দুনিয়াটা কি মন্দ লোকের!
অন্য দশটি রাতের মতো ঘুমিয়েছিলো পৃথিবীর বুকে রাজত্ব করা সম্প্রদায়গুলো। অন্য দশটি সকালের মতো সেদিনও সকাল হলো কিন্তু, পৃথিবীবাসী দেখলো সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হচ্ছে। উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা নিয়ে পৃথিবীর বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী মানুষগুলোর মনে আজ কিয়ামত দিবস নিয়ে কোনো দ্বিধাই কাজ করছে না, স্বচ্ছ জলের ন্যায় পরিষ্কার কিয়ামত সন্নিকটে,সর্বশেষ আলামত গুলো আজ প্রকাশিত। কিন্তু, আফসোস যারা ইতিপূর্বে ঈমানদার ছিলো তারা ব্যাতীত আর কারো তাওবা তখন কাজে দিলো না, পৃথিবীতে ঈমান এনে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার সুযোগ এক রাতের ব্যাবধানেই ফুরিয়ে গেলো।
এরকম একটি রাত আজকের দিনে প্রগতিশীল ও বস্তুবাদী জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষগুলোর কাছে কল্পনা মনে হলেও মুমিন হিসেবে আপনি জানেন এরকম একটা সময় আসবেই, আপনি আমি সেদিকেই অগ্রসর হচ্ছি। আপনি জানেন সেইখানে তাওবা করার সুযোগ শেষ হবে আর ঈমান আর কুফর চিরতরে পৃথক ও সুস্পষ্ট হয়ে যাবে।
আপনি মানেন নবীজী ﷺ এর সেই বাণী যেখানে পৃথিবীর বুক থেকে শেষ মুহূর্তে প্রতিটি মুমিন প্রাণ মুছে যাওয়ার বর্ণনা দেয়া হয়েছে এভাবে-
“এই সময় আল্লাহ তাআলা অত্যন্ত আরামদায়ক একটি বাতাস প্রেরণ করবেন। এই বাতাস সকল মুসলিম ও মুমিনের বগলে গিয়ে লাগবে এবং সকল মুমিনের জান কবজ করে নিয়ে যাবে। তারপর কেবল মন্দ লোকেরাই এই পৃথিবীতে বাকি থাকবে। তারা গাধার ন্যায় থাক আমার সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হবে।এদের ওপরই কিয়ামত সংঘটিত হবে।”
[সহিহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯৩৭]
খেয়াল করুন, পৃথিবীতে একদম শেষ সময়ে অবশিষ্ট থাকবে তারাই যারা আল্লাহর অবাধ্য, ঈমানহীন, কুফর শিরকে লিপ্ত। এরা তারাই যারা আল্লাহর বিধানকে বোঝা মনে করে আর দুনিয়ার সাথে যাদের মোহব্বত অত্যধিক। এদেরকে দিয়েই কিয়ামত দিবসের সূচনা হবে, সবচেয়ে ভয়াবহতম দিন আল্লাহ এদেরকেই দেখাবেন, এদেরকেই আগুন তাড়া করে সেদিন হাশরের ময়দানে নিয়ে আসবে।
অর্থাৎ, পৃথিবীটা আল্লাহর অবাধ্য বান্দাদের জন্যই দিনশেষে।তারা সেখানে আমোদপ্রমোদ করবে এবং সেটাই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। মুমিনের জন্য তো পরকাল যেটা চিরস্থায়ী, যেখানে আল্লাহর সুবিচার প্রতিষ্ঠিত আর সেই সুবিচারের সর্বোচ্চ সুবিধা তো তাঁর মুমিন বান্দাদের পক্ষেই থাকবে। অর্থাৎ, দুনিয়ার জন্য মোহাব্বত তো হবে মন্দ লোকদের, কাফের মুশরিকদের আর বিপরীতে আমাদের মোহাব্বত তো হবে জান্নাতের জন্য,পরকালের সুদিনের জন্য।
তাই কাফেররা উপভোগ করছে দুনিয়া উপভোগ করতে দিন, আমরা দ্বীনের উপর থাকলেই তো আলহামদুলিল্লাহ। অভাব আছে, অভাবেই থাকি সন্তুষ্ট তবুও আল্লাহর বিধানের উপরই না হয় থাকলাম আর এটাই তো আমাদেরকে তাদের উপর সেরা বানিয়ে রাখবে, আল্লাহর কাছে মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ হবে।
তাই কেউ যদি দ্বীনি দরিদ্র কিংবা অত্যাচারিত হন আর আপনার মনে প্রশ্ন উঁকি দেয়-“দুনিয়াটা কি আসলেই মন্দ লোকের?”
তবে মনে রাখবেন,”হ্যা দুনিয়াটা মন্দ লোকেরই, আপনার জন্য তো জান্নাত।”