নাটক, সিনেমা বা মিউজিক ভিডিও ইত্যাদি দেখা সম্পূর্ণ নাজায়েজ ও হারাম।
মোটকথা, আমাদের ইতিকাফ যেন হয় সব অনর্থ কাজ ও পাপ-পঙ্কিলতা মুক্ত সেদিকে অবশ্যই সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। ইতিকাফ অবস্থায় এমন কিছু করা উচিৎ নয় যা এই মহৎ উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে।
আল্লাহ তাওফিক দান করুন।
আমিন।