আদম আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সিয়াম
কোন কোন সুফী উল্লেখ করেছেন যে, আদম আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নিষিদ্ধ ফল খেয়েছিলেন এবং তারপর তাওবাহ করেছিলেন তখন ৩০ দিন পর্যন্ত তাঁর তাওবাহ কবুল হয়নি যতক্ষণ তার শরীরে ঐ ফলের কিছু অংশ ছিল। অতঃপর তাঁর দেহ যখন তাথেকে পাক পবিত্র হয়ে যায় তখন তাঁর তাওবাহ কবুল হয়। তারপর তাঁর সন্তানদের উপরে ৩০টি রোযা ফরয করে দেয়া হয়। হাফিয ইবনে হাজার ‘আসক্বালানী (রহ.) বলেন, একথা প্রমাণে সনদ চাই। কিন্তু এর কোন দলীল পাওয়া দুরূহ ব্যাপার।
(ফাতহুল বারী ৪র্থ খণ্ড, ১০২-১০৩ পৃষ্ঠা)
পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম রোযা কে রেখেছিলেন- এ ব্যাপারে সাধক চূড়ামণি শায়খ ‘আবদুল কাদির জিলানী (রহ.) বর্ণনা করেছেন, যির্ ইবনে হুবায়শ رَضِيَ ٱللَّٰهُ عَنْهُ বলেন, একদা আমি রসূলুল্লাহ صَلَّى ٱللَّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ-এর বিশিষ্ট সহাবী ‘আবদুল্লাহ ইবনে মাস্’উদ رَضِيَ ٱللَّٰهُ عَنْهُ-কে আইয়্যামে বীয (চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখকে আইয়্যামে বীয বলে) সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আদম আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে একটি ফল খেতে মানা করেছিলেন। কিন্তু আদম আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই ফল খেয়ে জান্নাত থেকে দুনিয়ায় নেমে আসতে বাধ্য হন।
সে সময় তাঁর দেহের রং কালো হয়ে যায়। ফলে তাঁর এ দুর্দশা দেখে ফেরেশতাগণ কেঁদে কেঁদে আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করলেন; হে আল্লাহ! আদম তোমার প্রিয় সৃষ্টি!! তুমি তাঁকে জান্নাতে স্থান দিয়েছিলে, আমাদের দ্বারা তাকে সিজদাও করালে, আর একটি মাত্র ভুলের জন্য তার গায়ের রং কালো করে দিলে?
তাদের জবাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আদম আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এ ওয়াহী পাঠালেন, তুমি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে সিয়াম রাখ। আদম আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা-ই করলেন। ফলে তাঁর দেহের রং আবার উজ্জ্বল হল। এ জন্যই এ তিনটি দিনকে আইয়্যামে বীয বা উজ্জ্বল দিন বলে।
(গুনইয়াতুত্ ত-লিবীন (বাংলা অনুবাদ), ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩০৭)
‘আবদুল কাদির জিলানী (রহ.) উক্ত বিষয়টির প্রমাণে কোন হাদীস বা তফসীরের উদ্ধৃতি দেননি। সুতরাং বিষয়টি কতটা সত্য তা চিন্তা স্বাপেক্ষ।
ইবনে আব্বাস رَضِيَ ٱللَّٰهُ عَنْهُ বলেন, রসূলুল্লাহ صَلَّى ٱللَّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- ঘরে ও সফরে আইয়্যামে বীযে কখনো সিয়াম না করে থাকতেন না।
(নাসায়ী, মিশকাত ১৮০ পৃষ্ঠা)
সংগ্রহীত
বইয়ের নামঃ সিয়াম ও রমাযান
লেখকঃ শায়খ আইনুল বারী আলিয়াবী
প্রকাশনাঃ সুনান প্রকাশনী