বিজ্ঞান সিরিজ – ০৭ পদার্থের শুরু থেকে
ছবিটি এখন পর্যন্ত তোলা পরমাণুর সবচেয়ে পরিষ্কার ছবি!
একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন পদার্থের একদম শুরু থেকেই সুশৃঙ্খল, সুসামঞ্জস্যপূর্ণ নিপুণ ভাবে সাজানো। এবং সেই ধারাটি একেবারে মহাবিশ্বের অগণিত গ্যালাক্সি পর্যন্ত বিস্তৃত। কোথাও কোনো প্রকার ত্রুটি নেই কোনো বিচ্যুতি নেই।
সবকিছুই এখানে গানিতিক নিয়ম মেনে চলে। একেকটি সূত্র মেনে চলে। কেউ সূত্রের বাইরে যেতে পারে না। সবকিছু পাকাপোক্ত নিয়মের জালে বন্দী!
উদাহরণ সরূপ; নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র তো সবাই জানি আমরা। জগতের যে কোনো দুটি বস্তু একে অপরকে আকর্ষন করছে। এইযে আকর্ষন। সূর্য সাথে পৃথিবীর সহ অন্যান্য গ্রহ উপগ্রহের আকর্ষন! সে অনুযায়ী তাদের আকার, আয়তন এবং সে অনুপাতে তাদের নিখুঁত অবস্থান। যেন পৃথিবীতে নির্দষ্ট পরিমাণ Gravity তৈরি হয় যা প্রাণের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখবে। নির্দিষ্ট পরিমাণ আলো, তাপ, মৌলিক বল সমূহ থাকে যেন উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়। আর সেসব একদম গাণিতিকভাবে নির্ভুল! একটু ভাবুন; এইসব কি এমনি এমনি হয়েছে? কেউ কি হিসাব করে মেলাননি?
এতো গেল শুধু একটা বিষয়। এরকম হাজারো কোটি বিষয় ঘটছে প্রকৃতিতে। বিভিন্ন বিজ্ঞানী সেসব আবিষ্কার করে নাম দিয়েছেন; আপেক্ষিক তত্ত্ব, প্ল্যাঙ্ক কোয়ান্টাম মৌলিক সমীকরণ, হিগস বোসন সমীকরণ,
স্ট্রিং থিওরি, কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফি, ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জি, স্পেস-টাইম সহ হাজারো জটিল বিষয় প্রকৃতিতে বিদ্যমান।
এগুলো পর্যবেক্ষণ করলে আপনার মনে হবেই যে, কেউ একজন অংক কষে, কোথায় কোনটা বসাতে হবে, কোনটার আকার কেমন হবে, সূর্য কতোবড় হবে, এর তাপ কতো কেলভিন হবে, পৃথিবী এবং চাঁদ কতোটা দূরত্বে থাকবে, কোন পদার্থটাতে কতোটা ইলেকট্রন প্রোটন থাকবে, কতোটা প্রোটন দিলে মাটি তৈরি হবে, পানি তৈরি হবে, হাইড্রোজেন-অক্সিজেন তৈরি হবে, অর্থাৎ পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে গেলে কোন কোন পদার্থ তৈরি করতে হবে…!
ইত্যাদি বিলিয়ন মিলিয়ন হিসাব আছে যার একটা ভুল হলে এই মহাবিশ্বে প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব না।
এই মহাবিশ্বকে যে একজন সৃষ্টিকর্তার দ্বাড়াই তৈরি হয়েছে তার প্রমাণ হলো পদার্থের একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাদৃশ্যতা!
পরমাণু থেকে শুরু করে গ্যালাক্সি পর্যন্ত যদি আপনি তাকান তবে আরেকটি বিষয় হয়তো আপনি দেখতে পারবেন যে, নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে যেভাবে ইলেক্ট্রনগুলো ঘুরছে তেমনিভাবে সূর্যের চারদিকেও গ্রহ, গ্রহাণুপুঞ্জ ঘুরছে। গ্যালাক্সিতে থাকা সমস্ত তারারই চারদিকে তাদের নিজ নিজ কক্ষপথে গ্রহ সমূহ ঘুরছে। আবার এই তারাগুলোও একটা নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরছে…।
এই যে একটি মৌলিক নিয়মের উদাহরণ দিলাম। এটি কিন্তু পদার্থের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এর অর্থ হলো এই পুরো মহাবিশ্বকে একজন সৃষ্টিকর্তাই তৈরি করেছেন। যার জন্যই পদার্থের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এতো এতো সাদৃশ্য!
যে স্রষ্টা নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে নানা সংখ্যার ইলেক্ট্রন ঘুরিয়েছেন সেই স্রষ্টাই আকাশের কোটি কোটি তারকার চারদিকে নানা সংখ্যার গ্রহ উপগ্রহ ঘুরিয়ে পদার্থের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক আশ্চর্য রকমের সাদৃশ্য তৈরি করেছেন। সুবহানাল্লাহ।
ছবিটির দিকে লক্ষ্য করুন আর পদার্থের এই নিখুঁত গঠন থেকে মহাবিশ্ব পর্যন্ত সুসামঞ্জস্যপূর্ণতার বিষয়টি চিন্তা করে সেই প্রভুর কৃতজ্ঞতায় একটা বার হলেও আলহামদুলিল্লাহ বলুন তবেই লেখাটি সার্থক!
কসমোলজি অফ মাস্টার প্লানার
বিজ্ঞান সিরিজ – ০১
বিজ্ঞান সিরিজ – ০২
বিজ্ঞান সিরিজ – ০৩
বিজ্ঞান সিরিজ – ০৪
বিজ্ঞান সিরিজ – ০৫
বিজ্ঞান সিরিজ – ০৬