গোসলখানায় পেশাব করার বিধান।
শরীয়তের দৃষ্টিতে গোসল করার সময় গোসলখানায় পেশাব করার বিধান কি?
আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল রা. সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لَا يَبُولَنَّ أَحَدُكُمْ فِي مُسْتَحَمِّهِ ثُمَّ يَغْتَسِلُ فِيهِ
“তোমাদের কেউ যেন গোসলখানায় পেশাব না করে। অথচ সেখানেই সে গোসল করে থাকে।”1
আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন রহ. উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন,
“মানুষ যেখানে গোসল করে সেখানে যেন পেশাব না করে। কারণ এতে মনে ওয়াসওয়াসা (কুমন্ত্রণা) সৃষ্টি হয়। উদাহরণ স্বরূপ, সে মনে মনে বলবে: আমার কাপড় বা শরীরে পেশাব লাগল কি না। এভাবে মনে সন্দেহের উদ্রেক হবে। কারণ পানির ছিটার সাথে গায়ে বা কাপড়ে পেশাব লেগেছে কি না সে সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয়।”2
বর্তমান যুগের ইটপাথর দ্বারা মোজাইক করা গোসলখানায় কি পেশাব করা জায়েয হবে?
আমরা জানি, বর্তমান যুগে ইটপাথর দ্বারা মোজাইক করা টয়লেটগুলোতে তৎক্ষণাৎ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকে। সুতরাং সেখানে পেশাব করা হলেও তা সাথে সাথেই পাইপ বেয়ে দূরে চলে যায়। সুতরাং এ ক্ষেত্রে সেখানে পেশাব করতে কোন অসুবিধা নেই।
তবে যদি পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকে বরং গোসলের স্থানে পানি জমা থাকে বা কাঁচামাটি বা বালুময় স্থান হয়-যেখানে পানি পড়লে সেখানেই পানি শুষে নেয় তাহলে সেখানে পেশাব করা ঠিক নয়। কারণ এতে সেখানে পেশাব করা হলে তা পানির সাথে উঠে এসে গায়ে বা শরীরে লাগার সম্ভাবনা রয়েছে যা মনের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টির কারণ হবে।
আবদুল্লাহ ইবনে মাজাহ (রহঃ) বলেন, আমি মুহাম্মদ বিন ইয়াজিদ (রহঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি আলী বিন মুহাম্মদ আত-তানাফিসী (রহঃ) কে বলতে শুনেছেন,
“এ নির্দেশ সেই সময়ের যখন গোসলখানা কাঁচা ছিল। যেহেতু বর্তমানকালে গোসলখানা ইট ও চুনা দ্বারা নির্মিত হয়। তাই যদি কেউ পেশাব করার পর সে সেখানে পানি ঢেলে দেয়, তবে তাতে কোন দোষ নেই।”3
ইবনে কাইয়েম রহ. উপরোক্ত মত ব্যক্ত করে বলেন, এটাই জুমহুর তথা অধিকাংশ ফিক্বাহবীদদের অভিমত।
- তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ। এ তিনটি গ্রন্থের অধ্যায়: পবিত্রতা আর অনুঃ গোসলখানায় পেশাব করা অপছন্দনীয়। ↩︎
- লিকাউল বাবিল মাফতুহ ৩০/১৬৮ ↩︎
- সুনান ইবনে মাজাহ, ৩০৪ ↩︎