আজ আমি যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চাই তা হল শরীরের দুর্গন্ধ। অনেক সময় মসজিদে মানুষের গায়ের এবং পোশাকের দুর্গন্ধ অনেক তীব্র হয়। অনেকে হয়তো বলতে পারেন – আমিতো স্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছি, সালাদ খাচ্ছি, কিন্তু আপনার সালাদে যে কাঁচা পেঁয়াজ এবং রসুন রয়েছে।
রাসুল (সা.) পেঁয়াজ এবং রসুন প্রসঙ্গে বলেছেন –
‘কেউ এসব দুর্গন্ধযুক্ত উদ্ভিদ খেলে সে যেন মসজিদের নিকট না আসে। কেননা মানুষ যেসব জিনিসে কষ্ট পায়, ফেরেশতারাও সেসব জিনিসে কষ্ট পায়।’
[সহিহ মুসলিম:১১৩৯]
ঠিক একই ভাবে কিছু লোক ধূমপান করার পর মসজিদে আসে। তারা তাদের মুখ এবং নি:শ্বাস থেকে নিকোটিনের গন্ধ ছাড়াতে থাকে। এটা খুবই বিরক্তিকর একটা ব্যাপার, এবং মুসলমানদের জন্য মসজিদে এমনভাবে আসা অনুমোদিত নয়। আবার কিছু লোক এমন ভাবে মসজিদে আসে যেন মনে হয় এইমাত্র তারা পিয়াজু, পাকোড়া ভেজে এসেছে, আর তার আশেপাশের মানুষের মনে হবে যেন তারা মসজিদে নয়, রেস্তোরাঁয় বসে আছে। মাশাআল্লাহ আপনি রান্না করেছেন, খেয়েছেন, খুব ভালো কথা। তবে মসজিদে আসার আগে পোশাক পরিবর্তন করে আসুন, দরকার হলে গোসল করে নিন এবং সুগন্ধিও ব্যবহার করতে পারেন।
এই ব্যাপারে সত্যিই আপনাকে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। প্রথমত এটা আপনার নিজের জন্যই দরকার, কারণ আমাদের শরীর আমাদের মনের উপর প্রভাব ফেলে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে মসজিদে আসলে আপনি ভালো বোধ করবেন, তখন আপনি নামাজে মনোযোগী হবেন এবং নামাজকে আরো বেশি উপভোগ করবেন। আর এটি পরিবেশ এবং পারিপার্শ্বিকতার জন্য অনেক গুরুত্ব বহন করে। ধরুন কেউ মসজিদে প্রবেশ করে যদি দুর্গন্ধ পায়, তখন তার মনের অবস্থাটা কেমন হবে?
সে কি তখন মসজিদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করবে?
যেকোনো ব্যক্তি, এমনকি ফেরেশতারাও সেই গন্ধে বিরক্ত হবে। কাজেই এ ব্যাপারে আপনাকে মনোযোগী হতে হবে।
মেয়েদের গায়ের সুগন্ধি প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেছেন –
❝আল্লাহ্র বান্দীদেরকে মসজিদে আসতে বারণ করো না, তবে তারা যেন খুশবূ ব্যবহার না করে সাধাসিধাভাবে আসে।❞
[আহমাদ। আবূ দাঊদ। সহীহুল জামে ৭৪৫৭]
তবে মহিলারা যদি পুরুষদের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক থাকেন এবং হলওয়ে বা করিডরে মহিলাদের যদি পুরুষদের সাথে সাক্ষাৎ না হয়, সে ক্ষেত্রে মহিলারা ডিওডোরেন্ট বা বডি স্প্রে ব্যবহার করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ যেন আমাদের সবার কাছ থেকে কবুল করে নেন।
নামাজের সময় দুর্গন্ধ
পর্ব: ১০
মূল: শাইখ ওয়ালীদ বাসাইউনি