ইবাদাতের স্বাদ এবং পর্দা
নারীর পর্দা নিয়ে যুগে যুগে যত আলোচনা, পর্যালোচনা বা সমালোচনা হয়ে আসছে, ইসলামের অন্য কোন বিধান নিয়ে তার অর্ধাংশও হয়েছে কি-না সে ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। এক দলের মতে পর্দা প্রগতির পথে এক অনতিক্রম্য বাঁধা, নারীকে অবদমিত করে রাখার প্রয়াস। অপর দলের মতে, পর্দা করা সুশৃঙ্খল এবং দায়িত্বশীল জীবনের নিশ্চয়তা, অবাধ যৌনতাজনিত অসংখ্য সামাজিক ব্যাধির প্রতিষেধক। পর্দা নারীর মানসম্ভ্রমের রক্ষাকবচ।
সালাত,সাওম,দান-সদকা সহ অন্যান্য ইবাদতের সম্পর্ক রয়েছে পর্দার সাথে। পর্দানশীন নারী-পুরুষ যেভাবে ইবাদাতের স্বাদ অনুভব করতে পারে তা বেপর্দা নারী-পুরুষ কখনোই বুঝে না।
তিন প্রকার ইবাদাতকারী রয়েছে আমাদের আশেপাশে। যেমন-
- এক. যারা ইবাদাত করে দায়ে পড়ে,
- দুই. আবার কেউ করে পরিবার তথা সমাজের চাপে,
- তিন. কেউ করে নিজের গরজে-স্বেচ্ছায়, ইসলামকে ভালোবেসে।
প্রথম দুই শ্রেনীর ইবাদাতকারী কখনো ইবাদাতের স্বাদই পায় না। দায় সারাভাবে ইবাদাত করে, স্বাদ না পাওয়াটাই স্বাভাবিক। তৃতীয় শ্রেনীর ইবাদাতকারী ইবাদাতের স্বাদ পায়৷ ইবাদাতের স্বাদ একটি ভিন্ন বস্তু। বেপর্দা নারী পুরুষ কোনদিন তা পাবে না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার সন্তুষ্টির জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বেচ্ছায় পর্দা করুন। দেখবেন ইবাদাতের স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যাবে। একটা অপার্থিব সুখ ও স্বাদ অনুভব করবেন। ইবাদাত আপনার নেশায় পরিণত হবে ইন শা আল্লাহ। তবে সে পর্দা হতে হবে একান্তই নিজের প্রচেষ্টায়, নিজের ইচ্ছায়।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর এবং শিল্প সম্মত সৃষ্টি কর্ম হলো-নারী। নারীর সবকিছুই সুন্দর, আকর্ষণীয়, মনোমুগ্ধকর। এমনটি নারীর কন্ঠও। তাই নারীকে এমনভাবে পর্দা করতে হবে তার কন্ঠ পর্যন্ত যেনো কোন পরপুরুষ না শুনে। নারীকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা এমনভাবে সৃষ্টি করছেন, নারীর কন্ঠ শুনলেও নাকি পুরুষ মুগ্ধ হয়ে ফিতনায় পতিত হয়। আসলে নারী এমনই।
বোনেরা আমার, একটু বুঝুন! বুঝার ট্রাই করুন! না বুঝার ভান করে আর কতদিন এ পৃথিবীতে টিকে থাকবেন! কেউই পারেনি এ পৃথিবীতে চিরদিন টিকে থাকতে, ফেরআউনও পারেনি। মানুষ চিরদিন এ ধরনীতে টিকে থাকতে পারে না ঠিক তবে তার সৎকর্ম বা মন্দকর্ম দ্বারা আজীবন বেঁচে থাকে মানুষের হৃদয়ে, এ পৃথিবীতে। মানুষ ইতিহাস হয়ে থাকে ভালো বা মন্দ হিসেবে।
তাই বলছি, বোন! আপনাকে বুঝতে হবে এবং মানতে হবে। একজন পুরুষ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে পারলেও একজন নারী স্বভাবত কারণেই রাস্তার ধারে বসে বা দাঁড়িয়ে সবার সামনে পাবলিক প্লেসে প্রস্রাব করতে পারে না৷ একজন পুরুষ পোশাক ব্যতীত খালি শরীরে হাঁটতে পারে। কিন্তু একজন নারী নগ্ন দেহে চলাফেরা করতে পারে না। যদি নারী এসব করতে যায় তবে সে জনসমাজে পাগল বা পশু হিসেবে বিবেচিত হবে।
অন্যদিকে ইবাদাতকারী, পর্দানশীন অর্থাৎ একজন মু’মুিন নারী সুগন্ধি ফুলের ন্যায় পবিত্র, প্রজাপতির মতো সুন্দর, চাঁদের ন্যায় মোহনীয়, প্রকৃতির প্রেমময় উপহার।
যারা ইসলামের সুমহান আদর্শকে মানতে চায় না নৈতিকতাকে বর্জন করে উগ্র আধুনিকতাকে ফলো করতে চায়, তাদের কাছে এ কথাগুলো হয়তোবা নিতান্তই অমূলক মনে হবে। কারন চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী।