কমন মিস্টেকস ইন রামাদান – নারীদের প্রতি সদয় হন
আজ আমি যে ব্যাপারটি আলোকপাত করতে চাই তা আমাদের বোনদের বিষয়ে। আমরা প্রায়শই দেখি রমজান মাসে আমাদের বোনদের উপর অনেক বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়, বিশেষত খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে আমরা অনেক আবদার করি তাদের কাছে। রান্নাবান্না এবং ঘরের কাজে তারা এতটাই ব্যস্ত থাকেন যে ইবাদতে যথেষ্ট সময় তারা দিতে পারে না।
একটা ঘটনা আমি কখনোই ভুলবো না। একবার রমজান মাসে এক বোন আমাকে কল দিয়ে বললেন, শেখ (বাসাইউনি) আপনার কি মনে হয় আমি গুনাহগার?
এই রমজানে আমি এক পৃষ্ঠাও কুরআন পড়িনি, এক রাকাত তারাবিও পড়িনি, অথচ আজ ১৫ তম রমজান। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন?
তিনি বললেন শেখ প্রতিদিন আমার বাসায় অনেক মানুষ খেতে আসে। আমার পাঁচটি সন্তান, আমাকে সব কিছুর যত্ন নিতে হয়, কাজ শেষে আমি খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ি। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনার স্বামী কোথায়?
মহিলা একপ্রকার হেসেই বললেন, হ্যাঁ সে আছে তার মত। ব্যাপারটা সত্যিই দুঃখজনক।
আমি আশা করছি এই রমজানে সকল দম্পতি একে অন্যের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন। একজন স্বামীর নিশ্চিত করতে হবে যেনো তার স্ত্রী নামাজ পড়ার এবং কুরআন পড়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় থাকে। প্রয়োজন হলে স্বামী মাঝে মাঝে বাচ্চাদের যত্ন নিবেন, ঘুম পাড়িয়ে দিবেন যাতে তার স্ত্রী রাতের নামাজ উপভোগ করতে পারেন। স্বামীকে মাঝে মাঝে বাসার কাজেও সাহায্য করতে হবে, যেন তার স্ত্রী ইসলামিক কোন ক্লাস বা প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে পারে। এছাড়া মসজিদ গুলোতেও বাচ্চাদের জন্য ব্যবস্থা থাকতে হবে।
আপনি যদি অতিথিকে আমন্ত্রণ করতে চান অবশ্যই সেটা দুর্দান্ত একটা ব্যাপার। অবশ্যই আপনি মানুষকে ইফতারের দাওয়াত দিবেন, কিন্তু সেই সাথে আপনার স্ত্রীর প্রতি সাহায্যের হাতটিও বাড়িয়ে দিন, যেন আপনার স্ত্রী ইবাদত করার জন্য যথেষ্ট সময় পান, তাকেও উপভোগ করতে দিন এই পবিত্র মাসের বারাকাহ।
পক্ষান্তরে আমি এ কথাও বলতে চাই দিনের বেশিরভাগ সময় রান্নাবান্না বা খাওয়ার পিছনে বিনিয়োগ করা উচিত না, এই নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত পেরেশানি নেবেন না। রমজান মাসে নামাজ পড়ার জন্য, কুরআন পড়ার জন্য, জিকির করার জন্য, আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার জন্য সময় ব্যয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খাওয়া দাওয়া এবং ইবাদাতের মধ্যে অনেক সময় অনেক পরিবারকে চরমপন্থা অবলম্বন করতে দেখা যায়, বস্তুত ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হবে। ভুলটা তখনই হয় যখন স্বামী -স্ত্রী একে অন্যকে সহযোগিতা করে না। কাজেই আমাদের নিশ্চিত করতে হবে পরিবারের সবাই যেন ইবাদত, নামাজ, দু’আ জিকির, লেখাপড়ার এবং ভালো কিছু লেকচার শোনার যথেষ্ট সময় পান, কারণ আমরা কেউ এই মাসের বারাকাহ থেকে বঞ্চিত হতে চাই না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা যেন আমাদের সবার কাছে থেকে কবুল করে নেন।
নারীদের প্রতি সদয় হন
পর্ব: ১১
মূল: শাইখ ওয়ালীদ বাসাইউনি