হারিয়ে যাওয়া আদবের রত্ন

কথা বলার শিষ্টাচার

মহানবী (সা.) প্রায়ই মানুষকে বলতেন, “যদি মানুষ হতে চাও, আমার কাছে আসো, আমি তোমাকে শিষ্টাচার, সম্মান এবং মানবতা শেখাবো।” অনেক সময় একটি শিশু শিক্ষিত হয় এবং ধর্মীয় বা একাডেমিকভাবে যোগ্য হয়ে ওঠে, কিন্তু সে যেভাবে তার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলে, তাতে অনেক কিছুই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ইসলাম আমাদের শেখায় কীভাবে কথা বলতে হয়। আপনার সিনিয়র, অফিসের বস কিংবা পিতামাতা! সকলের সাথে কথা বলার আদব ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়।

আমরা সবাই সায়্যিদিনা মুসা (আঃ)-এর ঘটনার কথা জানি। এটি কোরআনে সূরা কাহফ, আয়াত ৬০-এ উল্লেখিত হয়েছে এবং বুখারীর প্রথম খণ্ডেও রয়েছে।

যখন সায়্যিদিনা মুসা (আঃ) একটি ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন কেউ তাকে প্রশ্ন করলো, “সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি কে?” তিনি বললেন, “আমি সবচেয়ে জ্ঞানী।” একাডেমিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি সঠিক ছিলো, কারণ মুসা (আঃ) ছিলেন নবী এবং তিনি ছিলেন আলুল আযম নবীদের একজন। কিন্তু শুধুমাত্র “আমি সবচেয়ে জ্ঞানী” এই উত্তর দেওয়ায় আল্লাহ তাআলা তাকে সংশোধন করলেন।

আল্লাহ তাআলা মুসা (আঃ)-কে একটি যাত্রায় বের হতে এবং খিজির (আঃ)-এর সাথে দেখা করতে নির্দেশ দিলেন। সূরা কাহফ-এ উল্লেখ করা হয়েছে, দুই সাগরের সংযোগস্থলে অবস্থিত এই জ্ঞানী ব্যক্তি খিজির (আঃ)-এর সাথে দেখা করার জন্য মুসা (আঃ) রওনা হলেন। খিজির (আঃ)-এর কাছে ছিলো পৃথিবীর রহস্য এবং গোপন জ্ঞান, যা মুসা (আঃ)-এর থেকে ভিন্ন একটি বিজ্ঞান ছিলো। মুসা (আঃ) তার সাথে দেখা করার জন্য প্রস্তুত হলেন।

বায়ানুল কোরআনে লেখা হয়েছে, “মুসা (আঃ)-কে এই যাত্রা করতে বলা হয়েছিলো যাতে তিনি বুঝতে পারেন যে উত্তরের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।”

এটাই আজকের শিক্ষার মূল বার্তা। কারো সাথে কথা বলার আগে, উত্তর দেওয়ার আগে, সেটা আপনার কর্মচারী হোক বা জুনিয়র বা সিনিয়র হোক, চিন্তা করুন। কথা বলার আগে ভেবে নিন, লিখার আগে চিন্তা করুন।

Exit mobile version