কয়েকজন আলেম জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে সফর করছেন। তাদের সাথে অর্থ ছিলো। একপর্যায়ে অর্থ ফুরিয়ে গেলো। সাথে খাদ্যও নেই, অর্থও নেই। খাবার অভাবে আস্তে আস্তে তারা দূর্বল হয়ে পড়ছেন। তারা আর হাঁটতে পারছেন না।
মজার ব্যাপার হলো, সবার নাম ছিলো ‘মুহাম্মদ‘। কারো নাম মুহাম্মদ ইবনে খুজাইমা, কারো নাম ছিলো মুহাম্মদ ইবনে জারির প্রমুখ।
তারা সিদ্ধান্ত নিলেন, পরবর্তী বাড়িতে গিয়ে নক করবেন, বাড়িওয়ালার কাছে খাবার চাইবেন।
তারা বাড়িতে গেলেন। তখন মুহাম্মদ ইবনে খুজাইমা ওজু করে দুই রাকআত নামাজ পড়া শুরু করলেন, বাকিরা বাড়িওয়ালার দরজায় নক করলেন।
বাড়িওয়ালা বের হলো। আগন্তুকদের দেখে ভেতরে চলে গেলো। কোনো কিছু জিজ্ঞেস করলো না।
ছোটো ছোটো থলে নিয়ে আসলো। তারপর ডাক দিলো- ‘মুহাম্মদ ইবনে জারির কোথায়?‘
মুহাম্মদ ইবনে জারির গেলেন। তার হাতে ৫০ দিনারের থলে দেয়া হলো।
তারপর একেকজন মুহাম্মদকে ডাকা হলো, সবাই গিয়ে তার হাত থেকে দিনারের থলে নিয়ে আসলো।
অবশেষে ডাকা হলো মুহাম্মদ ইবনে খুজাইমাকে। তিনিও নামাজ শেষে দিনারের থলে নিয়ে আসলেন।
জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে বের হওয়া আলেমগণ অবাক। তারা তাদের নাম বলেননি, তাদের অভাবের কথা বলেননি, লোকটি কিভাবে তাদের নাম আর অভাবের কথা জানলো?
অতঃপর সেই বাড়িওয়ালা বললো, আমি এই এলাকার বাসিন্দা। অমুক শাসকের দরবারে কাজ করি। গতোকাল রাতে সেই শাসক একটি স্বপ্ন দেখেন। তাকে কেউ বলছে ‘মুহাম্মদরা খাদ্যের অভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। আগামীকাল তারা দরজায় কড়া নাড়বে, তাদেরকে অর্থ দিও’।
কথামতো রাজ্যের শাসক সেই বাড়িওয়ালার কাছে দিনারের থলে দেন। মুহাম্মদরা যখন দরজায় কড়া নাড়ে, প্রত্যেকের হাতে দিনার তুলে দেন।
আল্লাহর পক্ষ থেকে কিভাবে সাহায্য আসে, এটা দেখে আলেমগণ অবাক হন। তারা হাতেনাতে আল্লাহর সাহায্য প্রত্যক্ষ করেন। তারা জ্ঞানার্জনে বের হন, আল্লাহ তাদের জন্য জ্ঞানার্জনের রাস্তা সহজ করে দেন।
সেইসব মুহাম্মদের মধ্যে একজন হলেন মুসলিম ইতিহাসের বিখ্যাত মুফাসসির, যার তাফসীর রেফারেন্স হিশেবে ব্যবহৃত হয়, তার নাম মুহাম্মদ ইবনে জারির আত-তাবারী।
যার লেখা তাফসীর ‘তাফসীরে তাবারীকে‘ বলা হয় তাফসীর শাস্ত্রের বিশ্বকোষ।