দ্বীন নাকি দুনিয়া
‘দ্বীন ও দুনিয়া’ উভয়ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার এ সিদ্ধান্ত কোন প্রেক্ষাপটে নিয়েছিলেন?
এমন একটি প্রশ্ন যখন শায়খ তাওফিক চৌধুরীকে করা হয়, (যিনি মদীনা ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন এবং একইসাথে একজন ভালোমানের ডাক্তারও) জবাবে তিনি বলেন,
‘আসলে মদীনা ইউনিভার্সিটি আমার মাকসাদ ছিল না। আমার প্রবল ইচ্ছে ছিল যে ইসলামের জ্ঞানে নিজেকে সমৃদ্ধ করবো, সে নিয়তকে পরিপূর্ণ ভাবে বাস্তবায়ন করবার জন্য আমি আরবী ভাষা শেখার কথা ভাবি।
মসজিদে একজন এরাবিক প্রফেসরের কাছে শেখার চেষ্টা করি। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবী ভাষা শিক্ষা কোর্সের ডিপ্লোমা করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছিলাম। এমনকি এ উদ্দেশ্যেই একজন আরব নারীকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করি। কিন্তু কোন প্রচেষ্টা সফলতার মুখ দেখেনি।
অতঃপর সিদ্ধান্ত নেই মদীনা ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেয়ার। বারংবার রিজেক্ট হওয়া সত্ত্বেও প্রতি সপ্তাহে আমি তাদের কাছে নিজের ডকুমেন্টস পাঠিয়ে যাচ্ছিলাম। অবশেষে আমার ইন্টারভিউয়ের দিন, আমাকে বলা হলো, আপনিই সেই ব্যক্তি নন কি যিনি আমাদের কাছে প্রতি সপ্তাহে মেইল করতেন? আমি জবাব দিলাম, জ্বি আমিই সেই। আলহামদুলিল্লাহ যে আপনারা আমার আবেদনে রেসপন্স করেছেন, নতুবা আমি এরকম পাঠাতেই থাকতাম!!
যাইহোক, এরপর মদীনায় থাকাকালীন আমি ইসলামের প্রথিতযশা সব আলেমদের সম্বন্ধে জানতে থাকলাম। জানলাম ইমাম শাফে’ঈ সম্পর্কে যে তিনি মৃত্যুশয্যায় আফসোস করে বলেছিলেন যে, ‘আমি আমার জীবনের অর্ধেকটা সময় কিভাবেই না ব্যয় করে ফেললাম! আমি চিকিৎসাবিদ্যার কিছুই তো শিখিনি! ’
ইমাম আন নববী উল্লেখ করেছেন, ‘সকল উলামায়ে কেরাম এ বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সম্পদ হচ্ছেন আলেমগণ এবং চিকিৎসাবিদগণ! হৃদয়ের এবং শরীরের চিকিৎসক। আমি যদি উভয়টির মাঝেই শামিল হতে পারতাম!’
আমি ঠিক এ কথাটিই নিজ জীবনে কাজে লাগাবার চেষ্টা করেছি৷ আল্লাহর রহমতে এখন কিছু কাজ করতে পারছি দুই সেক্টরেই। সবটাই তাঁর মেহেরবানি। ’