ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজের কমেন্ট বক্সে দেখবেন অনেকেই অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করছে। অনেকেই ইসলামকে ‘রক্ষা’ করার জন্য, ইসলামের অপমান সহ্য করতে না পেরে ঐ পেইজকে, কোনো ব্যক্তিকে গালাগালি করে। কেউ কেউ তো আরেকটু এগিয়ে গিয়ে তার জন্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে! যার সাথে ঝগড়া করছে, তাকে তো গালি দেয়, তার বাবা-মাকেও গালি দেয়।
রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদের উপর কাফিররা নির্যাতন করেছে, খোদ রাসূলুল্লাহকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তারা মানসিকভাবে নির্যাতন করার পাশাপাশি শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। তাঁর উপর উটের নাড়িভুঁড়ি ছুঁড়ে মেরেছে, তাঁকে মক্কা ত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। মুনাফিকরা তাঁর স্ত্রীকে উপবাদ দিয়েছে।
ইসলামের জন্য যাকে এতো নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে, তিনি কি কখনো কাফির-মুনাফিকদের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে গালাগালি করেছেন?
অশ্লীল কথা বলেছেন?
আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন:
“রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো অশ্লীল ও কটুভাষী ছিলেন না, অশ্লীল শব্দও ব্যবহার করেননি।”
[জামে আত-তিরমিজি: ২০১৬]
মানুষ ফেসবুকে কথায় কথায় অন্যকে ‘জারজ সন্তান’ বলে, জন্ম-পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে। হতে পারে সে কোনো খারাপ কাজ করেছে, কিন্তু তার খারাপ কাজের জন্য তার মা-বাবাকে টেনে আনার দরকার কী?
তা-ও এমন বিষয় নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, যা সম্পর্কে কোনো জ্ঞানই নেই।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাকে ‘জারজ সন্তান’ বলেছেন, সে আসলেই জারজ সন্তানই ছিলো। আল্লাহ রাসূলুল্লাহকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটা জানিয়ে দিয়েছেন।
গালাগালি করা একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। একজন মুমিন কখনো গালিবাজ হতে পারে না। ইসলাম এমন অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ কাজের প্রশ্রয় দেয় না। মুনাফিকের চারটি বৈশিষ্ট্যের কথা বলতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীলভাবে গালাগালি করে।”
[সহীহ বুখারী: ৩৪]
অন্যদিকে মুমিনের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য বলতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
- মুমিন কখনো দোষারোপকারী ও নিন্দাকারী হতে পারে না
- অভিসম্পাতকারী হতে পারে না
- অশ্লীল কাজ করে না এবং
- কটুভাষীও হয় না [জামে আত-তিরমিজি: ১৯৭৭]
ফেসবুকে সারাদিন অন্যের নিন্দা করা, অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করা, আরেকজনের দোষ খুঁজাকে ‘ক্যারিয়ার’ হিশেবে নেওয়াটা একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। ইসলামের নামে এসব কাজ করা হলেও এগুলো ইসলামিক না। ইসলাম সত্য-সুন্দরের ধর্ম, অশ্লীল-মন্দের ধর্ম না। অশ্লীলতার স্থান, গালাগালি করার স্থান ইসলামে নেই।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“আল্লাহ অশ্লীল ও কটুভাষীকে ঘৃণা করেন।”
[জামে আত-তিরমিজি: ২০০২]
ইসলামের সৌন্দর্য
(১৮তম পর্ব)