এই সিরিজে আমরা সেই সমস্ত সাধারণ ভুলগুলো তুলে ধরছি যেগুলো রমজান মাসে মানুষের রোজা, তারাবী, ইতেকাফ, ইবাদত এবং সামাজিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত। আজ আমি এমন কিছু লোকদের কথা উল্লেখ চাই যারা দিনের বেলায় পানাহার বর্জন করে রোজা রাখে, কিন্তু গীবত ও পরচর্চা থেকে বিরত থাকে না। তারা খাদ্য থেকে নিজেদের মুখকে নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু তারা রোজা রেখে মিথ্যা কথা, গীবত, এবং গুজব থেকে নিজেদের জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
এগুলো সবই ভয়ঙ্কর গুনাহের কাজ। রোজা রেখে খাওয়া দাওয়া করা যেমন হারাম, তেমনি মিথ্যা বলা, পরচর্চা করা, গুজব ছড়ানো, বাজে কথা বলা এবং অন্যদের অপমান করাও হারাম।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক মিথ্যা কথা এবং সে অনুসারে কাজ করা আর মূর্খতা পরিহার করলো না, আল্লাহর নিকট তার পানাহার বর্জনের কোন প্রয়োজন নেই।
[সহি বুখারী: ৬০৫৭]
স্পষ্টতই এই হাদিস এই কথা বলছে না যে গীবত, পরচর্চা করে আপনি আরাম করে খান। হাদিসটির মূল বিষয় হলো এই রোজা আপনার তেমন কোনো উপকারে আসবে না, কারণ রোজা রেখে আপনি গীবত এবং পরচর্চার মতো গুরুতর পাপগুলো করছেন। রোজা রেখে এই পাপগুলো করলে রোজাদারের সওয়াব কমে যায়।
রোজা রেখে আপনি শুধু নিজের পাকস্থলীকেই নয়, আপনার জিব্বাকেও নিয়ন্ত্রণ করুন। রোজাবস্থায় শুধুমাত্র হালাল থেকেই নয়, হারাম থেকেও নিজেকে বিরত রাখুন। আপনি যদি কোন রোজদারকে এইসব গুরুতর পাপে লিপ্ত থাকতে দেখেন তবে তাদের বলুন যা রাসূল (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন –
‘রোজা ঢাল স্বরূপ। কাজেই তোমাদের কেউ যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং হৈ হট্টগোল না করে। আর যদি কেউ তাকে গালিগালাজ করে অথবা তার সাথে লড়াই-ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি রোজাদার।’
[বুখারী ১৯০৪, মুসলিম ১১৫১নং]
আল্লাহ যেন আমাদের অন্তরকে, আমাদের জিহব্বাকে এবং আমাদের সিয়ামকে পরিশুদ্ধ করেন, এবং আমাদের সবার কাছ থেকে কবুল করে নেন। আল্লাহুম্মা আমীন!
পরচর্চা এবং মিথ্যা বলা
পর্ব: ৬
মূল: শাইখ ওয়ালীদ বাসাইউনি