কমন মিস্টেকস ইন রামাদান – তারাবির নামাজ শেষ করুন
আজ আমি যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চাই তা হলো তারাবির নামাজ। রোজার সময় আমরা সবাই তারাবির নামাজের ব্যাপারে যত্নশীল হই। অনেক মসজিদে তারাবির নামাজ দেরিতে পড়া হয়, বিশেষ করে যখন এশার নামাজের সময় দেরিতে হয়। পরের দিন হয়তো অনেকের কাজ থাকতে পারে, তাদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার তাগাদা থাকে কারণ তাদের তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে। ব্যাপারটা অবশ্যই বোধগম্য। এক্ষেত্রে আপনি তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যেতে পারেন, এবং আপনার সমর্থ্য অনুযায়ী বাসায় নামাজ পড়ে নিতে পারেন।
কিন্তু আজ আমি যেই বিষয়টির প্রতি আলোকপাত করছি তা হলো অধিকাংশ মানুষ মসজিদে আসে তারাবির নামাজ পড়তে, কিন্তু তারা তা শেষ করে না, নিজের ইচ্ছামত চার রাকাত, বা আট রাকাত পড়ে চলে যায়। ধরুন এলাকার ইমাম প্রতিদিন ৮ রাকাত বা ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়েন, কিন্তু কিছু লোক মাঝপথে নামাজ ছেড়ে চলে যায়। আপনার কি মনে হয় তারা বাড়ি ফিরে যায়?
না, তারা বাইরে গিয়ে রাস্তাঘাটে গল্প গুজব করে, বাসায় গিয়ে টিভি দেখে। কাজের অজুহাত দেখিয়ে তারা তারাবির নামাজ শেষ না করে চলে আসে, কিন্তু তারা বাসায় ফিরে ঘুমায় না। যদি এমনটা হয়ে থাকে, তবে এই সমস্ত লোকের তাদের সিদ্ধান্তের মূল্যায়ন করতে হবে, কারণ রাসূল (সা.) বলেছেন-
ইমামের সাথে যদি কোন লোক নামাযে শামিল হয় এবং ইমামের সাথে নামায আদায় শেষ করে তাহলে সে লোকের জন্য সারা রাত নামায আদায়ের সাওয়াব লিপিবদ্ধ করা হয়।
[তিরমিজি: ৮০৬]
এই হাদিসটি জানার পর আপনি কি এই পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হতে চান?
শুধুমাত্র গল্প-গজব করার জন্য বাইরে যেতে চান? আজ থেকে অঙ্গীকার করুন যে মসজিদে তারাবির নামাজ পড়তে গেলে পুরো নামাজ আপনি পড়বেন।
তবে এক্ষেত্রে ইমামদের জন্যও একটি বার্তা রয়েছে। ইমামরা যেন নামাজ আদায়কারীর জন্য তারাবির নামাজ পড়া সহজ এবং সম্ভব করে তোলেন। এমন নয় যে তারাবির নামাজ অনেক লম্বা পড়তে হবে, বা পুরো কুরআন খতম করতে হবে। ইমাম আহমেদ (রহ.) এবং ইমাম মালিক (রহ.) বলেছেন একজন ইমামের উচিত তার পেছনে যারা নামাজ পড়ছেন তাদের দিকে খেয়াল রাখা। মুসল্লি যতটুকু নিতে পারবে একজন ইমামের উচিত সেই অনুযায়ী নামাজ পড়ানো। নামাজ খুব বেশি ছোট বা খুব বেশি বড় যেনো না হয়। আর আপনিও নিশ্চিত করুন যে মাঝপথে আপনি তারাবির নামাজ ছেড়ে চলে যাবেন না।
প্রসঙ্গক্রমে কিছু লোক বলে, আজ তারাবির নামাজে দুই ইমাম নেতৃত্ব দিয়েছেন। ধরুন একজন ইমাম অর্ধেক তারাবির ইমামতি করলেন, অন্য আরেক ইমাম বাকি অর্ধেকের। এক্ষেত্রে সেই লোক বলে আমি প্রথম ইমামের ইমামতিতে পুরো তারাবি পড়েছি, প্রথম ইমামের বিদায় এর সাথে সাথে আমিও বিদায় নিচ্ছি কিন্তু আমি পুরো পুরস্কারই পাবো। না, ব্যাপারটা কিন্তু সেরকম নয়। যখন রাসূল (সা.) বলেছেন ইমামের পিছনে সালাত আদায় করুন, তিনি কিন্তু একজন ব্যক্তিকে বোঝান নি, তিনি চেয়েছেন আমরা যেন ইমামের নেতৃত্বে পুরো নামাজ শেষ করি, আর এর জন্য সারারাত নামাজের সওয়াবের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাসুল (সা.) আমাদের উৎসাহিত করেছেন কোন কাজ শুরু করলে তা শেষ করতে, কারণ আল্লাহ তা ভালবাসেন। তাই ইমামের পিছনে তারাবি পড়লে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আল্লাহ যেন আমাদের সবার কাছ থেকে কবুল করে নেন।
তারাবির নামাজ শেষ করুন
পর্ব: ৯
মূল: শাইখ ওয়ালীদ বাসাইউনি