স্বামী হিসেবে তিনি ছিলেন অনন্য। তাক্বওয়া, ইখলাস, আখলাক, সম্পদ সব মিলিয়ে তিনি তার স্ত্রীর কাছে ছিলেন শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। ইসলামের সূচনাকালেই নিজে এবং স্ত্রীকে ইসলাম গ্রহণ করান। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সান্নিধ্যে থেকে দিনের আলোতে নিজে যা শিখতেন,রাতে এসে স্ত্রীকে শিখাতেন। এভাবেই সময় যাচ্ছিলো।
উহুদ যুদ্ধের ঘটনা। স্বামী আবু সালামা (রাদিআল্লাহু আনহু) যুদ্ধে অংশ নেন এবং শাহাদাতের মর্যাদা বরণ করেন। চারজন সন্তান নিয়ে একলা হয়ে পরেন বয়স্কা স্ত্রী উম্মে সালামা(রাদিআল্লাহু আনহু)। স্বামীর সাথে পার্থিব বিচ্ছেদের ব্যাথায় কাতর হবার সময় মনে পরে স্বামীর দেয়া শিক্ষার কথা। আবু সালামা (রাদিআল্লাহু আনহু) একদিন রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হতে একটি হাদিস শুনে এসে স্ত্রীকে বলেন,
“যখন কোনো বান্দা বিপদাপন্ন হয়ে বলবে;
إِنَّا لِلّهِ وَإِنَّـا إِلَيْهِ رَاجِعونَ اَللّهُمَّ أَجِرْنِي فِي مُصِيْبَتِي وَ اَخْلِفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا
উচ্চারণ : ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া আখলিফলি খাইরাম মিনহা।’
সেই ব্যক্তির জন্য আল্লাহ পাক আপতিত বিপদের সাওয়াব দান করবেন এবং এই বিপদের উত্তম বদলাও দেবেন। স্বামীর মৃত্যুর পরে উম্মে সালামা উপরোক্ত দোয়া পাঠের কিছুকাল পরেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা উম্মে সালামা (রাদিআল্লাহু আনহা) কে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ প্রতিদান স্বরূপ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী হবার তৌফিক দান করেন।
চিন্তা করে দেখুন উম্মে সালামা যিনি একজন বয়োবৃদ্ধ বিধবা নারী! চার সন্তানের জননী..স্বামীর মৃত্যুর পরে তিনি যা করেছিলেন তা ছিলো, আল্লাহ পাকের সিদ্ধান্তের উপর সন্তুষ্ট থাকা এবং সবটুকু বিশ্বাস নিয়ে রাসূলের শিখিয়ে দেয়া দোয়া পাঠ করে অপেক্ষা করা। আল্লাহ তাকে তার ধৈর্যের পুরষ্কার দুনিয়াতেই দান করেন।
বিপদাপদ নিয়েই জীবন, বরং জীবনের অন্যতম অংশ। তাই আমাদের উচিত বিপদে আপতিত হলে ধৈর্য ধারণ করা এবং উপরোক্ত দোয়ার উপর আমল করা। অন্তত দোয়া পাঠ করার ফলে;
-হারানো জিনিস পেয়ে যেতে পারি
-অথবা এর চেয়ে উত্তম কিছু পেতে পারি
-কিংবা সুনিশ্চিত সাওয়াব পেতে পারি।
তাই একজন মুমিন বান্দা হিসেবে এই দোয়া পাঠের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। ঘরের সন্তানদের এই দোযার তাৎপর্য বোঝানো উচিত।
তথ্যসূত্রঃ মুসলিম শরীফ, মিশকাত