দরজার ওপাশে কে দাঁড়ানো
কারো ঘরে প্রবেশ করার জন্য আপনি সালাম দিলেন, অনুমতি চাইলেন। কিন্তু ঘরের লোকজন আপনার কণ্ঠস্বর শুনে চিনতে পারলো না। কোনো কোনো বাসায় অবশ্য Peephole থাকে। ঘরের ভেতর থেকে জিজ্ঞেস করতে হয় না, বাইরে কে আছেন। দরজার ফুটো দিয়েই দেখা যায় বাইরে কে দাঁড়ানো।
বেশিরভাগ ঘরে তো peephole থাকে না। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের বাড়িগুলোতে তো থাকেই না বলা যায়। তো বাইরের একজন লোককে তারা না চিনে দরজা খুলে ভেতরে আসতে দিবে। তাদেরও তো প্রাইভেসি আছে।
ঘরের ভেতরের লোকেরা যদি প্রশ্ন করে- কে?
বেশিরভাগ সময় আমরা জবাব দিই- ‘আমি!’
– আমিটা কে?
– আরে আমি, আমাকে চিনছো না?
নিজের নামটা বলতে আমরা সঙ্কোচবোধ করি। সরাসরি নিজেদের নাম বলে দিলে গৃহকর্তা/গৃহকর্তীর আমাদেরকে চিনতে সুবিধা হয়। তা না করে আমরা টালবাহানা করি। ইসলাম এক্ষেত্রে কী বলে? গৃহকর্তার প্রাইভেসির স্বার্থে আমাদের নামটা বলা উচিত?
নাকি ‘আমি-আমি’ বলাটাই যথেষ্ট?
জাবির (রাদিয়াল্লাহু আনহু) একবার রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দরজায় নক করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানতে চাইলেন- “কে?”
জবাবে জাবির (রা:) নিজের নাম না বলে বললেন, “আমি।”
‘আমি’ শুন কী বুঝার উপায় আছে, এই আমি-টা কে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরকম নাম না বলে ‘আমি-আমি’ বলাটা অপছন্দ করলেন। [সহীহ বুখারী: ৬২৫০]
তাহলে আমাদের কি নাম বলা উচিত?
দেখি, উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কিভাবে রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে ঢুকেন।
একবার উমর (রা:) রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট আসলেন। তখন তিনি কাঠের মাচানে ছিলেন। উমর (রা:) বললেন:
“আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ! আসসালামু আলাইকুম। ‘উমর’ কি প্রবেশ করবে?”
[সুনানে আবু দাউদ: ৫২০১]
তারমানে, কারো ঘরে প্রবেশ করার সময় সালাম দিয়ে অনুমতি নিতে হবে। গৃহকর্তা যদি পরিচয় জানতে চায়, তাহলে ভণিতা না করে সরাসরি পরিচয় দিতে হবে।
ইসলামের সৌন্দর্য
(২৬তম পর্ব)