গণতন্ত্রের অনেক সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা আছে। গণতন্ত্রের দুটি মৌলিক বিষয় আছে। একটি হলো- জনগণের সমর্থন নিয়ে তাদের ওপর শাসন করার অধিকার লাভ করা। অপরটি হলো- অধিকাংশ মানুষের সমর্থনে শাসনব্যবস্থা ও বিধি নির্ধারণ করা।
গণতন্ত্রের প্রথম বিষয়টি ইসলামের নির্দেশনার সাথে হুবহু মিল রয়েছে। আর দ্বিতীয় বিষয়টি কুফরির শামিল। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীর মানুষের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট শাসনব্যবস্থা ও বিধি দিয়েছেন। পৃথিবীর সব মানুষ একত্রিত হয়েও যদি এর বাইরে কোনো ব্যবস্থা ও বিধি গ্রহণ করে, সেই অধিকার ইসলাম তাদের দেয়নি। এটি আল্লাহ তা‘আলার সাথে বিদ্রোহের শামিল।
পক্ষান্তরে রাজতন্ত্রের প্রথম দিকটি হচ্ছে রাজা জোর করেই জনগণের শাসন ক্ষমতা লাভ করবে এবং রাজার বংশেই পর্যায়ক্রমে রাজা হবে, যোগ্যতা থাক বা না থাক। এটি সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ইসলামে এভাবে জোর করে শাসন করা, ক্ষমতা ধরে রাখা নীতিগতভাবে বৈধ নয়।
দ্বিতীয় দিকটি হচ্ছে, রাজা জোর করে শাসন কার্য পরিচালনা করলেও তিনি ইসলামী আইন মেনে প্রশাসন চালাবেন অথবা স্বেচ্ছাচারী হয়ে নিজের মতো চালাবেন। যদি রাজা ইসলামী আইন মেনে প্রশাসন চালান, তবে বুঝতে হবে- এ ক্ষেত্রে ইসলাম রাজার ইখতিয়ারে চলে, তিনি যতোটুকু এলাউ করবেন, ঠিক ততোটুকুই; একটুও বেশি নয়। রাজা যদি কমবেশি করেন তাহলে রাজার বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। এখানে মানুষ অনেক ক্ষেত্রে আল্লাহর দাস হওয়ার পরিবর্তে রাজার দাসে পরিণত হয়।
আর যদি রাজা ইসলামী আইন না মেনে প্রশাসন পরিচালনা করেন, তবে তো কথাই নেই!!!
সুতরাং প্রচলিত গণতন্ত্রের একটি দিক ইসলাম গ্রহণ করে এবং অপরটি কঠোরভাবে বর্জন করে। আর প্রচলিত রাজতন্ত্রের মধ্যে এমন কোনো দিক নেই, যেটিকে ইসলাম পূর্ণ সমর্থন করতে পারে।
রাজাই যেখানে সব, রাজার আদেশই যেখানে সব আইনের ভিত্তি!! সেখানে ইসলাম কোথায়?! কিছু বিচ্ছিন্ন বিধি-নিষেধের নাম ইসলাম নয়। মানুষ রাজা-বাদশাহসহ সকল মানুষের দাসত্বকে অস্বীকার করে কেবল আল্লাহ তাআলার দাসত্ব করবে, তাঁর কাছে পুর্ণ আত্মসমর্পণ করবে- এটিই ইসলাম। রাজাকেও এ ঘোষণা দিতে হবে যে, তিনি জনগণ না চাইলে তাদের ওপর শাসন করা থেকে সরে যাবেন এবং তিনি যা কিছু আদেশ দিবেন সেসব কেবল আল্লাহর গোলাম হিসেবেই দিবেন। কোনো রাজা কি আজো এমন ঘোষণা দিতে পেরেছেন?!
এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না,
গণতন্ত্রে নীতিগতভাবে সার্বভৌমত্বের যে ধারণা পোষণ করা হয় তা ইসলাম সমর্থন করে না; এটা কুফরী চিন্তা। তবে এটাও ঠিক যে, কার্যক্ষেত্রে জনগণের সার্বভৌমত্বের অস্তিত্ব কোথাও নেই। প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্রে যা আছে তা হলো, জনগণের সার্বভৌমত্বের নামে দলীয় শাসন কিংবা স্বেচ্ছাচারিতা। এ কারণে আধুনিক রাজনীতিবিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেকেই সার্বভৌমত্বের ধারণাকে অবাস্তব আখ্যায়িত করেছেন এবং কেউ কেউ এ ধারণাকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে বাদ দেওয়ার কথাও বলেছেন। যেমন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ক্রাবি (Kraby) বলেন,
The notion of sovereignty is no longer recognized among civilized people and should be expunged from political theory.
‘সভ্য মানুষের কাছে আর সার্বভৌমত্বের ধারণা স্বীকৃত নয়। সুতরাং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তত্ত্ব থেকে একে বাদ দেয়া দরকার।’
পক্ষান্তরে মুসলিম দেশগুলোতে প্রচলিত কর্তৃত্ববাদী রাজতন্ত্রে কোথাও কোথাও [যেমন- সৌদি আরবে] আল্লাহর সার্বভৌমত্বের কথা স্বীকৃতি দেয়া হলেও সেখানে কার্যত সার্বভৌম ক্ষমতার একান্ত অধিকারী হলেন রাজা-বাদশাহ। সেখানে রাজার ইচ্ছাই চূড়ান্ত; তাঁর কথাই আইন। কারো কাছে তাঁকে জবাবদিহি করতে হয় না। তিনি আইনের ঊর্ধ্বে বিবেচিত হন। তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা যায় না। তাঁর অন্যায় পদক্ষেপের কোনো প্রতিবাদ করা যায় না। সেখানে যতটুকু ইসলামী আইন মেনে চলা হয়, তা একান্ত রাজার ইখতিয়ারেই চলে, তিনি যতটুকু অনুমোদন করবেন, ঠিক ততোটুকুই; একটুও বেশি নয়।
সুতরাং সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে গণতন্ত্র হোক বা রাজতন্ত্র হোক উভয়ের অবস্থান কার্যগত দিক থেকে প্রায় কাছাকাছি। কোনো তন্ত্রই আল্লাহ তা‘আলার একচ্ছত্র সার্বভৌম ক্ষমতা মেনে চলে না। গণতন্ত্রে জনগণের সার্বভৌমত্বের কথা বলা হলেও বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই; বরং এর নামে চলে দলীয় শাসন বা স্বেচ্ছাচার। আর কিছু মুসলিম দেশের সংবিধানে রাজতন্ত্রে আল্লাহ তা‘আলার সার্বভৌমত্বের কথা স্বীকার করা হলেও তা একান্তই কাগুজে-কলমে। সেখানে বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই; বরং এর নামে প্রায় সর্বাংশে চলে পারিবারিক বা গোষ্ঠীগত শাসন বা স্বেচ্ছাচার।
এরপরও আমরা মনে করি, যেসব দেশে রাজার শাসন চলছে, সেসব দেশে গণতন্ত্রের নামে বিশৃঙ্খলা কাম্য নয়, আবার যেসব দেশে গণতন্ত্র চলছে সেসব দেশে জোর করে ক্ষমতা গ্রহণের নীতি বা রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা কাম্য নয়।
প্রতিটি দেশ ও অঞ্চলের নিজস্ব রাজনৈতিক প্রক্রিয়া মেনে নিয়েই দেশ শাসন করা উচিত। আর শাসন করা উচিত কেবল আল্লাহ তা‘আলার গোলাম ও প্রতিনিধি হিসেবে।
সুতরাং যেসব দেশে রাজতন্ত্র চলছে, সেখানে রাজা যদি ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী রাজ্য শাসন করেন, তাহলে শরীয়তের দৃষ্টিতে তা মেনে নিতে কোনো অসুবিধা নেই। এমনকি, তিনি যদি তার পরিবার থেকে কাউকে তার স্থলাভিষিক্ত করে যান, তাতেও কোনো অসুবিধা নেই, যদি তিনি যোগ্য ও ন্যায়পরায়ণ হন এবং ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী রাজ্য শাসন করেন।
স্মতর্ব্য, রাজতন্ত্র চাইলেও ইসলামকে বাস্তবায়ন করতে পারে, অনুরূপ গণতন্ত্র চাইলেও ইসলামকে বাস্তবায়ন করতে পারে। রাজতন্ত্রে যখন রাজা ইসলাম বাস্তবায়ন করে, তখন সেটি ব্যবহারিক দৃষ্টিকোণ থেকে ইসলামী শাসনব্যবস্থাই হবে, যদিও ইসলাম রাজতন্ত্রের শুরুটা কখনো সমর্থন করে না। অনুরূপ গণতন্ত্রে যখন সরকারপ্রধান জনগণের মতামতের ভিত্তিতে ইসলাম বাস্তবায়ন করে, তখন সেটিও কার্যগত দিক থেকে ইসলামী শাসনব্যবস্থাই হবে, যদিও গণতন্ত্রের কিছু নীতি ইসলাম সমর্থন করে না।
কোনটি উত্তম ব্যবস্থা?
বাস্তবতার দৃষ্টিকোণ থেকে রাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের মধ্যে কোনটি অধিকতর উত্তম ব্যবস্থা?
এ প্রশ্নের সহজ উত্তর হলো-
অবশ্যই গণতন্ত্র, যদি সেটা যথার্থ অর্থেই গণতন্ত্র হয় এবং এর মূল্যবোধ, নীতি ও আচার-আচরণ সঠিকভাবে মেনে চলা হয়। আর যদি তথাকথিত বিকৃত গণতন্ত্র হয়, তাহলে সেই দেশের জনগণের মতো অভাগা নাগরিক কোথাও খুঁজেও পাওয়া যাবে না। খুন, গুম, দুর্নীতিতে ভরপুর হয়ে উঠবে সেই দেশ। গণতন্ত্র তাই আমার কাছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ শাসন ব্যবস্থা বলে মনে হয়। বর্তমানে গণতন্ত্র যেভাবে চর্চা করা হয় তাতে বিশ্বের সবচাইতে স্বচ্ছ নির্বাচন ব্যবস্থাকেও নির্ভুল মনে হয় না, মনে হয় সেখানেও দুর্নীতি আছে। যে কোনোভাবেই হোক নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করা যায় এবং এমনভাবে করা যায়, মনেই হবে না যে, এখানে কোনো প্রভাবক আছে। তারপরেও এ ব্যবস্থায় ক্ষমতা পরিবর্তনের একটা সুযোগ থাকে।
পক্ষান্তরে রাজতন্ত্র তুলনামূলক অধিক খারাপ একটা শাসনব্যবস্থা। রাজার যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। তবে রাজতন্ত্রের একটা সুফল আছে সেটা হচ্ছে, রাজা যদি সৎ ও ন্যায়পরায়ণ হয়, সেই দেশের উন্নয়ন খুব ভালো এবং দ্রুত হয়। সকল ক্ষমতা একজনের হাতে ন্যস্ত থাকায় জরুরি মুহূর্তে রাজা দ্রুত এবং চটজলদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারে। আবার নিরষ্কুশ রাজতন্ত্রে রাজা বেশি দিন ধরে ক্ষমতায় থাকার দরুন অভিজ্ঞ হয় এবং তিনি সেই অভিজ্ঞতাকে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে রাজ্যের মানুষের সেবায় নিয়োজিত করতে পারে।
অধিকন্তু, রাজতন্ত্রে রাজা- যদি তিনি প্রকৃতই ইসলামপ্রেমী হন এবং কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করতে সচেষ্ট হন- সমাজে যতটা সহজে ইসলাম বাস্তবায়ন করতে পারে, গণতন্ত্রে ততটা সহজ নয়। কারণ, গণতন্ত্রে যেহেতু অনেক প্রভাবক শক্তি থাকে এবং তাদেরকে প্রায়ই সন্তুষ্ট রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হয়, তাই এতে জনগণ চাইলেও সবসময় সমাজে পরিপূর্ণরূপে ইসলাম বাস্তবায়ন করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না।
তবে রাজতন্ত্রের প্রধান অসুবিধা হলো-
উত্তরাধিকার সূত্রে অনেক সময় অনভিজ্ঞ, অযোগ্য ও অসৎ ব্যক্তি রাজা হতে পারে। এতে করে প্রশাসনের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। আবার নিরষ্কুশ রাজা তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রবল স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে। এমন সময় রাজ্যের অধিকাংশ প্রজাই প্রথমে ভয়ে এবং পরে ঐতিহ্যগতভাবে অধীনতা মেনে নেয়। বলতে গেলে তখন তারা তার ইচ্ছা ও সিদ্ধান্তের একান্ত গোলাম হয়েই বসবাস করে।
মোটকথা, রাজতন্ত্রে কিছুটা সুবিধা থাকলেও এর ক্ষতির দিকটা অধিকতর ভয়ঙ্কর ও দীর্ঘস্থায়ী, বিশেষ করে রাজা যদি স্বেচ্ছাচারী ও বদদীন হন। গণতন্ত্রে সরকার স্বেচ্ছাচারী হলে- দেরিতে হলেও- ক্ষমতা পরিবর্তনের একটা সুযোগ থাকে; কিন্তু রাজতন্ত্রে ক্ষমতা পরিবর্তনের সেই সুযোগ নেই।
তাই রাজতন্ত্রে প্রজাসাধারণকে রাজার সকল স্বেচ্ছাচারিতা ও জুলম যুগের পর যুগ নীরবে-নিভৃতে সহ্য করে যেতে হয়। এ প্রসঙ্গে দার্শনিক প্লেটোর এ মন্তব্যটি যথার্থ মনে হয়-
‘রাজতন্ত্র সর্বাপেক্ষা উত্তম সরকার, তবে এর বিকৃতরূপ [অর্থাৎ স্বেচ্ছাচারিতা] হলো সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট ধরনের সরকার।’
চলমান বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিচার থেকে যদি বলা হয় যে, রাজতন্ত্র না গণতন্ত্র কোনটা উত্তম- এ প্রশ্নের সহজ উত্তর হলো:
কোথায় কোন্ ব্যবস্থা উত্তম হবে- সেটা দেশের পরিবেশ ও জনগণের সার্বিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। পৃথিবীর সব দেশের পরিবেশ ও জনগণের অবস্থা এক নয়।
কেউ কেউ মনে করেন যে, যেসব দেশের নাগরিকরা সকলেই বা প্রায় সকলেই শিক্ষিত সেসব দেশের জন্য গণতন্ত্র আর অন্যান্য দেশের জন্য রাজতন্ত্র বা একনায়কতন্ত্রই ভালো। তবে এ ক্ষেত্রে একটা কথা হচ্ছে- মানসিক ও নৈতিকভাবে উন্নত না হয়ে কেবল পুঁথিগতভাবে শিক্ষিত আর অশিক্ষিত প্রায় একই জিনিস।
আমার পর্যবেক্ষণ হলো-
মুসলিম সংখ্যালঘু দেশগুলোতে মুসলমানদের ন্যায্য নাগরিক অধিকার আদায়ের জন্য গণতন্ত্র অধিকতর কার্যকর ব্যবস্থা, যদি এর মূল্যবোধ ও মূলনীতিগুলো সঠিকভাবে চর্চা ও প্রতিপালন করা হয়ে থাকে।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশসমূহের জন্যও বর্তমানে রাজতন্ত্রের তুলনায় গণতন্ত্রই- যদি তাকে সঠিকভাবে বিকশিত হতে দেওয়া হয়- ইসলামপন্থীদের জন্য ক্ষমতা অর্জন, ইসলামী বিধিবিধান বাস্তবায়ন এবং নিজেদের ন্যায্য নাগরিক অধিকারসমূহ সংরক্ষণের জন্য অধিক সহায়ক ও অধিকতর নিরাপদ ব্যবস্থা।
এ কারণে মুসলিম বিদ্বেষী মোড়লরা প্রায় সকল মুসলিম দেশে প্রকৃত গণতন্ত্রের চর্চাকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করে চলছে এবং বিশ্ব মোড়লরা যেখানে বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে নানা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাধা-নিষেধ আরোপ করছে, ক্ষেত্রবিশেষে সামরিক হস্তক্ষেপও করছে, সেখানে তারা কিছু কিছু মুসলিম দেশে নিজেদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ ও অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য রাজতন্ত্রের নগ্ন পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে এবং ঐসব দেশের রাজা-বাদশাহরাও নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখার হীন স্বার্থে দীন, দেশ ও জনগণের স্বার্থকে বিকিয়ে দিয়ে তাদের একান্ত ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
অধিকন্তু, বর্তমানে রাজতন্ত্রে রাজা-বাদশাহদের অধিকাংশই তাঁদের ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রবল স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠছে। তাঁরা প্রজাসাধারণের সামান্য ন্যায্য সমালোচনা ও প্রতিবাদকেও সীমাহীন ভয় পায়। বলতে গেলে তাদের স্বার্থ ও অভিলাষের মধ্যে সামান্য বিঘ্ন তৈরি হয়-এরূপ কোনো কাজকে তারা মোটেরওপর সহ্য করছে না, চাই তা প্রজাদের নাগরিক অধিকার সংশ্লিষ্ট ব্যাপার হোক কিংবা তাদের ধর্মীয় বিধিবিধান সংক্রান্ত বিষয় হোক।
যেমন- বর্তমানে এমন মুসলিম রাজতান্ত্রিক দেশও রয়েছে, যেখানে রাজা-বাদশাহদের রোষের শিকার হয়ে অনেক লেখক, সাংবাদিক এবং আলিম, খতীব ও ধর্মীয় স্কলারগণ দীর্ঘদিন ধরে কারাবাস যাপন করছেন এবং নানা নির্যাতন ভোগ করছেন।