হাদিসে রাতে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়ার ফজিলতের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। আমরা যদি মাগরিবের পর থেকে নিয়ে ঘুমানোর আগে পর্যন্ত রাতের যে কোনও সময় এ আয়াত দুটি পড়ি তাহলে কি সে মর্যাদা পাবো?
রাতে সূরা বাকারার শেষ দু আয়াত তিলাওয়াতের ফজিলতে বর্ণিত হাদিসটি হল, মুত্তাফাকুন আলাইহ তথা একসাথে সহিহ বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিশুদ্ধ হাদিস।
আবু মাসঊদ আল বাদরি রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
(من قرأ بالآيتين من آخر سورة البقرة في ليلةٍ كفتاه” . (متفق عليه
“যে ব্যক্তি রাতের বেলা সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পড়বে তা তার জন্য যথেষ্ট হবে।”
[বুখারী, মুসলিম]
যথেষ্ট হওয়ার অর্থ: কোনও কোনও আলেম বলেন, তা তাকে সব ধরণের অনিষ্ট ও বিপদাপদ থেকে রক্ষার জন্য যথেষ্ট হবে। আর কোনও আলেম বলেন, তা কিয়ামুল্লায়ল তথা রাতের নফল সালাতের জন্য যথেষ্ট হবে। কেউ বলেন, শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষার জন্য যথেষ্ট হবে। কারও মতে, সারা রাত কুরআন তিলাওয়াতের জন্য যথেষ্ট হবে। তবে সবগুলোই উদ্দেশ্য হতে পারে। (ফাতহুল বারি)
আয়াত দুটি হল:
امَنَ الرَّسولُ بِما أُنزِلَ إِلَيهِ مِن رَبِّهِ وَالمُؤمِنونَ ۚ كُلٌّ ءامَنَ بِاللَّـهِ وَمَلـٰئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لا نُفَرِّقُ بَينَ أَحَدٍ مِن رُسُلِهِ ۚ وَقالوا سَمِعنا وَأَطَعنا ۖ غُفرانَكَ رَبَّنا وَإِلَيكَ المَصيرُ ﴿٢٨٥﴾ لا يُكَلِّفُ اللَّـهُ نَفسًا إِلّا وُسعَها ۚ لَها ما كَسَبَت وَعَلَيها مَا اكتَسَبَت ۗ رَبَّنا لا تُؤاخِذنا إِن نَسينا أَو أَخطَأنا ۚ رَبَّنا وَلا تَحمِل عَلَينا إِصرًا كَما حَمَلتَهُ عَلَى الَّذينَ مِن قَبلِنا ۚ رَبَّنا وَلا تُحَمِّلنا ما لا طاقَةَ لَنا بِهِ ۖ وَاعفُ عَنّا وَاغفِر لَنا وَارحَمنا ۚ أَنتَ مَولىٰنا فَانصُرنا عَلَى القَومِ الكـٰفِرينَ
অর্থ:
রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভু! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।
যেহেতু উক্ত হাদিসে রাতে পড়ার কথা বলা হয়েছে সেহেতু মাগরিবের পর থেকে ফজরের পূর্ব পর্যন্ত রাতের যে কোন অংশে তা পড়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
তবে সারা রাত ব্যাপী এর পূর্ণাঙ্গ ফল লাভ করতে চাইলে রাতের প্রথমাংশে পাঠ করার চেষ্টা করা উচিত।